দিনে ২-৩টি সিগারেট খাওয়া ক্ষতিকারক নয়, এটা কি সত্যি? জেনেনিন

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও ধূমপায়ীরা এতে আসক্ত হয়ে থাকেন। ধূমপান ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। অনেকেই ভেবে থাকেন ধূমপান ছেড়ে দিয়েও কোনো লাভ নেই! কারণ ফুসফুস যতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তা তো হয়েই গেছে! এটি একেবারেই ভুল ধারণা।

২০০৫ সালে আমেরিকান জার্নাল অব পাবলিক হেলথে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানা যায়, কিছু ভুল ধারণার কারণে অনেকেই ধূমপান আসক্তি থেকে বের হতে পারেন না। জেনে নিন তামাক এবং ধূমপান সম্পর্কে প্রচলিত কিছু ধারণা, যা দ্রুত পাল্টানো সম্ভব-

সিগারেটের একমাত্র ক্ষতিকারক উপাদান হলো নিকোটিন

নিকোটিন অবশ্যই স্পর্শকাতর। তবে সিগারেট তামাকের আরও অনেক ক্ষতিকারক পদার্থ আছে। নিকোটিনের বাইরেও সিগারেটে বিভিন্ন যৌগ আছে, যা ক্ষতির।

আমেরিকান ফুসফুস অ্যাসোসিয়েশনের মতে, সিগারেটে কমপক্ষে ৭ হাজার রাসায়নিক আছে। এগুলো শরীরে প্রবেশ করলে ৬৯টি কার্সিনোজেনিক উৎপাদন হতে পারে (ক্যান্সারের জন্য দায়ী উপাদান)।

ধূমপান মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়

এটিও একটি ভুল ধারণা। বিজ্ঞানের মতে, ধূমপান মানসিক চাপ কমায় না বরং বাড়ায়। কারণ ধূমপানের সময় আপনার দেহ নিকোটিন প্রত্যাহার করে। এই প্রত্যাহার উদ্বেগ, চাপকে আরও বাড়িয়ে তোলে। সরাসরি আপনার মেজাজকে প্রভাবিত করে।

হালকা সিগারেটে ক্ষতি কম

মার্কিন জার্নাল অব পাবলিক হেলথের সমীক্ষায় আরও প্রকাশিত হয়েছে, প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ হালকা সিগারেট খেয়ে ভাবেন শরীরের কম ক্ষতি হবে। এই ধারণাটিও ভুল। কারণ সিগারেটে কমপক্ষে ৭ হাজার রাসায়নিক থাকে।

দিনে ২-৩টি সিগারেট খাওয়া ক্ষতিকারক নয়

২০১৫ সালে বিএমসি মেডিসিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিদিন যদি একটি করেও সিগারেট খান; তাহলেও আপনার ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ ছাড়াও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হবেন। তাই দিনে ২-৩টি সিগারেট খেলে কোনো ক্ষতিই হবে না, এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। একমাত্র ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করলেই আপনার ফুসফুস আগের ক্ষত সারিয়ে নেবে।

ধূমপান ত্যাগ করেও কোনো লাভ নেই

যারা নিয়মিত ধূমপান করেন; তারা ভাবেন ফুসফুসের ক্ষতি তো হয়েছেই! এখন ধূমপান ত্যাগ করে কী লাভ? এ ধারণাটি একদমই ভুল। যখনই আপনি সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করবেন; তখনই আপনার দেহ এবং ফুসফুস আগের ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

শরীরের রক্তচাপের মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। কার্বন মনোক্সাইডের মাত্রা ১২ ঘণ্টার মধ্যে কমতে শুরু করে। স্নায়ুবিক ক্রিয়াকলাপও উন্নতি ঘটে। ফুসফুসের কার্যকারিতা ধূমপান ছাড়ার এক সপ্তাহ পরে উন্নত হয়।

ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার এক বছরের মধ্যে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি অর্ধেক কমতে পারে। আপনি যদি ১০-১৫ বছর ধরে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন; তবে তামাকজনিত সব রোগের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমবে।

News Desk

Recent Posts

ঘরোয়া উপায়ে কোমরের ব্যথা সারাবেন যেভাবে

কোমরের ব্যথা বা ব্যাক পেইনের সমস্যায় বর্তমানে কমবেশি সবাই ভোগেন। বিশেষ করে কর্মজীবীদের মধ্যে যারা সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ…

1 hour ago

গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে ভাত নাকি রুটি খাবেন?

গরমে শরীর সুস্থ রাখতে হলে এমন খাবার খেতে হবে যা ঠান্ডা রাখতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ফল-সবজি ও পানীয় আছে যা…

2 hours ago

এসি ছাড়াই ঘর ঠান্ডা রাখবেন যেভাবে

অসহ্য এই গরমে সবারই নাজেহাল অবস্থা। গরস সহ্য করতে না পেরে অনেকেই এখন কিনছেন এয়ার কন্ডিশনার বা এয়ার কুলার। তবে…

4 hours ago

পেট ভরে খাওয়ার ভুলে হতে পারে যেসব রোগ

অনেকেই খাবার খাওয়ার সময় অনেকটাই খেয়ে ফেলেন। তবে পেট ভরে খাবার খাওয়া কিন্তু শরীরের জন্য ভালো নয়। বিশেষ করে এই…

5 hours ago

ব্রেইন স্ট্রোকের প্রাথমিক ৭ লক্ষণ এড়িয়ে গেলেই বিপদ

শরীরের কোনো স্থানে ঠিকমতো রক্ত চলাচল করতে না পারলে ওই অংশের কোষগুলো প্রাণ হারাতে শুরু করে। মাথাতেও এই ঘটনা ঘটতে…

9 hours ago

প্রতিদিন আমলকি খেলে কী হয়?

স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে শুরু করে মুখের ব্রণের মতো সমস্যা দূর করে তাই একে উপকারিতার স্টোরহাউজ বলা হয়। বলছি আমলকির কথা।…

9 hours ago