সাবধান! ‘হেপাটাইটিস এ’ হলে আপনার শরীরে দেখা দেয় যেসব লক্ষণ, জেনেনিন

মারাত্মক এক ব্যাধি হলো হেপাটাইটিস এ। নিরব ঘাতক রোগটি। হেপাটাইটিস হলো অত্যন্ত ছোঁয়াচে লিভার সংক্রমণ। এ রোগের জন্য দায়ী হেপাটাইটিস এ ভাইরাস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে প্রতিবছর মোট ১০ কোটিরও বেশি মানুষ হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হন। এই লিভার সংক্রমণ শিশুদেরও হতে পারে। তবে বড়দের শরীরে এ রোগ জটিল আকার ধারণ করতে পারে। যাদের মধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে জন্ডিস হতে পারে।

কীভাবে ছড়ায় হেপাটাইটিস এ?

হেপাটাইটিস এ ছড়ানোর মাধ্যম হলো জল ও খাবার। এই রোগ প্রাথমিকভাবে একজনের মুখ থেকে অন্যজনের শরীরে প্রবেশ করতে পারে এই রোগটি। এছাড়াও দূষিত জল, দুধ, স্টোর করা ও অপরিচ্ছন্ন খাবার খেলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আবার হেপাটাইটিস এ ভাইরাস আছে, এমন কোনো জিনিস ব্যবহারেও হেপাটাইটি এ সংক্রমণ হতে পারে। যেমন- সংক্রমিত শিশুর ডায়াপার বদলানোর পরে ভালোভাবে হাত না ধুলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

এছাড়াও যদি আপনি কোনো সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাবার বা পানীয় ভাগ করে খান তাহলেও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এমনকি দরজার হাতল বা পৃষ্ঠে যদি এই জীবাণু থাকে তাহলেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

হেপাটাইটিস এ’র লক্ষণসমূহ

এ রোগে আক্রান্ত হলে সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরে তাৎক্ষণিক কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। সংক্রমিত হওয়ার অন্তত ২-৬ সপ্তাহ পর শরীরে দেখা দিতে পারে কয়েকটি লক্ষণ-

> জ্বর
> বমি ও বমি ভাব
> ধূসর-রঙের মল
> ক্লান্তি
> পেটে যন্ত্রণা
> জয়েন্টে ব্যথা
> খিদে না লাগা
> জন্ডিস

সবার শরীরেই যে একই রকম লক্ষণগুলো দেখা দেবে তা কিন্তু নয়। প্রতিটি লক্ষণ না দেখা দিলেও আপনি হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হতে পরেন। এ ধরনের উপসর্গ ৬ মাস ধরেও থাকতে পারে।

হেপাটাইটিস এ প্রতিরোধে করণীয়

>> পরিষ্কার জল পান করতে হবে। পাশাপাশি খাবার ভালোভাবে রান্না করুন। সব ধরনের কাঁচা মাংস ও শেলফিস খাওয়া বাদ দিন। ফল ও সবজি পরিষ্কার করে তারপর মুখে নিন।

>> সব কাজ শেষে হাত ধুয়ে নিন। কিছু খাওয়ার আগে আবার সব সময় ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন।

>> এ রোগ থেকে বাঁচতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার বিকল্প নেই।

>> সন্তানকে অবশ্যই হেপাটাইটিস এ’র টিকা দিন। এতে সংক্রমণের হাত থেকে সে সুরক্ষা পাবে।

>> এক বছর থেকে শুরু করে যে কোনো বয়সীরাই হেপাটাইটিস এ প্রতিরোধক টিকা নিতে পারেন।

>> এখনও হেপাটাইটিস সংক্রমণের জন্য কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমেই এ রোগ থেকে বাঁচতে পারেন।

News Desk

Recent Posts

অতিরিক্ত ঘাম কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরম আবহাওয়ায় ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তবে শীতেও অতিরিক্ত ঘাম কিন্তু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবেও…

2 hours ago

নখ দেখেই বুঝে নিন শরীরে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে কি না

শরীরে কোনো রোগ বাসা বেঁধেছে কি না, তার ইঙ্গিত আগে থেকেই দেয় শরীর। তবে অনেকেই তা টের পান না, আবার…

4 hours ago

কাচের বোতলে কেন পানি খাবেন?

পানির অপর নাম জীবন। দৈনিক পর্যাপ্ত পানি না পান করলে শরীরে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। যা শারীরিক বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।…

4 hours ago

সকালে নাস্তা না করলে যে রোগের ঝুঁকি বাড়ে

সকালের নাস্তা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর উপরই সারাদিন শরীরের শক্তি নির্ভর করে। সকালে পুষ্টিকর খাবারে পেট ভরালে সারাদিন অ্যানার্জি…

4 hours ago

কুমড়া থেকে ছোলা, ওজন কমাতে আরও যা খাবেন

ওজন কমাতে চাইলে পুষ্টিকর খাবারের দিকে নজর রাখতে হবে। এর পাশাপাশি শরীরচর্চাও জরুরি। তবে ওজন কমাতে খাবার ৭০ শতাংশ আর…

4 hours ago

তীব্র গরমেও শরীর বরফ ঠান্ডা রাখবে যে পানীয়

গরমে হাঁসফাঁস করছে সবাই। এমন তাপপ্রবাহের মধ্যে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে অনেকেই নানা ধরনের পানীয়ে চুমুক দিচ্ছে। তবে কোমল পানীয় থেকে…

5 hours ago