ডিমের কোন রঙের কুসুমে পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা বেশি? জেনেনিন বিস্তারিত

সকালের খাবার থেকে নৈশভোজ, ডিমের অবাধ যাতায়াত আমাদের খাদ্যতালিকায়। বাড়ির খুদে সদস্য থেকে বয়স্ক মানুষ, প্রত্যেকেই কমবেশি ডিম পছন্দ করন। আবার শরীরের প্রয়োজনেও ডিম খুবই কার্যকর। কিন্তু ডিমের কুসুমের রঙের গা়ঢ়ত্ব সব সময় সমান হয় না। আর এখানেই দ্বন্দ্বে পড়েন সাধারণ মানুষ। ঠিক কোন ধরনের ডিম বেশি স্বাস্থ্যকর, হালকা রঙের কুসুমসমৃদ্ধ ডিম না-কি গাঢ় কুসুমের ডিম?

কেবল কুসুম নয়, সাদা না লাল- ঠিক কোন খোলার ডিম বেশি পুষ্টিকর, এ নিয়েও বিতর্ক আছে। তবে বিশ্বের নানা গবেষণায় ইতিমধ্যেই প্রমাণ হয়েছে, সাদা খোলা হোক বা লালচে, দুই ধরনের ডিমেরই পুষ্টিগুণ প্রায় এক। ৫০ গ্রাম ওজনের ডিমে ৭২ ক্যালোরি ও ৪ দশমিক ৭৫ গ্রাম ফ্যাট (দ্রবণীয় মাত্র ১ দশমিক ৫ গ্রাম) থাকে। খোলার রং যা-ই হোক, এই মাপে খুব একটা হেরফের হয় না। রং বদলায় কেবল মুরগির খাদ্যের উপর নির্ভর করে। কিন্তু ডিমের কুসুমের রঙের বেলায়?

পুষ্টিবিদদের মতে, ডিমের কুসুম সুষম আহার। অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা না থাকলে কুসুম খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরাও। কিন্তু কুসুমের রং পৃথক হওয়ায় পুষ্টিগুণের প্রশ্নে সংশয়ে থাকেন সাধারণ মানুষ। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার সম্প্রতি এই বিষয়ে একটি গবেষণা চালায়। গবেষকদের মতে, কুসুমের রঙের এই তারতম্যের অন্যতম কারণ, মুরগির খাবার ও মুরগি কতক্ষণ খোলা জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পায়, তার উপর।

সাধারণত, প্রকৃতি থেকে পুষ্টিকর খাবার খুঁজে খাওয়া মুরগির ডিমে ভিটামিন ই, এ এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। কৃত্রিম উপায়ে রাসায়নিকের মাধ্যমে শরীরে পুষ্টিগুণ প্রবেশ করানো মুরগিদের বেলায় তা হয় না। ফলে প্রাকৃতিক উপায়ে পু্ষ্টিগুণ আহরণ করা মুরগির কুসুম থেকে মেলে বেশি পুষ্টি। অনেক খামারে আবার কুসুমের রং যাতে গাঢ় দেখায়, সেই কারণে ক্যারোটিনয়েড জাতীয় ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় মুরগির শরীরে। কোথাও আবার লাল ক্যাপসিকাম খাইয়েও এই রং আনার চেষ্টা করা হয়।

সে ক্ষেত্রে মুরগির পুষ্টিগুণ কোনওভাবেই বাড়ে না, কেবল কুসুমের রংটারই যা পরিবর্তন হয়। সুতরাং, গবেষকদের মতে, ব্রয়লারের উপর খুব বেশি ভরসা না করে, মাঝে মধ্যে দেশীয় উপায়ে প্রতিপালন করা হয়, এমন জায়গা থেকে ডিম কিনুন। সেখানে বেশির ভাগ সময়ই খাঁচার মধ্যে বন্দি করে রাখা হয় না মুরগিদের। কাজেই ঘুরে ঘুরে খাওয়ার সুফল এদের শরীরে পরিলক্ষিত হয়। যার প্রভাব পড়ে এদের ডিমেও। আবার কোথাও খাঁচার বাইরে রেখে এদের জৈব আহার দেওয়া হয়। সেটাও ব্রয়লারের মুরগিদের তুলনায় ভাল।

সুতরাং গাঢ় কুসুমের পুষ্টিগুণ পেতে কেবল রঙে ভুললেই চলবে না, প্রয়োজন সেই রঙের উৎস যাতে কৃত্রিম রাসায়নিক উপায়ে না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

News Desk

Recent Posts

তাপপ্রবাহে শরীরের কোন অঙ্গে বেশি প্রভাব পড়ে?

তীব্র তাপপবাহের কারণে এখন অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। প্রতিদিনই রাস্তায় বের হলে কারও না কারও সঙ্গে ঘটে চলেছে এমন মর্মান্তিক…

13 hours ago

ধীরে ধীরে ফুসফুস নষ্ট করে দেয় ৩ জিনিস

ফুসফুস শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এক অঙ্গ। কোনো কারণে ফুসফুস সঠিকভাবে না কাজ করলে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। আর শ্বাস নিতে না পারলে…

14 hours ago

সাদা পোশাক ঘেমে হলদেটে হয়ে গেলে কী করবেন?

গরমে স্বস্তি পেতে সাদা রঙের পোশাক পরছেন অনেকেই। কারণ সাদাসহ হালকা রঙের পোশাক পরলে শরীর ঠান্ডা থাকে। তবে সাদা পোশাকে…

14 hours ago

গরমে দই খেলে কি সত্যিই শরীর ঠান্ডা থাকে?

গরমে পেট ঠান্ডা রাখতে অনেকেই দই বা লাচ্ছি খান। পেট ঠান্ডা রাখতে ও খাবার হজম করতে দই খুবই উপকারী, এ…

14 hours ago

এ সময় ডায়রিয়া হলে যা করবেন

শীতের শেষে গরম পড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়ার ওঠা-নামায় এ সময় বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধছে। ঠান্ডা-জ্বর-কাশিসহ ডায়রিয়ার প্রকোপও বেড়ে যায়…

15 hours ago

গরমে একাধিক ডিম খেলে শরীরে যা ঘটে

ডিম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এতে থাকে প্রোটিন, ফলে প্রতিদিন একাধিক ডিম খেলে ছোট-বড় রোগের ফাঁদে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে। এমনিতে…

17 hours ago