রোজ রাতে সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমালেই সারবে নানা রোগ! জানাচ্ছে গবেষণা

রাতে প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর অভ্যাস অনেকের মধ্যে থাকলেও, কেউ কেউ আবার বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে জানেন কি, রাতে সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমালে ভালো ঘুম হয়।

একই সঙ্গে সারে নানা ধরনের রোগ। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। লন্ডনের নর্থামব্রিয়া ইউনিভার্সিটি কর্তৃক পরিচালিত হয় গবেষণাটি।

গবেষণায় উঠে এসেছে, রাতে একা ঘুমালে মাথায় নানা রকম চিন্তা আসে। এ ছাড়াও মোবাইল ব্যবহারেই অনেকটা সময় চলে যায়। ফলে ঘুম আসতে দেরি হয়। আবার ঘুমালেও নানা কারণে ঘুম গভীর হয় না।

অন্যদিকে সঙ্গী পাশে থাকলে অনেকটাই নিশ্চিন্ত অনুভব করেন সবাই। সঙ্গীর বুকে মাথা রেখে কয়েকটি কথা বললেও মানসিক ক্লান্তি অনেকটাই দূর হয়ে যায়।

গবেষকরা দেখেন, রাতে সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমালে ৫ ধরনের হরমোন নির্গত হয়। যেমন- অক্সিটোসিন (এটি হলো প্রেমের হরমোন যা আপনাকে খুশি রাখে), সেরোটোনিন (এই হরমোন সুস্থতা ও সুখে অবদান রাখে)।

নরপাইনফ্রাইন (এটি ঘুম নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক চাপের ভারসাম্য বজায় রাখে), ভ্যাসোপ্রেসিন (ঘুমের গুণমান বাড়ায় ও কর্টিসল কমায়) ও প্রোল্যাক্টিন (এই হরমোন ইমিউন সিস্টেম উন্নত করে ও ঘুম গভীর করে)

এই গবেষণার প্রধান বায়োহ্যাকার হেলথ অপ্টিমাইজিংয়ের মনোবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ, উদ্যোক্তা ও বিশ্ব বক্তা টিম গ্রে বলেন, ‘এসব হরমোন মানসিক অবসাদ দূর করে। ফলে মন ও মেজাজ এমনিতেই ভালো থাকে। তাই স্বাভাবিক কারণেই ঘুম ভালো হয় ও বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিও কমে।’

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, সঙ্গীকে পাশে নিয়ে ঘুমালে কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার ঝুঁকিও কমে। এ ছাড়াও অক্সিটোসিন হরমোন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।

সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় মাথা যন্ত্রণা, ক্লান্তি ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে প্রিয় মানুষটিকে বেশি ভালোবাসুন। গবেষণা বলছে, মাথা যন্ত্রণার প্রকোপ কমাতে চুম্বন বেশ কার্যকরী।

গ্রে উল্লেখ করেছেন, ‘সঙ্গী পাশে নিয়ে ঘুমালে হতাশা ও উদ্বেগ কমে। যা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এই অভ্যাস আপনাকে দীর্ঘজীবী করতেও সাহায্য করতে পারে!’

উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ৫৯ নারীর উপর এই গভেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের অক্সিটোসিনের মাত্রা ও রক্তচাপ নিয়মিত পরীক্ষা করেন।

তারা সঙ্গীকে কতবার জড়িয়ে ধরছেন কিংবা তাদের সঙ্গে রাতে কয়দিন ঘুমাচ্ছেন সব বিষয়ের তথ্য বিবেচনা করেন বিশেষজ্ঞরা।

এর ফলাফল কি ছিল? বিশেষজ্ঞরা দেখেন, যাদের অক্সিটোসিনের মাত্রা সবচেয়ে বেশি তাদের রক্তচাপ সবচেয়ে কম ছিল।

এ ছাড়াও প্রিয়জনের সংস্পর্শে অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিগুলোতে কর্টিসল উৎপাদন বন্ধ করার জন্য সংকেত পাঠায়। এর ফলে মানসিক চাপ কমে ও ভালো ঘুম হয়।rs

News Desk

Recent Posts

কাচের বোতলে কেন পানি খাবেন?

পানির অপর নাম জীবন। দৈনিক পর্যাপ্ত পানি না পান করলে শরীরে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। যা শারীরিক বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।…

6 mins ago

সকালে নাস্তা না করলে যে রোগের ঝুঁকি বাড়ে

সকালের নাস্তা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর উপরই সারাদিন শরীরের শক্তি নির্ভর করে। সকালে পুষ্টিকর খাবারে পেট ভরালে সারাদিন অ্যানার্জি…

9 mins ago

কুমড়া থেকে ছোলা, ওজন কমাতে আরও যা খাবেন

ওজন কমাতে চাইলে পুষ্টিকর খাবারের দিকে নজর রাখতে হবে। এর পাশাপাশি শরীরচর্চাও জরুরি। তবে ওজন কমাতে খাবার ৭০ শতাংশ আর…

22 mins ago

তীব্র গরমেও শরীর বরফ ঠান্ডা রাখবে যে পানীয়

গরমে হাঁসফাঁস করছে সবাই। এমন তাপপ্রবাহের মধ্যে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে অনেকেই নানা ধরনের পানীয়ে চুমুক দিচ্ছে। তবে কোমল পানীয় থেকে…

1 hour ago

যে সময় শসা খেলে শরীরের ক্ষতি হয়

শসা শরীরের জন্য একটি ভীষণ উপকারী খাবার। তবে এটি খাওয়ার সঠিক সময় রয়েছে। নিয়ম মেনে শসা না খেলে উপকারের চেয়ে…

2 hours ago

প্রস্রাবের যে সমস্যা মূত্রথলির রোগের লক্ষণ

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে সমস্যাটি অনেকের মধ্যেই দেখা যায়, তা হলো মূত্রের সমস্যা। মূত্রথলির সমস্যার কারণে প্রস্রাবের ধরনে কিছু বদল…

3 hours ago