যেসব কারণে দিন দিন বেড়েই চলেছে ক্যান্সারের ঝুঁকি, বিস্তারিত জানতে পড়ুন

Written by News Desk

Published on:

আপনি কি জানেন, আপনার  টুথপেস্ট থেকেও আপনার ক্যান্সার হতে পারে? আমাদের নিত্য ব্যবহার্য নানা ভোগ্য পণ্য থেকেই আমাদের ক্যান্সার হতে পারে এমনটা জানার পর যে কেউই মর্মাহত হবেন। কিন্তু সেটাই বাস্তব। আসুন জেনে নেওয়া যাক এমন ১৪টি ভোগ্য পণ্য সম্পর্কে যেগুলো আমাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহুগুনে বাড়িয়ে তুলতে পারে।

১. অ্যালকোহল
মদ পানে হৃদরোগ হয়।

এছাড়াও অ্যালকোহল আামাদের দেহে ৭ ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। মলদ্বার, স্তন, খাদ্যনালী এবং মলাশয় সহ আরো নানা অঙ্গের ক্যান্সার হয় মদপানের কারণে।

কারণ অ্যালকোহল পাকস্থলিতে এমন এসিড তৈরি করে যা নাড়ি-ভুড়ির ক্ষয় সাধন করে। অ্যালকোহল ডিএনএ-তেও ক্ষয় সাধন করতে পারে। যা থেকে ক্যান্সার হতে পারে। অ্যালকোহল লিভার কোষ এবং ইস্ট্রোজেন এর উৎপাদনও বাড়ায়। যা থেকে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে।

২. গ্রানাইট মার্বেল
অনেকেই বাড়ির মেঝেতে গ্রানাইট মার্বেল ব্যবহার করতে চান। কারণ সেগুলো সহজে পরিষ্কার করা যায় এবং দাগ পড়ে না। কিন্তু গ্রানাইট থেকে রেডিওঅ্যাকটিভ গ্যান র‌্যাডন বের হয় যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। আর এই রঙহীন এবং গন্ধহীন গ্যাসটি দেখা যায় না। যেসব কারণে সবচেয়ে বেশি ফুসফুস ক্যান্সার হয় তার মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষস্থানে আছে এই র‌্যাডন গ্যাস।

৩. মোমবাতি
মোমবাতিতে আছে কার্সিনোজেন এবং এমন অন্যান্য উপাদান যেগুলো ঘরের ভেতরে বৃদ্ধি পেতে সক্ষম। মোমবাতির ধোয়াঁয় আছে প্যারাফিন ওয়াক্স বার্নস, টুলেন, অ্যালডিহাইডস, কেটনস কার্সিনোজেন সহ আরো কিছু জীবাশ্ম জ্বালানির উপাদান। এসব থেকে ক্যান্সার হতে পারে।

৪. এয়ার ফ্রেশনার
বাড়িতে বা গাড়িতে ব্যবহৃত হয় এমন এয়ার ফ্রেশনারে আছে এমন সব রাসায়নিক যা আমাদের নাকের আর কোনো গন্ধ শনাক্ত করার সক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এসব রাসায়নিক ক্যান্সারেরও কারণ হতে পারে।

৫. গাড়ির ধোঁয়া
বিশেষত ডিজেল চালিত গাড়ির ধোঁয়া শ্বাসকষ্ট ফুসফুস ক্যান্সারের বড় কারণ। তবে সব ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানিতেই ক্যান্সার সৃষ্টিকারক উপাদান রয়েছে। গাড়ির ধোঁয়ায় আছে কার্বন মনোক্সাইড এবং বেনজেন এর মতো মারাত্মক ক্ষতিকারক গ্যাস।

বেনজেন অস্থি মজ্জায় ক্ষয় সাধন করতে পারে এবং বেশ কয়েক ধরনের রক্তের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।

৬. টুথপেস্ট
টুথপেস্টে আছে ফ্লুওরাইড। এ থেকে হতে পারে হাড়ের ক্যান্সার। টুথপেস্টে আছে ট্রাইক্লোসেন নামের আরেকটি ক্যান্সার সৃষ্টিকারক উপাদান। এ থেকে যকৃতের ক্যান্সার।

৭. কসমেটিকস
সানস্ক্রিনের মতো কসমেটিকসে আছে বেনজোফেনন-৩ এর মতো রাসায়নিক। সানস্ক্রিন ব্যবহারের পর এটি দেহে প্রবেশ করে পেশাবের সঙ্গে বেশ কয়েকদিন অবস্থান করতে পারে। যা থেকে পরে ক্যান্সার হতে পারে।

নানা ধরনের কসমেটিকস-এ আরো যেসব ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক আছে সেগুলো হলো ফরমালডিহাইড, বেনজেন, টুলেন এবং ১.৪-ডিওক্সেন।

৮. ডায়েট সোডা
এতে থাকা কৃত্রিম মিষ্টি বর্ধক উপাদান স্যাকারিন, অ্যাসপারটেম এবং সাইক্লামেট মূত্রাশয়ের ক্যান্সার এবং ব্রেন টিউমার সৃষ্টি করতে পারে।

৯. গরম চা
অতিরিক্ত গরম চা খেলে খাদ্যনালীর ক্যান্সার হতে পারে।

১০. ক্যানজাত খাবার
স্তন ক্যান্সার হয় ক্যানজাত খাবার থেকে। কারণ এসব ক্যানের মুখ বন্ধ করতে ব্যবহৃত হয় প্লাস্টিক কোটিং যাতে থাকে বিপজ্জনক রাসায়নিক। যা খাবারে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে ডিএনএ এবং হরমোনগত পরিবর্তন করে স্তন ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।

১১. মাইক্রোওয়েভ পপকর্ন
পপকর্ন ব্যাগের যে কোটিং থাকে তা থেকে পারফ্লুয়োরুকট্যানোইক এসিড উৎপাদিত হয়। যা থেকে প্রস্টেট এবং লিভার ক্যান্সার হতে পারে।

১২. সানস্ক্রিন
বেশিরভাগ সানস্ক্রিনে জিঙ্ক অক্সাইড থাকে। এই উপাদানটি দেহে এমন সব ফ্রি র‌্যাডিক্যালস উৎপাদন করে যারা ডিএনএন-তে ক্ষয় সাধন করে। যার ফলে ক্যান্সার হয়।

১৩. পোড়া খাবার
গ্রিলড খাবারের মতো অতিরিক্ত রান্না করা খাবার পাকস্থলি, মলাশয় এবং অগ্নাশয়ের ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। মুরগীর মাংস, মাছ এবং গরুর মাংসের মতো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার অতিরিক্ত তাপদিলে সেগুলোতে থাকা অ্যামাইনো এসিড হিটেরোসাইক্লিক অ্যামাইনস (এইচসিএ) নামের এসিড তৈরি করে যা থেকে ক্যান্সার হতে পারে।

১৪. জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি
এটি থেকে স্তন, সার্ভিক্স এবং লিভার ক্যান্সার হতে পারে। সন্তান জন্ম না দিলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। ৩০ বছর বয়সের আগেই সন্তান জন্মদিলে এবং সন্তানকে বুকের দুধ পান করালে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে আসে।

Related News