বেকিং সোডার 11টি স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য সম্পর্কিত উপকারিতা, জানলে অবাক হবেন আপনিও

Written by News Desk

Published on:

বাড়ির রান্নাঘরে এক কোনে ফেলে রাখা ও কেবলমাত্র কেক আর মাফিনের জন্য ব্যবহার করার জন্য বেকিং সোডা কেনা হলেও এর গুনাগুন যে স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য এর ক্ষেত্রে কতখানি তা আমাদের ধারণার বাইরে। অত্যন্ত কম দামে পাওয়া বেকিং সোডা যেভাবে অ্যান্টাসিড হিসাবে কাজ করে তার তুলনা অসামান্য। এছাড়াও এতে আছে অ্যান্টিসেপটিক গুন।

বেকিং সোডা আসলে কি?
বেকিং সোডাতে থাকে সোডিয়াম বাইকার্বোনেট । এটিতে নাহকোলাইট থাকে যা প্রাকৃতিক খনিজ ন্যাট্রন। ইজিপ্সিয়ানরা প্রাচীন কালে এটিকে সাবান হিসাবে ব্যবহার করতেন যা বর্তমানে রান্নার একটি সামগ্রীতে পরিণত হয়েছে।

বেকিং সোডার এই ছোট খাটো ব্যবহার ছাড়াও এটি ভীষণভাবে প্রাকৃতিক দুর্গন্ধনাশক পদার্থ, হাত ও দাঁত পরিষ্কারের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এছাড়া নিত্যদিন যদি একটু করে বেকিং সোডা ব্যবহার করা হয় তবে তা শরীরে রক্তের পরিমান ঠিক রাখতে, অ্যাসিড এর পরিমান হ্রাস করতে ভীষণভাবে উপকার করে থাকে। আমাদের শরীরের সামগ্রিক কার্যকলাপে এটি ভীষণ ভাবে উপকার করে। জলে মিশ্রিত বেকিং সোডা এর উপকার সারা পৃথিবীতে প্রাচীন কাল থেকে স্বীকৃত। এবার আলোচনা করা যাক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বেকিং সোডা কিভাবে সাহায্য করে থাকে।
স্বাস্থ সংক্রান্ত উপকার

1) বেকিং সোডা হলো প্রাকৃতিক অম্লনাশকঃ বেকিং সোডা শরীরে এক নিরপেক্ষ প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করে। অ্যাসিড নিঃসরণ হলো শরীরের খুব সাধারণ একটি ঘটনা যার ফলে অম্বল এর সমস্যা প্রায়শই দেখা দিয়ে থাকে। বেকিং সোডা এর মধ্যে সোডিয়াম বাইকার্বোনেট থাকার জন্য অম্বলের সমস্যা এবং পেটের অন্যান্য সমস্যা মেটাতে সাহায্য করে।

2) প্রাকৃতিক অ্যালকালাইসিং এজেন্ট হিসাবে পরিচিতঃ শরীর থেকে অম্ল এর পরিমান কমাতে এবং পি.এইচ এর ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে বেকিং সোডা। শরীরে অম্লের পরিমান বেশি হয়ে গেলে অস্টিওপরোসিস,আর্থারাইটিস এর মতো সমস্যা দেখা দেয়।

3) মূত্রনালির সংক্রমণ এর উপশম করতে সহায়তা করেঃ মূত্রনালির সংক্রমণ এর উপশম করার অন্যতম একটি ঘরোয়া পদ্ধতি হলো বেকিং সোডা ও জল এর মিশ্রণ।

4) অতিরিক্ত ব্যায়াম এর ফলে সৃষ্ট সমস্যা এর প্রতিষেধক নামেও পরিচিতঃ অতিরিক্ত ব্যায়াম এর ফলে শরীরে ল্যাকটিক অ্যাসিড জমতে পারে, শরীরে পেশীগত কাঠিন্নতা দেখা দিলে এই সমস্যার প্রতিষেধক হিসাবে বেকিং সোডা ভয়ানক উপকারী। জল এর সাথে মিশ্রিত বেকিং সোডা এক্ষেত্রে অসাধারন উপকার করে।

5) কিডনি এর কার্যকলাপে সাহায্য করেঃ ক্ষারীয় পদার্থ হিসাবে বেকিং সোডা শরীরে অম্লের পরিমান কমাতে এবং পি.এইচ সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ‘মার্কিন সোসাইটি অফ নেফ্রোলজি’-র মতো একটি পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে এটি শরীরে কিডনির কার্যকলাপ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান ঘটায়।

6) গেঁটে বাতের সমস্যা কমাতে বিশেষ উপকারীঃ ইউরিক অ্যাসিড এর পরিমান মূত্র এবং টিস্যুতে অতিরিক্ত পরিমানে বেড়ে গেলে সারা শরীরে মারাত্মক যন্ত্রনা দেখা দেয় যার ফলস্বরূপ গেঁটে বাত দেখা যায়। এটি ঠিক করতে বেকিং সোডা অসম্ভব উপকার করে।

সৌন্দর্য বাড়াতে বেকিং সোডার ভূমিকা:

1) ত্বকের উন্নতিতে সহায়তা করে: মৃত কোষ অপসারিত করে নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে বেকিং সোডা। এর ফল স্বরূপ ত্বকের পুরানো দ্যুতি ফিরে আসে। এর জন্য কেবল প্রয়োজন জলের সাথে বেকিং সোডা মিশিয়ে মুখে বৃত্তাকারের ঘষে লাগানোর। তবে এটি সপ্তাহে 2 দিনের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।

2) ব্রণ প্রতিরোধক হিসাবে: ব্রণ এবং মুখে হওয়া ফুসকুড়ি কমাতে অসাধারণ উপকার করে বেকিং সোডা।

3) ঠোঁট এর কালোভাব কমাতে সাহায্য করে: মধু এবং বেকিং সোডা মিশিয়ে প্রতিদিন 3 মিনিট করে ঠোঁটে লাগিয়ে রাখলে ঠোঁট এর কালোভাব দূর হয়। তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলা উচিত।

4) দাঁতের সাদা ভাব ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে: বেকিং সোডার মতো দাঁত পরিষ্কার অন্য কিছুতেই হয় না। দাঁতের ওপর থেকে দাগ ওঠানোর জন্য বেকিং সোডা এর ভূমিকা অসাধারণ।

5) চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে: কোনো বিজ্ঞানসম্মত মতামত না থাকলেও চুলকে নরম করতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে বেকিং পাউডার।

বেকিং সোডা এর উপকারিতা জানার পর এই সাধারণ জিনিসটার আরো বেশি গুরুত্ব পাওয়া প্রয়োজন কি বলুন? আশা করি আপনিও এটি ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের উপকার করবেন।

Related News