আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় কখন ডাক্তার দেখাবেন? জেনেনিন অবশ্যই

প্রতিটি ব্যক্তির অন্ত্রের গতি ভিন্ন। কেউ কেউ সকালে উঠেই পেট খালি করে, কেউ আবার দিনে দুই বা তিনবার ওয়াশরুমে যায়। এমন অনেকে আছেন যারা অনেক সংগ্রাম করে তাদের পেট খালি করেন, যাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ হজম সমস্যা। কারও ক্ষেত্রে এটি একটি নিয়মিত, কারও ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে এই সমস্যা দেখা দেয়। যাই হোক না কেন, কোষ্ঠকাঠিন্য মোটেও ভালো অভিজ্ঞতা নয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য গুরুতর হয় না। এই সমস্যা দেখা দিলে ফাইবার যুক্ত খাবার আরও বেশি করে খাওয়ার পাশাপাশি খাবারের তালিকায় কিছু পরিবর্তন আনলে দ্রুত সমাধান হয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে না। তখন দ্রুত সঠিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?

হজম প্রক্রিয়া বেশ জটিল যার সঙ্গে বিভিন্ন অঙ্গ জড়িত। আমরা যখন খাবার খাই তখন তাকে বিভিন্ন অঙ্গের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। পুষ্টি উপাদানগুলো কোষ দ্বারা শোষিত হয় এবং বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। খাবার যখন বৃহৎ অন্ত্রে পৌঁছায় তখনই জল এবং গ্লুকোজ শোষিত হয় এবং মলকে বের করে দেওয়ার জন্য আলাদা করা হয়। অর্থাৎ মল বৃহদন্ত্রে জমা হয় যা কোলন নামেও পরিচিত।

কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে, মল সিগমায়েড কোলনে তৈরি হতে শুরু করে, যা পাচনতন্ত্রের শেষ প্রান্তে থাকে। এটি প্রবাহকে অবরুদ্ধ করে। মল বের করা আরও কঠিন হয়ে ওঠে যখন শরীর তা থেকে সমস্ত জল শোষণ করে শক্ত এবং শুষ্ক করে তোলে।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার?

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা সাধারণত কিছু তরল খাবার বা ওষুধের ওপর নির্ভর করা হয়। কিন্তু এমন কিছু সময় আছে যখন অবস্থা গুরুতর হওয়ার আগে চিকিৎসার সাহায্য নেওয়া অত্যাবশ্যক হয়ে ওঠে। কোলন বা অন্তর্নিহিত অবস্থার গুরুতর সমস্যার কারণে ঘন ঘন কোষ্ঠকাঠিন্যের ঘটনা ঘটতে পারে।

পেটে ব্যথা

কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে অস্বস্তিকর পেট ব্যথা হলে এবং তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা গুরুতর হলে অন্ত্রের বাধা অন্ত্রের ছিঁড়ে যেতে পারে এবং সংক্রমণ হতে পারে। সব ধরনের জটিলতা এড়াতে অতিরিক্ত পেটে ব্যথা হলে অবিলম্বে চিকিত্সা গ্রহণ করা উচিত।

মলে রক্ত দেখা গেলে

মল যাওয়ার সময় রক্তের দাগও স্বাভাবিক নয়। মোছার সময় যদি আপনি টয়লেট পেপারে রক্ত ​​লক্ষ্য করেন তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। হেমোরয়েড, প্রদাহজনিত অন্ত্রের রোগ, এমনকি কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের মতো একাধিক কারণে এটি ঘটতে পারে।

এক সপ্তাহ ধরে পায়খানা না হলে

যে ব্যক্তি সপ্তাহে তিন বা তার বেশি দিন মলত্যাগ করেননি তাকে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছে বলে মনে করা হয়। এক সপ্তাহের ধরে পায়খানা না হলে সেটি গুরুতর সমস্যা। এটি মলদ্বারে আঘাতের কারণ হতে পারে। তাই চিকিৎসকের সাহায্য নিন। তিনি মল ভাঙতে সাহায্য করতে পারেন, ফলে আপনার জন্য মলত্যাগ করা সহজ হবে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন-

* অজ্ঞান হয়ে গেলে

* শ্বাসকষ্ট হলে

* মাত্রাতিরিক্ত জ্বর হলে

* দ্রুত হৃদস্পন্দন হলে

* বমি হলে।

News Desk

Recent Posts

অতিরিক্ত ঘাম কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরম আবহাওয়ায় ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তবে শীতেও অতিরিক্ত ঘাম কিন্তু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবেও…

35 mins ago

নখ দেখেই বুঝে নিন শরীরে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে কি না

শরীরে কোনো রোগ বাসা বেঁধেছে কি না, তার ইঙ্গিত আগে থেকেই দেয় শরীর। তবে অনেকেই তা টের পান না, আবার…

2 hours ago

কাচের বোতলে কেন পানি খাবেন?

পানির অপর নাম জীবন। দৈনিক পর্যাপ্ত পানি না পান করলে শরীরে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। যা শারীরিক বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।…

2 hours ago

সকালে নাস্তা না করলে যে রোগের ঝুঁকি বাড়ে

সকালের নাস্তা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর উপরই সারাদিন শরীরের শক্তি নির্ভর করে। সকালে পুষ্টিকর খাবারে পেট ভরালে সারাদিন অ্যানার্জি…

3 hours ago

কুমড়া থেকে ছোলা, ওজন কমাতে আরও যা খাবেন

ওজন কমাতে চাইলে পুষ্টিকর খাবারের দিকে নজর রাখতে হবে। এর পাশাপাশি শরীরচর্চাও জরুরি। তবে ওজন কমাতে খাবার ৭০ শতাংশ আর…

3 hours ago

তীব্র গরমেও শরীর বরফ ঠান্ডা রাখবে যে পানীয়

গরমে হাঁসফাঁস করছে সবাই। এমন তাপপ্রবাহের মধ্যে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে অনেকেই নানা ধরনের পানীয়ে চুমুক দিচ্ছে। তবে কোমল পানীয় থেকে…

3 hours ago