পিরিয়ডের সময় প্রচণ্ড ব্যথা? এন্ডোমেট্রিয়াম নয়তো! দেখেনিন একঝলকে

Written by News Desk

Published on:

পিরিয়ডের সময় অসহ্য ব্যথায় কাবু হয়ে যান? এমনকি সমস্যা হয় যৌন সঙ্গমের সময়েও? এন্ডোমেট্রিওসিস নামের অসুখের বৈশিষ্ট্য এটি। গ্রাম, শহর নির্বিশেষে অসংখ্য নারী এই এন্ডোমেট্রিওসিস-এর সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু এই অসুখের সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকার কারণে বিনা চিকিৎসাতেই কাটছে দিনের পর দিন। অজ্ঞতার কারণে দিনে দিনে মহামারির আকার নিচ্ছে এই অসুখটি।

পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব শুরুর আগে অল্পস্বল্প পেটব্যথা প্রায় সবারই হয়। কিন্তু ব্যথা যদি সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তাহলে ব্যথা কমাতে যেমন তেমন পেইন কিলার না কিনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। পলিসিস্টিক ওভারি হলে সিস্ট থাকবেই। তবে এই সিস্টগুলি খুব একটা সমস্যা তৈরি করে না। কিন্তু সিস্টগুলি যদি রক্তে পরিপূর্ণ হয়, তাহলে এন্ডোমেট্রিওসিস-এর লক্ষণ।

জরায়ু বা ইউটেরাসের এক প্রয়োজনীয় একটি আবরণ হল এন্ডোমেট্রিয়াম। বয়ঃসন্ধির সময় থেকে সন্তান ধারণের সময়কালে মেয়েদের জরায়ু বা ইউটেরাসের নানা পরিবর্তন ঘটে। ঋতুস্রাবের পর জরায়ুর মধ্যে থাকা এন্ডোমেট্রিয়াম আবরণটি ক্রমশ পরিপূর্ণতা পায়। এই সময়ে গর্ভবতী না হলে এন্ডোমেট্রিয়াম আবরণটি ক্রমশ জরায়ু থেকে ছিঁড়ে পড়ে যায়। ২৮ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে এন্ডোমেট্রিয়াম আবরণটি জরায়ু থেকে খসে পড়ে গেলেই ঋতুস্রাব শুরু হয়।

এন্ডোমেট্রিওসিসে আক্রান্ত রোগীর জরায়ুর ভিতরে ছাড়াও এর বাইরের দিকে, ডিম্বাশয়ে (ওভারিতে), ডিম্ববাহী নালী বা গর্ভনালীতে (ফ্যালোপিয়ান টিউবে) এমনকী কখনও কখনও রেক্টাম বা মলাশয়ের গায়ে এন্ডোমেট্রিয়াম আবরণ তৈরি হয়। ঋতুস্রাবের সময় জরায়ুর বাইরের দিকের এই সব অস্বাভাবিক এন্ডোমেট্রিয়াম টিস্যুগুলিও ছিঁড়ে যায়। ফলে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হতে থাকে। আর এই কারণেই এই সময় তলপেটে অসহ্য ব্যথা করতে থাকে।

এই রক্তক্ষরণের ফলে ওভারির ভিতরে রক্ত জমে যে সিস্ট তৈরি হয় তাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘চকলেট সিস্ট’ বলা হয়। অজ্ঞতা এবং অবহেলার ফলে অনেক সময় ডিম্বাশয়ে ও জরায়ুতে এন্ডোমেট্রিওসিসের কারণে টিউমারও হতে পারে। সেক্ষেত্রে জটিলতা এবং সমস্যা অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।

করণীয়:
এন্ডোমেট্রিওসিস এমনই এক অসুখ যা সম্পূর্ণভাবে সারিয়ে তোলা সম্ভব নয়। তবে ডায়বিটিস বা হাইপ্রেসারের মতো নিয়ম মেনে, নিয়মিত চিকিৎসার সাহায্যে এই অসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়মিত চেক আপ করানো প্রয়োজন।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, ডায়াথার্মি, লেসার বা ল্যাপারোস্কোপির সাহায্যে এন্ডোমেট্রিওসিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে প্রতি মাসে যদি ঋতুস্রাব বা পিরিয়ডের সময় তলপেটের অসহ্য যন্ত্রণা হতে থাকে তাহলে দেরি না করে কোনো স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।

Related News