জানেন কি? পুরুষদের এখানে লুকিয়ে রয়েছে ভয়ানক রোগ…

Written by News Desk

Published on:

পুরুষ স্তনের সাধারণ বৃদ্ধিকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে Gynaecomastia. এটি গ্রিক শব্দ। বাংলা করলে দাঁড়ায় নারীসম স্তন। গ্যায়নোকো শব্দের অর্থ নারী এবং ম্যাসটোস শব্দের অর্থ স্তন। বয়ঃসন্ধিকালে পূর্ণ যৌবনের পুরুষের স্বাভাবিক স্তন যখন অস্বাভাবিকভাবে নারী স্তনের মতো স্ফীতিলাভ করার নামই গ্যায়নোকোম্যাসটোসিয়া।

কোন কোন পুরুষের স্তনবৃন্তের ঠিক নীচে শক্ত টিস্যু তৈরি হয়। বেশ লম্বা হয় সেই টিস্যু। দুটি বৃন্তের নীচেই গজিয়ে ওঠে। ফলে শক্ত ও টাইট হওয়ার পরিবর্তে নরম হয়ে ওঠে বুক। সামনের দিকে ঝুলে আসে। দেখে মনে হয় নারীর মতোই দুটি স্তন।

ওয়েস্ট্রোজেন ও টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য হারালে পুরুষের স্তনবৃন্তের নীচে টিশু তৈরি হতে পারে। নিষিদ্ধ ড্রাগ, ডাক্তারের প্রেসক্রাইব না করা ওষুধ খেলেও হতে পারে এই ধরণের রোগ। নারীর শরীরে ওয়েস্ট্রোজেন হরমোন বাড়লে স্তনের বৃদ্ধি ঘটে। পুরুষ শরীরে স্তন বাড়তে পারে অ্যান্ড্রোজেন হরমোন বেশি নিঃসরিত হলে।

ভ্রুণের বয়স যখন ছয় সপ্তাহ, তখন অ্যাক্টোডার্মাল স্তর বিশেষ আকার ধারণ করে। ফলে অভ্যন্তরীণ স্তন বা দুগ্ধস্রাবী পথগুলোর জন্ম হয়।

শুক্রকীট ও পরিপক্ব স্ত্রী-ডিম্বের মিলনে ভবিষ্যৎ সন্তান বালক না বালিকা হবে, যখন কোষের অভ্যন্তরস্থ জিন তা নির্ধারণ করে দেয়, তখন থেকেই স্তনের ক্রমবিবর্তন চলতে থাকে। ভ্রুণের বুকে স্তনের আকার প্রথমে থাকে চ্যাপটা, পরে গোলাকার। আরও পরে শিকড় জাতীয় আকার ধারণ করলে প্রাথমিক দুগ্ধ নিঃসরণ তৈরি হয়। আরও পরে এগুলো যেমন বিভক্ত হতে থাকে, অন্যদিকে বুকের বহির্ভাগে স্তনবৃন্তের পার্শ্ববর্তী স্থান অ্যারোলা বা স্তনবলয় জন্মলাভ করে। জন্মকালে বৃন্ত দুটি দেখা দেয়। সমষ্টিগতভাবে দুগ্ধনিঃসারী ক্ষুদ্রাকৃতি যে স্তন্যগ্রন্থি গড়ে ওঠে, তাতে বালক বা বালিকার জন্মের পর স্বল্পস্ফীত স্তনে দুধ দেখা দেয়।

ইংরেজিতে নবজাত শিশুর বুকের দুধকে বলে উইচ মিল্ক বা ডাইনি দুধ। বাংলায় গুটিভানা। ডাইনি দুধ কথার পেছনের সংস্কার হলো, মনে করা হয় ডাইনি বা ওই ধরনের কোনো অপদেবতা শিশুর দেহে আশ্রয় নেয়। তাই ওই দুধ বের করে দিয়ে শিশুকে ডাইনিমুক্ত করা হয়।

এ সম্পর্কে চিকিৎসকরা বলেন শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই মায়ের দেহে কতগুলো হরমোনের (যেমন- ইস্ট্রোজেন, প্রোল্যাকটিন) মাত্রা খুব বেড়ে ওঠে। তারই কিছু অংশ নাভিরজ্জুর মাধ্যমে চালান হয়ে যায় শিশুর দেহে। শিশুর দেহে থাকা বেশি মাত্রায় ইস্ট্রোজেন এ সংমিশ্রণে শিশুর স্তনে স্ফীতি দেখা দেয়। সেখানে প্রোল্যাকটিন হরমোনের মাত্রা থাকে বেশি। সেখানে দুধের মতো রসরণও হতে দেখা যায়। অবশ্য এ দুগ্ধসঞ্চার ও স্ফীতি সাময়িকভাবে দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে তা আপনাআপনি কমে গিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তাই অহেতুক টেপাটিপি করে বপ্রদাহ বা ফোড়াজাতীয় ঘা সৃষ্টি না করাই ভালো।

Related News