বানিয়ে ফেলুন এই অভ্যাস তাহলে সারাজীবন পাবেন লিভারের বিশেষ সুরক্ষা, জানাচ্ছে গবেষণা

আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে লিভার। আর লিভারের মারাত্মক অসুখ হচ্ছে লিভার সিরোসিস। এই রোগে লিভার পুরোপুরি অকেজো হয়ে পড়ে।

প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।কিন্তু খুব সহজেই আমরা এই মারাত্মক রোগের হাত থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পারি। সামান্য সতর্কতায় লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। আসুন জেনে নিন তার উপায়।

১) সঠিক খাবার খাওয়ার অভ্যাস

যে খাবারগুলো সহজে হজম হবে এবং হজমশক্তি বাড়াতে বেশ কার্যকর সে ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান ও ফ্যাট যুক্ত তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। ব্রকলি, সবুজ শাক, বাঁধাকপি এবং ফুলকপি লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে। এ ছাড়া কাঁচা পেঁয়াজ এবং রসুন লিভারের জন্য ক্ষতিকর টক্সিনকে দেহ থেকে দূর করতে সহায়তা করে এবং লিভারের সুস্থতা নিশ্চিত করে।

২) টিনজাত বা বোতলজাত খাবার

সময়ের অভাব দিনে দিনে প্রিজারভেটিভ যুক্ত এবং কৃত্রিম স্বাদ ও গন্ধযুক্ত টিনজাত বা বোতলজাত খাবার আমরা অত্যাধিক পরিমাণে খাচ্ছি। এই সব প্রিজারভেটিভ যুক্ত এবং কৃত্রিম স্বাদ ও গন্ধযুক্ত টিনজাত খাবার আমাদের লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। তাই যতটা সম্ভব এই জাতীয় খাবার কম খান বা সম্ভব হলে বর্জন করুন।

৩) মদ পান ত্যাগ করুন

মদ লিভারকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ করে দেওয়ার জন্য দায়ী। সামান্য পরিমান মদ্যপানেও হতে পারে হেপাটাইটিস এবং লিভার সিরোসিসের মতো মারাত্মক রোগ। সুতরাং মদ্যপানের অভ্যাস ত্যাগ করুন এবং এই মরনব্যাধি থেকে দূরে থাকুন।

৪) নিয়মিত সঠিক পরিমাণে জল পান করুন

জল আমাদের লিভারের জন্য ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে লিভারকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। যারা জল কম পান করেন তাদের লিভারের নানা সমস্যায় পড়তে দেখা যায়। তাই জল বেশি করে খান। দিনে অন্তত ২-৩ লিটার জল পান করুন।

৫) প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষধ নয়

অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বা প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ওষুধ খান। কিন্তু এই অভ্যাস লিভারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ধরনের ওষুধ খাবেন না। বিশেষ করে কোনও ব্যথানাশক (পেইন কিলার) ওষুধ। ব্যথানাশক ওষুধে ব্যবহৃত এনজাইম লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে লিভার ক্ষতিগ্রস্থ করে দেয়। সুতরাং চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া বা প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ওষুধ খাবেন না।

৬) নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম

শারীরিক পরিশ্রম শরীরে মেদ জমার পাশাপাশি লিভারে মেদ জমতে দেয় না। ফলে লিভার আক্রান্তের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে মাত্র ২০ মিনিটের শরীরচর্চা লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং আমাদের ইমিউন সিস্টেম উন্নত করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের মাধ্যমে লিভারের মারাত্মক সমস্যা থেকে দূরে থাকুন।

News Desk

Recent Posts

নারীদের শরীরে ডায়াবেটিসের যে ৬ লক্ষণ দেখা দেয়

ডায়াবেটিস একটি মারাত্মক রোগ, যা সারা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। দুর্ভাগ্যবশত ডায়াবেটিসের কোনো প্রতিকার নেই। ডায়াবেটিসের কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ…

9 hours ago

মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

দাঁত বা মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। এর অর্থ হলো, আপনি পাইওরিয়া বা দাঁত-মাড়ি সংক্রমণে ভুগছেন। তবে জেনে…

10 hours ago

নখের ইনফেকশন সারাবেন যেভাবে

নখের বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। তার মধ্যে নখের ইনফেকশন অন্যতম। এক্ষেত্রে নখ অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। নখ কালো হতে পারে…

13 hours ago

দুপুরের ঘুম শরীরের জন্য ভালো নাকি খারাপ?

দুপুরে ভরপেট খাওয়ার পর বিছানায় গা এলিয়ে দেন অনেকেই। যাকে বলা হয় ভাতঘুম। দুপুরের ঘুমের মধ্যে অনেকেই শান্তি খুঁজে পান।…

13 hours ago

বাবা-মায়ের যে ভুলে সন্তান রাগী ও জেদি হয়ে ওঠে

সন্তান লালন-পালন করা সহজ কাজ নয়। তাদের ভবিষ্যৎ গড়তে কখনো কখনো কঠোর হতে হয় আবার কখনো ভালোবাসা দিয়ে তাদের মন…

13 hours ago

হঠাৎ মাথাব্যথায় হতে পারে স্ট্রোক, জানুন লক্ষণ

স্ট্রোক শুধু বয়স্কদেরই নয়, বরং তরুণদের মধ্যেও হতে পারে যখন তখন। চিকিৎসকদের মতে, স্ট্রোক আক্রান্তকে যত তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে…

15 hours ago