জেনেনিন ,আপনার রোজকার ব্যবহারকারী কসমেটিকস এর কিছু বিশেষ তথ্য

Written by News Desk

Published on:

কসমেটিকস বা প্রসাধনসামগ্রী নিত্য ব্যবহার্য উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম। সৌন্দর্য বৃদ্ধির খাতিরে আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরণের কসমেটিকস ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলোর মানের বিষয়টি আজানাই থেকে যায়। সকলে কসমেটিকস পণ্যসমূহের মনোমুগ্ধকর বিজ্ঞাপন দেখেই আকৃষ্ট হয়।

কসমেটিকস কেনার সময় বেশিরভাগ সময়ই লেবেল পড়ে দেখা হয় না। পণ্যটি ক্রিম, লোশন, শ্যাম্পু, কাজল বা লিপস্টিক অথবা মেকআপ এর উপকরণ যাই হোক না কেন আমাদের উচিত যতটুকু সম্ভব লেবেল দেখে কেনা। তবে উল্লেখ্য লেবেলে লেখা উপকরণগুলোর অর্থ বেশির ভাগ সময়ই বোঝা যায় না। কোন উপকরণের ফলে কি ক্ষতি হতে পারে কিংবা সেসকল ক্ষতির মাত্রা কিরূপ তা আমাদের একেবারেই অজানা। কিন্তু কোন কসমেটিকে কোন উপকরণ কতটা পরিমাণ আছে এবং সেটা আমাদের শরীরের জন্য নিরাপদ কিনা তা জানা প্রয়োজন। অন্যথায় হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। তাই আসুন জেনে নেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেগুলো আমাদের সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।

বিএইচএ এবং বিএইচটি ত্বকের রং হালকা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তার পাশাপাশি এটি ক্যান্সারের মতো রোগও ডেকে আনতে পারে। পরিবেশের জন্য খুব খারাপ এই যৌগ দু’টি। জলে মিশলে মাছের ক্ষতি হয়। কোনও ভাবে পেটে গেলে লিভার খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ত্বকে ব্যবহার করলেও, পরে থাইরয়েডের সমস্যা ডেকে আনতে পারে এরা।

নেল পলিশ, বডি ওয়াশ, কন্ডিশনার, শ্যাম্পু, আই শ্যাডোর মতো প্রোডাক্ট-এ এই ফর্মালডিহাইড ব্যবহার করা হয়। আপাত ভাবে এর ব্যবহার হল ব্যাকটেরিয়া মারতে। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি অফ রিসার্চ অন কারসিনোজেন-এর মতে, এটি মানুষের জন্য প্রচণ্ড ভাবে ক্যান্সার ঘটাতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমিয়ে দেয় এই যৌগ।

বোরিক অ্যাসিড বাজারে প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হয় ত্বক ফরসা করার ক্রিমে। এই বোরিক অ্যাসিড শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই বোরিক অ্যাসিডের ক্ষতিকারক প্রভাব আরও বেশি। শুক্রাণু পরিমাণ কমে যেতে পারে এর কারণে। এবং পুরুষ প্রজননক্ষমতা হারাতে পারেন এই যৌগ অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরে গেলে।

মার্কারি বা পারদ ত্বক উজ্জ্বল করতে পারে। আই শ্যাডো বা আই মেকআপে এর বেশি ব্যবহার হয়। মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে মার্কারি। যে কোনও প্রোডাক্ট কেনার আগে দেকে নিন, তাতে ক্যালোমেল, মারকিউরিও, মারকিউরিও ক্লোরাইড বা সাধারণ মার্কারি-র কথা লেখা আছে কি না।

শ্যাম্পু, কোলোন, কন্ডিশনার, বডি ওয়াশের মতো প্রোডাক্ট কেনার সময়,ফ্র্যাগরান্স লেখা আছে কিনা। বহু নামী কোম্পানিরও বোতলেই উপাদানের তালিকায় এই শব্দটি লেখা থাকে। কিন্তু ফ্র্যাগরান্স মানে কি শুধুই সুগন্ধ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নামের আড়ালে রয়েছে এমন কতগুলো যৌগ, যেগুলোর কথা কোম্পানিরা প্রকাশ্যে বলতে চায় না। এবং সেই সব যৌগের ব্যবহারে অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট থেকে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার মত সমস্যা হতে পাড়ে ।

চুলের তেলচিটে ভাব দূর করতে পারে পলিএথিলিন গ্লাইকল যৌগ। তাই শ্যাম্পুতে এর ব্যবহার করা হয়। কিন্তু মনে রাখবেন, এই যৌগ একই সঙ্গে ত্বকের স্বাভাবিক তৈলাক্ত ভাবও নষ্ট করতে পারে। তাতে ত্বকের ক্যান্সার থেকে মস্তিষ্কের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। তাই শ্যাম্পু কেনার আগে তাতে পলিএথিলিন গ্লাইকল বা পিইজি আছে কি না পরীক্ষা করে নিন।

প্রায় শতকরা ৬০ ভাগ লিপস্টিকে রয়েছে সীসা। সীসা থেকে অ্যানিমিয়া, গ্রোথ রিটার্ডেশন বা খিঁচুনি হতে পারে। তাই এসকল লিপস্টিক এড়িয়ে চলাই ভালো বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা বা বাচ্চাদের লিপস্টিক এড়িয়ে চলা উচিত। নেইল পলিশে থাকে এই ফরমালডিহাইড। তাই সতর্ক থাকতে হবে নেইল পলিশ কেনার সময়ও। শ্যাম্পুতে অতিরিক্ত সোডিয়াম লরেথ সালফেট থাকলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে ব্রেস্ট ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়ে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার মাত্রা সহনীয় থাকে।

Related News