শরীর সুস্থ রাখতে রোজ হাঁটার অভ্যেস গড়ে তুলুন তাহলেই হবে!

Written by News Desk

Published on:

হাঁটা শরীরের জন্য উপকারী একথা কমবেশি সবারই জানা। তবে ব্যস্ততার কারনে অনেকেই হাঁটার সুযোগ পান না। আর কায়িক শ্রম না করার কারনে বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। হাঁটা একেবারে সহজ একটা কাজ। অতি সহজে আপনি এটা আপনার ব্যস্ত রুটিনের ভেতরে ঢুকোতে পারবেন এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে পারবেন।

রোজ নিয়মিতভাবে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুললে বিভিন্ন রোগব্যাধি আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে হাঁটার কোনো বিকল্প নেই। তাই জেনে নিন হাঁটার উপকারিতা-

মন মেজাদ ভালো রাখে
মন মেজাদ ভালো রাখতে নিয়মিত হাঁটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিয়মিতভাবে সকালে মনোরম পরিবেশে প্রাকৃতিক ছোঁয়াই দিনের শুরুটা করলে শরীরের সতেজতা প্রবনতা বাড়ার সাথে সাথে শরীরের মাংস পেশি গুলো অনেকবেশি মজবুত হয়। এবং মানসিক চাপ ও টেনশন থেকে মুক্তি পাওয়া যায় খুব সহজেই।

হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে
প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে হাঁটলে আপনার হৃৎস্পন্দন বাড়বে। হৃৎস্পন্দন বেশি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে রক্তসঞ্চালনও ভালো হবে। দ্রুত হাঁটলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও কমে, ডায়াবেটিসের সমস্যা দূর হয়। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনে থাকে।

ভালো ঘুম আসে
যাঁদের রাতে ঘুম আসে না বা ইনসোমনিয়া রোগ থাকে তাঁদের হাঁটা খুব প্রয়োজন। হাঁটলে ভালো ঘুম হয়। তাই প্রতিদিন মর্নিং ওয়াক করা ভালো। এর ফলে মস্তিষ্ক শান্তও থাকে। শরীর চনবনে থাকে।

স্ট্রকের ঝুঁকি কমায়
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিতভাবে হাঁটার কারনে উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা কমে যাওয়ার পাশাপাশি স্ট্রকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাই।

হাড়ের শক্তি বাড়ায়
প্রতিদিন হাঁটলে হাড়ের ঘনত্ব বাড়ে। হাড়ক্ষয় কম হয়। এই অতি সাধারন একটি ব্যায়াম মেরুদণ্ড, পা ও কোমরের শক্তি বাড়ে।

ত্বক ভালো থাকে
ত্বকে দাগ-ছোপ, ব্রন, ত্বক ফেটে যাওয়ার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। ত্বকে রক্তসঞ্চালন ভালো না হওয়ার কারনেই এই সমস্যা হয়। তাই ত্বকে রক্তসঞ্চালন ভালো তাই ত্বকে রক্তসঞ্চালন ভালো করার জন্য ও ত্বকে অক্সিজেন ভালোভাবে পৌঁছতে পারে সেজন্য প্রতিদিন হাঁটা প্রয়োজন। প্রতিদিন হাঁটলে ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। ত্বক স্বাস্থ্যবান হবে।

হজমের গতি বাড়ায়
হাঁটা আপনার হজমের গতিতে সহায়তা করে। লাঞ্চ বা ডিনারের পরে ১০ মিনিটের জন্য দ্রুত ঘুরে দেখুন। খাওয়ার পরে হাঁটা ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে।

ওজন হ্রাসে কাজ করে
প্রতিদিন হাঁটা আপনাকে আরও ক্যালোরি ঝরাতে সহায়তা করে এবং ওজন বাড়ার ঝুঁকি এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত স্বাস্থ্যগত জটিলতা থেকেও মুক্তি দেয়। এটি আপনাকে প্রতি মাইলে ১০০ ক্যালোরি পর্যন্ত পোড়াতে সহায়তা করতে পারে।

কিডনির উপর চাপ কমায়
শরীর থেকে নুন অপসারণ প্রাথমিকভাবে কিডনি দ্বারা করা হয়। এট ত্বকের মাধ্যমে ঘাম হয়ে নির্গত হতে পারে। ঘামের ফলে কিছুটা লবন বের হয়ে যাওয়ার ফলে এটি কিডনির চাপ কমাতে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে
ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনারের পরে ১৫ মিনিট বা ২,০০০ স্টেপ হাঁটলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে বা এর প্রবলতা হ্রাস করতে পারে। আপনি যত বেশি সক্রিয়, আপনার বিপাকক্রিয়া তত দ্রুত এবং আপনার ডায়াবেটিস তত বেশি দূরে থাকবে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস
ব্রিটিশ জার্নাল অব ক্যান্সার স্টাডিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে নিয়মিত হাঁটলে খাদ্যনালীর নিম্নাংশের ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ২৫ শতাংশ কমে যায়। বৃহদান্ত্রের ক্যান্সারের আশঙ্কা কমে যায় নিয়মিত হাঁটা চলায়।

খালি পায়ে হাঁটার উপকারিতা

১) স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে খালি পায়ে হাঁটার গুরুত্ব অনেক বেশি। খালি পায়ে হাঁটলে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের অন্দরে থাকা নিউরনগুলি মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে অ্যাকটিভ হয়ে যায়। যার ফলে একদিকে যেমন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে, তেমনি বুদ্ধির জোরও বাড়তে শুরু করবে।

২) খালি পায়ে হাঁটের সময় মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে সারা শরীরে রক্তচলাচল ঠিক মতো হতে শুরু করে দেয়। ফলে অক্সিজেন সমৃদ্ধি রক্ত বেশি বেশি করে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পৌঁছে গিয়ে তাদের কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।

৩) খালি পায়ে হাঁটার সময় ভেনাস রিটার্ন বেড়ে যায়। অর্থাৎ বেশি বেশি করে রক্ত পৌঁছে যেতে শুরু করে হার্টে। ফলে পেশী এবং হাড় আরও শক্তপক্তো হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে হার্টের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

৪) খালি পায়ে ঘাসের উপর হাঁটলে পায়ের তলায় থাকা একাধিক প্রেসার পয়েন্টে চপ পরতে শুরু করে। এই সব প্রেসার পয়েন্টের সঙ্গে চোখের সরাসরি যোগ রয়েছে। ফলে পায়ের তলায় যত চাপ পরে, তত দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে শুরু করে।

Related News