সাবধান! শরীরে এই সমস্যাগুলি দেখা দিলেই ডায়াবেটিসের লক্ষণ

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা সময়ের সাথে সাথে মানুষের অসুস্থতা বাড়িয়ে তোলে। শরীরে ডায়াবেটিসের উপস্থিতি প্রাথমিক পর্যায়ে চিহ্ণিত করা যায়না। ফলে বিনা-চিকিৎসা ও অনিয়মের ফলে শরীরে ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই সঠিক সময়ে শারীরিক লক্ষণগুলো চিহ্নিত করে ডায়াবেটিসের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব। কিছু লক্ষণ থেকে বোঝা সম্ভব ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা। তেমনই কিছু লক্ষণ তুলে ধরা হলো, দেখে নিন-

১. পিপাসা ও প্রস্রাবের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়াঃ পিপাসা বেড়ে যাওয়া ও ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ পাওয়ার সমস্যা দুটি ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ লক্ষণ। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষ সারাদিনের মাঝে ৬-৭ বার প্রস্রাব করেন। তার বেশি হলে সাবধান হয়ে যান।

২. হঠাৎ করে খিদে বেড়ে যাওয়াঃ ডায়াবেটিসের তিনটি প্রধান লক্ষণের মাঝে অন্যতম হলো খিদে অনেক বেড়ে যাওয়া। কারণ গ্রহণকৃত খাদ্য উপাদান থেকে গ্লুকোজ তৈরির মাধ্যমে কোনো শক্তি উৎপাদন করতে পারে না শরীর। যার ফলে দেখা দেয় অতিরিক্ত ক্ষুধাভাব। বারবার খাবার গ্রহণের পরেও ক্ষুধাভাব পুরোপুরি দূর করা সম্ভব হয় না।

৩. শারীরিক অবসাদ বা ক্লান্তি বোধ তৈরি হওয়াঃ ডায়াবেটিস দেখা দেওয়ার সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে আরেকটি হলো সবসময় অবসাদ বোধ হওয়া। ডায়াবেটিসের ফলে সবসময় খিদে লাগার ফলে শারীরিকভাবে দিনভর অবসাদ কাজ করতে থাকে।

৪. হঠাৎ করেই অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে যাওয়াঃ খাদ্যাভ্যাসে কোনো ধরনের পরিবর্তন বা শরীরচর্চা ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে যাওয়াও ডায়াবেটিসের লক্ষণ। তাই যদি দেখেন হঠাৎ করেই ওজন কমতে শুরু করেছে তাহলে সতর্ক হন।

৫. চুলকানিযুক্ত চামড়াঃ ডায়াবেটিসের ফলে শরীরের গ্লুকোজ অন্যান্য তরলের সাথে প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। ফলে শরীরের উপরিভাগের চামড়া শুষ্ক ও চুলকানিযুক্ত হয়ে ওঠে। বারবার চুলকানির ফলে চামড়ার উপরিভাগে সংক্রমণ দেখা দেয় এবং চুলকানির উপদ্রব আরও বেশি বৃদ্ধি পায়।

৬. অস্পষ্ট দৃষ্টিশক্তিঃ চোখে ঘোলা দেখা অথবা অস্পষ্ট দেখার সমস্যা যদি চোখের কোনো অসুখের ফলে না হয়ে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে এটি ডায়াবেটিসের লক্ষণ।

৭. ক্ষতস্থান অনেক সময় নিয়ে ভালো হওয়াঃ শরীরের যেকোনো কাটা-ছেড়া ও ক্ষতস্থান অনেক ধীরে ভালো হওয়ার সমস্যাটি ডায়াবেটিস দেখা দেওয়ার লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়। রক্তে উচ্চমাত্রার গ্লুকোজ কাটাস্থানে শুধু প্রদাহ ও ব্যথাভাব তৈরি করে তাই নয়, একইসাথে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যার ফলে ক্ষতস্থানে রক্ত পৌঁছাতে পারে না। এতে ক্ষতস্থান সারতে অনেক বেশি সময় লাগে।

তাই এই লক্ষণ গুলি যদি দেখেন, তাহলে যত শীঘ্রই সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

News Desk

Recent Posts

একনাগাড়ে হাঁচি হলে থামাবেন যেভাবে

হাঁচি তো কমবেশি সবাই দেন। সর্দি থেকে শুরু করে ধুলাবালি বা অ্যালার্জির কারণেই মূলত হাঁচি বেশি হয়। বিশেষ করে অ্যালার্জিতে…

39 mins ago

প্রতিদিন কলা খেলে শরীরে যা ঘটে

কলা ছোট-বড় সবারই প্রিয় একটি ফল। এটি যেমন সুস্বাদু এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক। একটি কলা আপনার শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি যোগাতে…

2 hours ago

ডাবের পানি যেভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে

গরমে এক গ্লাস ঠান্ডা ঠান্ডা ডাবের পানি মুহূর্তেই শরীরে প্রশান্তি এনে দেয়। ঠিক একইভাবে রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর…

2 hours ago

একমাস চিনি না খেলে শরীরে যে পরিবর্তন ঘটে

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কমবেশি চিনিযুক্ত খাবার সবাই খান। তবে স্বাস্থ্য সচেতনরা অবশ্য মিষ্টি খাবার দেখলেই ভয় পান! কারণ শরীরের জন্য চিনিযুক্ত…

2 hours ago

তাল মিছরি কেন খাবেন?

তাল মিছরি আমাদের পরিচিত একটি খাবার। এটি মূলত বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে পথ্য হিসেবে কাজ করে। সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে রক্তস্বল্পতা- অনেক…

4 hours ago

অতিরিক্ত ঘাম কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরম আবহাওয়ায় ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তবে শীতেও অতিরিক্ত ঘাম কিন্তু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবেও…

21 hours ago