আপনি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন স্ট্রেস ইটিং? জেনেনিন বিস্তারিত

অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার ফলে ঘন ঘন খাওয়ার প্রবণতাকে সহজ ও সংক্ষিপ্ত ভাষায় বলা হয় স্ট্রেস ইটিং। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সঙ্গরোধে (কোয়ারেন্টাইন) কিংবা সেলফ আইসোলেশন অবস্থায় সবার থেকে দূরে নিজ বাসায় দিনের পর দিন কাটানোর ফলে স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায় মানসিক চাপ। সাথে পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের খবরে দেখা দেয় উদ্বেগ।

সমন্বিতভাবে যার প্রভাবে খাওয়ার হার বেড়ে যায় অনেকখানি। মানসিক চাপ ও অস্থিরতার মুখে থাকলে নেতিবাচক এই অনুভূতিগুলোকে দূর করার জন্য খাবার খাওয়ার প্রতি ঝুঁকে পড়েন অনেকেই। যা থেকে দেখা দেয় স্ট্রেস ইটিং। খাবার গ্রহণের সঠিক সময় না হলেও কিংবা ভালোভাবে ক্ষুধাভাব দেখা না দিলেও কোন কিছু খাওয়ার জন্য নিজের ভেতর থেকে তাগাদা অনুভূত হয়।

নিউইয়র্কের রেজিস্টার্ড ডায়েটেশিয়ান মার্থা ম্যাককিট্রিক আরডি’র মতে, স্ট্রেস ইটিং এ সময়ের সম্ভাব্য সমস্যার মাঝে একটি। তবে এটা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। যেকোন ঘটনা বা মুহূর্ত থেকেই স্ট্রেস ইটিং শুরু হতে পারে এবং সহজেই এই অভ্যাসটিকে দূর করা সম্ভব। স্ট্রেস ইটিংয়ের অভ্যাসকে পিছু ছাড়াতে মার্থা জানিয়েছেন সহজ পাঁচটি টিপস।

১. খাবার খাওয়া যতটা পুষ্টি গ্রহণের জন্য, তার চেয়ে বেশি মানসিক সন্তুষ্টির জন্য। তাই পুষ্টিকর খাবারের সাথে মুখরোচক পদের দিকেও নজর দিতে হবে। অনবরত বিস্বাদ ও সাদামাটা খাবার খাওয়ার ফলে মুখরোচক খাবার খাওয়ার ক্রেভিং বা ইচ্ছা প্রকট হয়। যা স্ট্রেস ইটিংয়ে অবদান রাখে। খাবারের মেন্যুতে এমন খাবার রাখতে হবে যা একইসাথে পুষ্টিসম্পন্ন, সুস্বাদু ও পেট দীর্ঘ সময় ভরা রাখতে সাহায্য করবে।

২. স্ট্রেস ইটিং তখনই বেড়ে যায় যখন হাতের আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাক্স ঘরানার খাবার থাকে। নিজের আশপাশ থেকে এমন ধরনের খাবার সরিয়ে ফেলতে হবে। এতে করে অহেতুক কোন খাবার খাওয়ার প্রতি আগ্রহ জন্মাবে না।

৩. দ্বিতীয় ধাপের পর তৃতীয় ধাপেই আসবে স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি। নিজের আশপাশ থেকে অস্বাস্থ্যকর খাবার সরিয়ে ফেলার পর স্বাস্থ্যকর বিভিন্ন ধরনের খাবার রাখতে হবে। ফল, সবজি ও ফল-সবজির মিশেলে তৈরি সালাদ খুবই স্বাস্থ্যকর খাবার। যেকোন সময় খাওয়া যাবে ওজন বাড়ার চিন্তা ছাড়াই।

৪. যতই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হোক না কেন, সবকিছুই শরীরের উপরে প্রভাব বিস্তার করে। একবারে অনেক বেশি ফল বা সবজি খাওয়া হলে পেটের সমস্যাসহ পেটে ব্যথা, গ্যাসভাব হওয়ার মত প্রাদুর্ভাবগুলো দেখা দেওয়া শুরু করবে। তাই যখনই স্ট্রেস ইটিংয়ের সমস্যাটি দেখা দেবে, নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে- আসলেও কি আমি ক্ষুধার্ত? আমার কি এই খাবারটি এখন খাওয়া প্রয়োজন? এই খাবারটি কি বাড়তি হয়ে যাচ্ছে? প্রশ্নের উত্তরই জানিয়ে দেবে সে সময়ে কোন খাবার খাওয়া ঠিক হবে কিনা।

৫. স্ট্রেস ইটিংয়ে চা পানের উপলক্ষ্য করে নিতে হবে। যখনই অশান্তি, অস্থিরতা মানসিক চাপ বেড়ে যাবে নিজেকে এক কাপ চা ট্রিট হিসেবে দিতে হবে। লাল চা, আদা চা, গ্রিন টিসহ বহু স্বাস্থ্যকর চা পান করা যাবে। চায়ের সাথে একটি টোস্ট, এক বাটি মুড়ি, ব্যাস আর কি চাই!

News Desk

Recent Posts

গরমে শরীরে কোন পুষ্টি বেশি জরুরি? কোন খাবারে মিলবে?

গরমে অতীষ্ট জনজীবন। এ সময় শরীর সুস্থ রাখতে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। কারণ এমনিতেই গরমে শরীরে পানির পরিমাণ কমে যায়। তার…

22 mins ago

ঘরোয়া উপায়ে কোমরের ব্যথা সারাবেন যেভাবে

কোমরের ব্যথা বা ব্যাক পেইনের সমস্যায় বর্তমানে কমবেশি সবাই ভোগেন। বিশেষ করে কর্মজীবীদের মধ্যে যারা সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ…

2 hours ago

গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে ভাত নাকি রুটি খাবেন?

গরমে শরীর সুস্থ রাখতে হলে এমন খাবার খেতে হবে যা ঠান্ডা রাখতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ফল-সবজি ও পানীয় আছে যা…

2 hours ago

এসি ছাড়াই ঘর ঠান্ডা রাখবেন যেভাবে

অসহ্য এই গরমে সবারই নাজেহাল অবস্থা। গরস সহ্য করতে না পেরে অনেকেই এখন কিনছেন এয়ার কন্ডিশনার বা এয়ার কুলার। তবে…

4 hours ago

পেট ভরে খাওয়ার ভুলে হতে পারে যেসব রোগ

অনেকেই খাবার খাওয়ার সময় অনেকটাই খেয়ে ফেলেন। তবে পেট ভরে খাবার খাওয়া কিন্তু শরীরের জন্য ভালো নয়। বিশেষ করে এই…

6 hours ago

ব্রেইন স্ট্রোকের প্রাথমিক ৭ লক্ষণ এড়িয়ে গেলেই বিপদ

শরীরের কোনো স্থানে ঠিকমতো রক্ত চলাচল করতে না পারলে ওই অংশের কোষগুলো প্রাণ হারাতে শুরু করে। মাথাতেও এই ঘটনা ঘটতে…

9 hours ago