চাকরি হারানোর ভয়ে মা হতে চান না কর্মজীবীরা!

মা হওয়া মানে সুসংবাদ। ঘরে একটি নতুন মুখের আগমন মানে নতুন কিছু আনন্দ যোগ। নিজের ভেতরে একটু একটু করে বেড়ে উঠছে আরেকটি প্রাণ, একজন নারীর জীবনে এটাই সম্ভবত সবচেয়ে সুখের অনুভূতি। কিন্তু এমন অনেক নারীই আছেন যাদের কাছে মা হওয়া মোটেও খুশির খবর নয়। বিশেষ করে বেশিরভাগ কর্মজীবী নারীই মনে করছেন যে গর্ভবতী হওয়ার কারণে তাদের চাকরি আশঙ্কার মুখে।

মা হওয়ার খবর পেলে, বা গর্ভাবস্থাকালে কাজ থেকে বহিষ্কৃত করা হতে পারে এই ভয়েই দিন কাটে অনেক নারীর। যদিও পুরুষদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা। বাবা হওয়ার খবর পুরুষদের কর্মক্ষেত্রে খানিক উৎসবের মুহূর্ত যেন।

গবেষকরা বলছেন, মা হওয়ার খবরে চাকরি হারানোর ভয় বাড়ছে মহিলাদের মধ্যে। মা হতেও চাইছেন না অনেক কর্মজীবী নারী। ফলিত মনোবিজ্ঞানের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি। গবেষণায় প্রমাণিত যে, সন্তানের মা হয়ে যাওয়ার পরে অফিসে গেলে নারীরা মনে করেন যে এখন তাদের আর সেভাবে অফিসে বা কর্মস্থলে স্বাগত জানানো হবে না।

ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, নারীদের উপর করা প্রথম এই গবেষণায় দেখা গেছে যে, তাদের মনে হয় গর্ভাবস্থার সময় তাদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হবে। ব্যবস্থাপনা বিষয়ের সহ অধ্যাপক, পুস্টিয়ান আন্ডারডল বলেন, “আমরা দেখেছি যে নারীরা যখন তাদের গর্ভধারণের কথা প্রকাশ্যে আনে তখন কর্মস্থলের অনেকেই তাদের আর আগের চোখে দেখে না।”

পুস্টিয়ান আরও বলেন, “যখন নারীরা এই বিষয়ে তাদের বস বা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তখন আমরা দেখেছি যে তাদের কাজে ক্ষেত্রে কম উৎসাহিত করা বা পদন্নোতির সম্ভাবনার হার কমে গিয়েছে, অথচ পুরুষদের এই ক্ষেত্রে উৎসাহিত করার হার বৃদ্ধি পেয়েছে।”

পুস্টিয়ান জানিয়েছেন, গর্ভবতী নারীদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়ার ভয় কাজ করে বেশিই। দ্বিতীয়ত পুস্টিয়ান জানিয়েছেন, নারীরা এই কারণেই ভয় পান কারণ, গর্ভাবস্থায় ব্যক্তিগত জীবনে ও কর্মজীবনের ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন আসে যা একা নারীকেই মোকাবিলা করতে হয়। গবেষণায় কিছু নতুন বিষয়ও তুলে ধরা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে গর্ভবতী নারীদের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে কীভাবে কাজ করা উচিত, কীভাবে ব্যবহার করা উচিৎ।

পুস্টিয়ানের মতে, “মা হতে চলা নারীদের কর্মজীবনে উৎসাহ দেওয়া বা প্রোমোশন দেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিচারিতা করা বা নিরুৎসাহিত করা একেবারেই উচিত নয়। পাশাপাশি বস বা কর্তৃপক্ষকে সন্তানের বাবা এবং মা দুজনেরই সামাজিক নানা সাহায্য প্রদানেও নজর রাখতে হবে। শুধু অফিস নয়, চাকুরিরতা গর্ভবতীদের নিজেদের পরিবারকেও সংবেদনশীল হতে হবে যাতে কাজ ও পরিবারের চাপে মানসিক দিক থেকে মা বা বাবা কেউই ভেঙে না পড়েন।”

News Desk

Recent Posts

এই ফলেই কমবে জয়েন্টের ব্যথা, ভালো থাকবে হার্ট-চোখ

গ্রীষ্মকাল আসতেই বাজারে ভরে গেছে তরমুজ। লাল টকটকে সুস্বাদু এক ফল এটি। দেখতেও যেমন আকর্ষণীয়, তেমনিই লোভনীয় এর স্বাদ। জানলে…

2 hours ago

শীতে শিশুর জন্য বিপজ্জনক ৫ খাবার

শীতকালে শিশুর প্রতি নিতে হয়ে বাড়তি যত্ন। ঠান্ডা আবহাওয়া শিশুর কোমল শরীরে প্রভাব ফেলে। এ সময় শিশুরা জ্বর, ঠান্ডা, কাশি,…

4 hours ago

নারীদের শরীরে ডায়াবেটিসের যে ৬ লক্ষণ দেখা দেয়

ডায়াবেটিস একটি মারাত্মক রোগ, যা সারা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। দুর্ভাগ্যবশত ডায়াবেটিসের কোনো প্রতিকার নেই। ডায়াবেটিসের কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ…

20 hours ago

মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

দাঁত বা মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। এর অর্থ হলো, আপনি পাইওরিয়া বা দাঁত-মাড়ি সংক্রমণে ভুগছেন। তবে জেনে…

20 hours ago

নখের ইনফেকশন সারাবেন যেভাবে

নখের বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। তার মধ্যে নখের ইনফেকশন অন্যতম। এক্ষেত্রে নখ অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। নখ কালো হতে পারে…

23 hours ago

দুপুরের ঘুম শরীরের জন্য ভালো নাকি খারাপ?

দুপুরে ভরপেট খাওয়ার পর বিছানায় গা এলিয়ে দেন অনেকেই। যাকে বলা হয় ভাতঘুম। দুপুরের ঘুমের মধ্যে অনেকেই শান্তি খুঁজে পান।…

23 hours ago