বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাত-পা বাড়লেও মস্তিষ্কের সাইজ বাড়ে না, কিন্তু মস্তিষ্কের সাইজ বাড়লে তার ফল কি জানেন?

Written by News Desk

Published on:

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাত-পা বাড়লেও মস্তিষ্কের সাইজ কিন্তু বাড়ে না। তবে যদি বাড়াতে পারেন তাহলে কিন্তু কোনও কথাই নেই! বাস্তবে মস্তিষ্কের অবয়ব এমনভাবে বাড়ে না ঠিকই। কিন্তু ব্রেনের অন্দরে থাকা গ্রে ম্যাটারের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ এতটা কর্মক্ষম হয়ে ওঠে যে বুদ্ধি, স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগ ক্ষমতা চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কগনিটিভ পাওয়ার কমে যাওয়া বা কোনও ধরেনর মস্তিষ্কঘটিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
এখন প্রশ্ন হল কিভাবে বাড়ানো সম্ভব মস্তিষ্কের ক্ষমতা?
এমনটা যদি বাস্তবিকই করতে চান তাহলে প্রতিদিন নিয়ম করে আধ ঘন্টা পছন্দের কোনও শরীরচর্চা করা শুরু করুন। প্রসঙ্গত, এক্সারসাইজ করার সময় আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে ডিরাইভ নিউরোপ্যাথিক ফ্যাকটারি নামে এক ধরনের কেমিকেলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই কেমিকালটি মস্তিষ্কের বয়স বাড়তে দেয় না। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই সারা জীবন যদি মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখতে চান, তাহলে এক্সারসাইজ মাস্ট! আর তাছাড়া নিয়িমত শরীরচর্চা করলে আরও অনেক উপকার পাওয়া যায়। যেমন…
ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে: মহামারির আকার নেওয়া ওবেসিটির সমস্যা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে এক্সারসাইজের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ নিয়মিত ঘাম ঝরালে কোনও ভাবেই শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমতে পারে না। ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে কমে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টে রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও।
মন-মেজাজ চাঙ্গা হয়ে ওঠে: কদিন ধরে মন-মেজাজটি কি একেবারে ভাল যাচ্ছে না? তাহলে কিছুটা সময় জিমে কাটিয়ে আসুন না। দেখবেন মন একেবারে চাঙ্গা হয়ে উঠবে। আসলে শরীরচর্চা করার সময় মস্তিষ্কের অন্দরে সেরাটোনিন এবং নরএপিনেফ্রিন নামক দু ধরনের হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই দুটি হরমোন, অ্যাংজাইটি, স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার মানসিক চাপ কমতে শুরু করলে মন আনন্দে ভরে উঠতে একেবারে সময় লাগে না।
পেশী এবং হাড়ের শক্তি বাড়বে: নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ধীরে ধীরে সারা শরীরে ছড়িয়ে থাকা প্রতিটি পেশীর কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। ফলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনও ধরনের হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
এনার্জি লেভেল বাড়তে শুরু করে: আজকাল প্রায় প্রতিটি অফিসেই কাজের চাপ যে হারে বাড়ছে তাতে সারা দিন এনার্জেটিক থাকার প্রয়োজনও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আর তাই তো শরীরচর্চার প্রয়োজনীয়তাও বাড়ছে সমান তালে। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে এনার্জি লেভেল মারাত্মক বেড়ে যায়। ফলে ক্লান্তি এবং অনিদ্রার মতো সমস্যা কমতে একেবারেই সময় লাগে না।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়: শরীরচর্চা করার সময় ঘামের সঙ্গে শরীরের অন্দরে জমে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমতে থাকে। আর এমনটা যত হতে থাকে, তত ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়তে শুরু করে। কারণ টক্সিক উপাদান ত্বকের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তাই এর পরিমাণ যত কমবে, তত ত্বকের জন্য উপকার।
শরীরে যে কোনও যন্ত্রণা কমতে সময় লাগে না: এক সময় এমন ধারণা ছিল যে শরীরে কোথাও কোনও যন্ত্রণা হলে রেস্টই একমাত্র চিকিৎসা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ধরণা বদলে গেছে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে কোনও ধরনের ব্যথা কমাতে শরীরচর্চার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এক্সারসইজ করার সময় শরীরের প্রতিটি অংশে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই কষ্ট কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, যে কোনও ধরনের ক্রণিক যন্ত্রণা কমাতেও শরীরচর্চা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

Related News