নিয়মিত তেজ পাতা পোড়ানো শুরু করলে যে যে উপকারগুলি পাবেন জেনেনিন বিস্তারিত

Written by News Desk

Published on:

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে তেজ পাতার ভেতরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান, পাতাটি পোড়ানোর সময়ে বাতাসে মিশতে শুরু করে। তারপর শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে সেই বাতাস যখন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে, তখন দেহের অন্দরে একাধিক পরিবর্তন হতে শুরু করে। ফলে বেশ কিছু রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে আরও নানা উপকার পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত, ইতিহাসের পাতা ওল্টালে জানতে পারবেন গ্রিক এবং রোমানরা তেজ পাতাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ মেডিসিন হিসেবে বিবেচিত করতো। কারণ সে সময়ই তারা জানতে পেরে গিয়েছিল এই প্রকৃতিক উপাদনটি গুনাগুণ সম্পর্কে। কিন্তু সে তথ্য ভারতে পৌঁছাতে একটু সময় লেগে গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, সচেতনতার অভাবের কারণে আজও অনেকে তেজ পাতাকে শুধু রান্নার একটি উপাদান হিসেবেই বিবেচিত করে থাকেন। নিয়মিত তেজ পাতা পোড়ানো শুরু করলে যে যে উপকারগুলি মেলে সেগুলি হল…

১. অ্যাংজাইটি এবং মানসিক অবসাদ কমে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে তেজ পাতা পোড়ানোর সময় সেই ধোঁয়া শরীরে প্রবেশ করলে মস্তষ্কের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে অ্যাংজাইটি, টেনশন এবং মানসিক চাপ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ক্লান্তিও দূর হয়। প্রসঙ্গত, আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব নার্স অ্যানেস্থেসিস্ট-এর প্রতিনিধিদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে তেজ পাতার গন্ধ নাকে গেলে ব্রেন অ্যাকটিভিটিও বাড়তে শুরু করে।

২. প্রদাহ কমায়: তেজ পাতার অন্দরে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার দেহের অন্দরে হতে থাকা প্রদাহ কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জয়েন্ট পেন কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে যে কোনও ধরনের যন্ত্রণাও কমে যায়। প্রসঙ্গত, তেজ পাতার অন্দরে ইগুয়েনাল নামে একটি উপাদান থাকে, যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়: তেজ পাতার অন্দের থাকা ইগুয়েনাল নাম উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর শরীরের কর্মক্ষমতা যেমন বাড়িয়ে তোলে, তেমনি রোগ প্রতিরোধ ব্য়বস্থাকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে ছাট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। প্রসঙ্গত, আসন্ন শীতকালে সুস্থ থাকতে আজ থেকেই প্রতিদিন তেজ পাতা পোড়াতে শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।
৪. ডায়াবেটিসের প্রকোপ কমে: ইউ এস ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে প্রতিদিন ১-৩ গ্রাম পোড়ানো শুরু করলে ইনসুলিনের উৎপাদন এত মাত্রায় বেড়ে যায় যে রক্তে শর্করার মাত্র বৃদ্ধি পাওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না। প্রসঙ্গত, এই পরিমাণ তেজ পাতা যদি প্রতিদিন খেতে পারেন, তাহলেও কিন্তু সমান উপকার মেলে।
৫. ব্রেন পাওয়ার বাড়ায়: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে তেজ পাতার পোড়ানোর সময় তা থেকে বেরনো ধোঁয়া যদি কম করে ১০ মিনিট ইনহেল করতে পারেন, তাহলে ব্রেন সেলের কর্মক্ষমতা এতটা মাত্রায় বৃদ্ধি পায় যে মনোযোগ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কগনিটিভ অ্যাকটিভিটিও বাড়তে থাকে। প্রসঙ্গত, তেজ পাতায় উপস্থিত পিনেইন, সিনেওল এবং এলিমিসিন নামক একাধিক কেমিকেল শরীর এবং মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৬. রেসপিরেটরি সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: বুকে জমে থাকা কফ দূর করতে তেজ পাতার কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। সেই সঙ্গে বায়ু দূষণের কারণে যাতে ফসুফসের কোনও ক্ষতি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে এই প্রকৃতিক উপাদনটি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফুসফুসের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। এক্ষেত্রে তেজ পাতা না পুড়িয়ে পরিষ্কার গরম জলে কয়েকটি তেজ পাতা ফেলে ভাপ নিন। দেখবেন নিমেষে সর্দি-কাশি তো কমবেই। সেই সঙ্গে ফুসফুসও তরতাজা হয়ে উঠবে।

Related News