বুকে চাপ মানেই গ্যাসের সমস্যা ভেবে অবহেলা নয়, সতর্ক করছে গবেষণা

Written by News Desk

Published on:

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আজকাল অকালেই প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকেই। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অসাবধানতা এই বিপদের মূল কারণ। অন্যদিকে, বুকে ব্যথা হওয়াকে সাধারণ গ্যাসের সমস্যা ভেবেই উড়িয়ে দেন অনেকেই। যা করে নিজের অজান্তেই বড় বিপদ ডেকে আনছেন অনেকেই।

হৃদরোগ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ মানুষই ভাবতে চান না যে, তার হৃদযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে। তাই বুকে চাপ বা অন্য কোনো সমস্যাকে গ্যাস-অম্বল ভেবে লাগাতার হজমের ওষুধ খেয়ে চলেন।

হৃদরোগ চিকিৎসক ধীমান কাহালির কথায়, ‘‘সবার প্রথমে ভ্রান্ত ভাবনা পাল্টানো প্রয়োজন। কারণ হৃদরোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছনোর আগে এক বা একাধিক সঙ্কেত অবশ্যই দেয়।’’

চিকিৎসকেরা আরো জানাচ্ছেন, আচমকা বুকেচাপ ও শরীরে অস্বস্তি, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট, প্রচুর ঘামকে সাধারণ সমস্যা ভাবা মানেই ‘গোল্ডেন আওয়ার্স’-কে নষ্ট করা। অর্থাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার এসব লক্ষণ দেখা দিলে, প্রথম এক ঘণ্টায় চিকিৎসা শুরু করা উচিত। তাহলেই বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব হবে।

এসএসকেএমের হৃদরোগ চিকিৎসক সরোজ মণ্ডল জানাচ্ছেন, এক ধরনের হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ গ্যাস-অম্বলের উপসর্গের মতো হয়। মানুষ ভাবেন, হজমের ওষুধ খেয়ে ঠিক হয়ে গেলেন। কিন্তু তেমনটা একেবারেই নয়। বরং কিছুক্ষণ বিশ্রামের কারণে আপাতত স্বস্তি মিললেও, অলক্ষ্যেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে থাকে। দীর্ঘ দিনের এই সমস্যার সঙ্গে মানসিক চাপ বাড়তি ঝুঁকি তৈরি করে।

সরোজ বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন সমস্যা উপেক্ষা করায় রক্তনালি ক্রমশ সঙ্কুচিত হলেও, বোঝা যায় না। আচমকাই স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে হৃৎপিণ্ডে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়। তখন মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন হয়ে ভেন্ট্রিকুলার অ্যারিদমিয়া হতে পারে। অর্থাৎ হৃদযন্ত্রের গতি মারাত্মক ভাবে বেড়ে আচমকাই তা স্তব্ধ হয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শক দেওয়া প্রয়োজন।’’

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যাদের পরিবারে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ধারাবাহিক ইতিহাস রয়েছে, তাদের কুড়ি বছর বয়স হলেই নির্দিষ্ট সময় অন্তর হৃদযন্ত্র এবং রক্তের কিছু পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

আবার কোভিড পরবর্তী সময়ে রক্তনালির প্রাচীরে ক্ষত হওয়ার সমস্যা অনেক বেড়েছে বলেও জানাচ্ছেন হৃদরোগ চিকিৎসক শুভানন রায়। তার কথায়, ‘‘গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই সমস্যা এক বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। তাই সামান্য সমস্যাকেও অবহেলা করা ঠিক নয়। আর প্রচণ্ড ঘাম, অস্বস্তি হলেও তা হার্টের সমস্যা হতে পারে না ভাবা, মানুষ এই উপেক্ষার প্রবণতা ছাড়তে না পারলে হার্ট সংক্রান্ত বড় বিপদ এড়ানো যাবে না।’

Related News