করোনা রোগীর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে যা যা করণীয়, জেনেনিন

করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে! এ সময় গুরুতর রোগী ছাড়া সবাই ঘরে আইসোলেশনে থেকেই চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। করোনার প্রভাব হিসেবে শ্বাসকষ্ট প্রায় সব আক্রান্তদের মধ্যেই কমবেশি হয়েছে বলে জানা গেছে বেশিরভাগ সমীক্ষায়।

তাই করোনা রোগী আইসোলেশনে থাকাকালীন যদি হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন; তখন কী করণীয় তা জানা নেই অনেকেরই। ওই মুহূর্তে অক্সিজেন দিতে না পারলে, হয়তো রোগী মারাও যেতে পারেন। তাই আগে থেকে জানা জরুরি যে, হঠাৎ করোনা রোগীর শ্বাসকষ্ট হলে কী করণীয়?

এ বিষয়ে ভারতের অ্যাপলো হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক হোম হেলথকেয়ার ইউনিট অ্যাস কনসালটেন্ট ফিজিকেল থেরাপিস্ট অনিরুদ্ধ কর বেশ কিছু পরামর্শ জানিয়েছেন। জেনে নিন সেগুলো-

করোনাভাইরাসের প্রভাবে আক্রান্তদের ফুসফুসের কার্যকারিতা কমতে শুরু করে। এর ফলে অক্সিজেন নেওয়ার গতিও কমতে থাকে। রক্তে অক্সিজেন ঠিক কতটা আছে, সেই পরিমাপকেই চিকিৎসার পরিভাষায় ‘অক্সিজেন স্যাচুরেশন’ বা অক্সিজেনের মাত্রা বলা হয়।

শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা যখনই কমতে শুরু করে; তখনই শ্বাসকষ্ট হয় রোগীর। এক্ষেত্রে প্রথমে ব্রিদিং এক্সারসাইজ করতে হবে। এরপরেও যদি দেখা যায়, অক্সিজেনের মাত্রা ৯০-এর নীচে নামছে; তাহলে দ্রুত অক্সিজেন দিতে হবে রোগীকে।

এজন্য আগে থেকেই ঘরে একটি সিলিন্ডার রাখা উচিত। বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন পাওয়া যায় না। তাই রোগীর শ্বাসকষ্ট হলে ঘরেই অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

পাশাপাশি সবাইকেই এখন শরীরচর্চার প্রতি সচেতন হতে হবে। কারণ শরীরচর্চার মাধ্যমে ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ে। ইয়োগা, মেডিটেশন করলে শরীরে অনেকটাই অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ হয়। যাদের সুগার বা প্রেশার আছে; তাদের অগ্রিম সতর্কতা নেওয়া দরকার।

চিকিৎসকের মতে, ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে করোনার প্রভাব মারাত্মকভাবে পড়ে ফুসফুসে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ফুসফুসের দুরাবস্থার জন্য দায়ী ধূমপান। ফুসফুসের মধ্যে অ্যালভিওলি থাকে, অ্যালভিওলির মধ্যে থেকে যদি ধূমপান করি তাহলে করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে যেতে পারে।

যদি করোনা রোগীর ফুসফুসে আগে থেকেই কোনো সমস্যা থাকে যেমন-সিওপিডি বা ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা; তাহলে করোনা রোগীর বাড়িতে একটা বাইপ্যাপ মেশিন রাখা দরকার। বাই প্যাপের মাধ্যমে কৃত্রিম অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলা যায়। মূলত কৃত্রিম অক্সিজেন দেওয়া হয় সি-প্যাপ বা বাই প্যাপের মাধ্যমে। বাড়িতে অবশ্য এটি সম্ভব নয়, এক্ষেত্রে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।

করোনা সংক্রমণ রুখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বাইরে যতটা সম্ভব কম যাওয়া, মাস্ক ব্যবহার করা সবার জন্য বাধ্যতামূলক। প্রতিদিনকার মাস্ক বদলাতে হবে কিংবা ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে।

News Desk

Recent Posts

নেবুলাইজার কেন ব্যবহার করা হয়?

হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও অন্যান্য শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। রোগী যখন ইনহেলারের…

15 hours ago

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

22 hours ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

22 hours ago

গরমে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

হঠাৎ করেই কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎই বিকল হতে পারে কিডনি। মূলত তাপমাত্রা ও…

23 hours ago

খাবার কেনার আগে প্যাকেটের কোন লেখা অবশ্যই পড়বেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই এখন রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। এ কারণে বেশিরভাগ খাবারই এখন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। প্রায়…

2 days ago

বিশ্বব্যাপী যে কারণে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব

গরমে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। একই সঙ্গে বাড়ে মৃতের সংখ্যাও। আজ ১৬ মে জাতীয় ডেঙ্গু দিবস। ডেঙ্গু…

2 days ago