এই গরমে রোজ শরীরে পাউডার মাখেন, কি হতে পারেন জানেন?

Written by News Desk

Published on:

তাপ প্রবাহের সময় শরীরকে জ্বালা এবং চুলকানির হাত থেকে বাঁচাতে পাউডার ব্যবহার করেন না এমন কোনও মানুষকে খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে আমাদের শরীরের জন্য ট্য়ালকম পাউডার একেবারেই ভাল নয়। একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে পাউডার ব্যবহার করলে ওভারিয়ান ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। আপাত দৃষ্টিতে ক্ষতিকারক মনে না হলেও বেশিরভাগ পাউডারেই এমন কিছু উপাদান থাকে, যা আমাদের শরীরের সুস্থ থাকার পক্ষে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে সব মহিলারা শরীরের গোপন অঙ্গে ট্যালকম পাউডার লাগান, তাদের ওভারিয়ান ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে বৃদ্ধি পায়। এখানেই শেষ নয়, অনেকেই কাটা জায়গায় পাউডার লাগিয়ে থাকেন। এমন অভ্যাসও কিন্তু ভাল নয়। কারণ পাউডারে অনেক সময়ই প্রচুর পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা কাটা জায়গা দিয়ে শরীরের অন্দরে প্রবেশ করে নানাবিধ জটিল সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি করে। তাই ভুলেও আর কোনও দিন পাউডার বা বেবি পাউডার কাটা জায়গায় লাগাবেন না।

প্রসঙ্গত, আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে বেশি মাত্রায় পাউডার ব্যবহার করলে ক্রনিক শ্বাস কষ্টে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আসলে পাউডারে উপস্থিত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা ফুসফুসে পৌঁছে গিয়ে সেখানে প্রদাহ সৃষ্ট করে। ফলে দীর্ঘ সময় এমনটা হতে থাকলে ফুসফুসের কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়। তাই সুস্থভাবে বাঁচতে আজ থেকে আর কোনও পাউডার ব্যবহার করবেন না। কিন্তু এত বছরের অভ্যাস একদিনে ছাড়ি কীভাবে? কোনও চিন্তা নেই। প্রকৃতিক উপাদানকে কাজে লাগিয়ে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারবেন পাউডার, যা কিনা শরীরের কোনও ক্ষতি না করেই একেবারে ট্যালকম পাউডারের মতোই কাজ করবে। তাহলে আর অপেক্ষা কেন, চোখ রাখুন বাকি প্রবন্ধে আর জেনে নিন “হোম মেড” পাউডারগুলি সম্পর্কে।

ওটসের ময়দা দিয়ে বানান পাউডার: চিকেন পক্স এবং ব্রণর প্রকোপ কমাতে দারুন কাজে আসে ওটসের ময়দা। শুধু তাই নয়, গরমের সময় হওয়া চুলকানি কমাতেও এটি দারুন উপকারে লাগে। তাই তো এবার থেকে ট্যালকম পাউডারের জায়গায় অল্প করে ওটসের ময়দা গায়ে লাগানো শুরু করুন। দেখবেন দারুন ফল পাবেন। নিশ্চয় ভাবছেন ময়দা আবার গায়ে লাগানো যায় নাকি! অলাবাত যায়। যখন আধুনিক ট্যালকম পাউডারের জন্ম হয়নি, তখন কিন্তু মানুষ এইসব প্রাকিৃতিক উপাদানই ব্যবহার করত।

কর্ন স্টার্চ পাউডার: এটি প্রাকৃতিক এবং অবশ্যই ১০০ শতাংশ নিরাপদ। তাই তো পাউডারের বিকল্প হিসেবে কর্ন স্টার্চ পাউডার ব্যবহারের পক্ষে এত সাওয়াল করেন বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, ঘামের গন্ধ দূর করার পাশাপাশি কর্ন স্টার্চের সব থেকে বড় উপকারিতা হল, এটি শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে পৌঁছে গেলেও কোনও ক্ষতি সাধন করে না, যা ট্যালকম পাউডার করে থাকে। এ প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভাল যে বাজার চলতি প্রায় সব পাউডারই শরীরে অন্দরে প্রবেশ করার পর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে একেবারে দুর্বল করে দেয়। ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে বৃদ্ধি পায়।

ছোলার পাউডার: এমন ধরনের পাউডার শরীরে লাগালে ত্বকের আদ্রতা ফিরে আসে। সেই সঙ্গে স্কিন উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। আর যদি অলিভ অয়েলের সঙ্গে ছোলা গুঁড়ো মিশিয়ে মাখেন, তাহেল বেশি উপকার পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত, শুষ্ক ত্বক এবং চুলকানি কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

কর্ন ফ্লাওয়ার: ঘাম টেনে নেওয়ার পাশাপাশি চুলকানি এবং জ্বালা কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি দারুন কাজে আসে। তাই আর ট্যালকম পাউডার নয়, ব্য়বহার শুরু করুন এই প্রাকৃতিক উপাদানটি। দেখবেন অনেক উপকার পাবেন।

চালের আটা: অল্প পরিমাণ দইয়ের সঙ্গে চালের আটা মিশিয়ে গায়ে লাগাতে পারেন। এমনটা করলে ত্বকের দাগ এবং পিগমেন্টটেশন একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে কুঁচকে যাওয়া ত্বকও সুন্দর হয়ে ওঠে। প্রসঙ্গত, দইয়ের সঙ্গে যদি ব্যবহার করতে ইচ্ছা না করে তাহলে শুধুমাত্র রাইস ফ্লাওয়ারও গায়ে মাখতে পারেন। গরমের সময় এটি ব্যবহার করলে চুলকানি, প্রদাহ এবং ঘাম হওয়া একেবারে কমে যায়। অ্যারারুট পাউডার: গায়ে দেওয়া মাত্র এটি শরীরের দ্বারা শোষিত হয়ে যায়। ফলে অস্বস্তি হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না। প্রসঙ্গত, ত্বককে নরম এবং সুন্দর করে তুলতে অ্যারারুট পাউডার দারুন কাজে আসে।

Related News