নিয়মিত করুন এই ৫টি আসন তাহলে নিশ্চিত বাঁচবেন ১০০ বছর পর্যন্ত!

Written by News Desk

Published on:

কোথাও একবার পড়েছিলাম, লক্ষ জন্ম পেরিয়ে নাকি আমরা মানব জীবন পয়েছি। তা যদি সত্যিই হয়, তাহলে কি সহজে এই সুন্দর জীবনে ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত? মনে তো হয় না! কিন্তু কী করারই বা আছে বলুন।

এখন যা পরিস্থিতি তাতে স্ট্রেস তো স্ত্রীর থেকেও বেশি আপন হয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা যেন ধীরে ধীরে শেষ করে দিচ্ছে আমাদের। তাই তো সময় থাকতে থাকতে প্রয়োজনীয় অস্ত্র-শস্ত্র জোগাড় করে নিলে যে ৬০-এর আগেই জোম রাজের দরবারে হাজিরা হতে হবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অস্ত্র-শস্ত্র বলতে কী বোঝাতে চাইছেন? আরে মশাই, শরীরকে অসুস্থতার মিসাইল থেকে বাঁচাতে বাঙ্কার বানাতে হবে তো!

আর এই বাঙ্কার বা সেফ হেবেন বানাতেযোগাসনের কোনও বিকল্প আছে বলে তো মনে হয় না। বিশেষত এই প্রবন্ধে যে সহজ পাঁচটি ব্যায়ামের প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলি করতে কম-বেশি ১ ঘন্টা সময়ও লাগবে না। কিন্তু সুফল পাবেন মাত্রা ছাড়া। তাই তো বিশ্ব যোগাসন দীবসে নিজেকে সুস্থ রাখতে একবার অন্তত এই লেখাটায় চোখ রাখুন। দেখবেন জীবনটাই বদলে যাবে। তাহলে আর অপেক্ষা কেন! মস্তিষ্ক এবং শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়াতে শুরু করা যাক যোগাসন…

১। ওম মন্ত্র: পদ্মাসন বা সুখাসনে বসে চোখ বন্ধ করে জ্ঞান মুদ্রা অনুসরণ করুন। যেমনটা উপরের ছবিতে দেখানো হয়েছে। এবার বুড়ো আঙুলটা তর্জনীতে ছুঁয়ে গভীর শ্বাস নিন। তারপর শুরু করুন ধীরে ধীরে ওম মন্ত্রের উচ্চারণ। খেয়াল রাখবেন এই সময় শিরদাঁড়া যেন একদম সোজা থাকে। ওম মন্ত্রর উপর মনযোগ নিবেশ করে ৫ মিনিট আসনটি করতেই হবে। তবে ধীরে ধীরে এই আসনটি ২০-২৫ মিনিট করার চেষ্টা করবেন। তাহলেই দেখবেন রোগের জ্বালা একেবারে কমে গেছে।

উপকারিতা: এই আসনটি নিয়মিত করলে রক্তচাপ একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। সেই সঙ্গে মানসিক চাপ, মাইগ্রেন, কনস্টিপেশন, বদ-হজম, এমনকী হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। শুধু তাই নয়, তোৎলামি দূর করতেও ওম মন্ত্রোচ্চারণের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

২। বজ্রাসন: হাঁটু মুড়ে পায়ের উপর বসে পরুন। খেয়াল রাখবেন এই আসনটি করার সময় পায়ের পাতা এক সঙ্গে লেগে থাকলেও গড়ালির মধ্যে কিন্তু ফাঁক থাকবে। আর শিরদাঁড়া থাকবে একেবারে সোজা এবং হাতটা থাকবে হাঁটুর উপরে। এমন পজিশনে কম করে ৫ মিনিট বসে থাকার পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে হবে।

উপকারিতা: বজ্রাসন মূলত নানাবিধ গ্যাস্ট্রো প্রবলেম, অর্থাৎ পেটের রোগের উপসমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি মানসিক চাপ এবং হার্ট ডিজজের আশঙ্কা কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, যারা প্রায়শই গোড়ালি এবং পায়ের যন্ত্রণায় ভুগে থাকেন, তারা নিয়মিত এই ব্যায়ামটি করলে দারুন উপকার পেতে পারেন।

৩। ধনুরাসন: পেটের উপর চাপ দিয়ে শুয়ে পরুন। এই সময় পা দুটি সোজা থাকবে এবং হাত থাকবে শরীরে ঠিক পাশে। এরপর ধীরে ধীরে পা দুটি পেছনের দিকে ভাঁজ করে পিঠের দিকে নিয়ে এসে হাত দিয়ে গোড়ালিটা ধরুন। এবার গভীর শ্বাস নিয়ে শরীরের সামনের দিকটা মাটিতে থেকে সামান্য উপরে তুলে নিন। এই সময় শুধু পেটটা মাটিতে লেগে থাকবে।

আসনটি করার সময় শরীরে অবয়ব অনেকটা অনুকের মত হয়ে যায় বলেই এই ব্যায়ামটিকে ধনুরাসন বলে ডাকা হয়ে থাকে। যেমনটা উপরের ছবিতে দেখানো হয়েছে। এমন পজিশনে কিছুটা সময় থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন কমে করে তিনবার আসনটি করতে হবে। তবেই উপকার মিলবে।

উপকার: হজমে সহায়ক এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দিয়ে বদহজমের সমস্যা দূর করতে এই আসনটির কোনও বিরল্প হয় না বললেই চলে। তবে এখানেই শেষ নয়, ডায়াবেটিস, পিঠে ব্যথা এবং ঘারে যন্ত্রণার মতো রোগকে একশো শতাংশ সারিয়ে তুলতেও এই আসনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৪। নাদি শোধন প্রাণায়ম: এক্ষেত্রে প্রথমে বাবু হয়ে বসে পরতে হবে। খেয়াল রাখবেন বসে থাকাকালীন শিরদাঁড়া যেন সোজা থাকে। এবার হাতটা সোজা অবস্থায় হাঁটুর উপরে রাখুন। তারপর চোখ বন্ধ করে ডান হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে নাকের ডান দিকের ছিদ্রটি বন্ধ করে বাম দিকের ছিদ্র দিয়ে শ্বাস নিতে থাকুন। কিছু সময় পরে একই ভাবে বাম নাকের ছিদ্র, বাম হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে বন্ধ করে ডান নাক দিয়ে শ্বাস নিন। এইভাবে কম করে ২০ রাউন্ড করতে হবে।

উপকার: এই আসনটি করার সময় সারা শরীরে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পতে শুরু করে। ফলে রক্তে টক্সিনের মাত্রা যেমন কমে যায়, তেমনি স্ট্রেস লেভেলও কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, ২১ শতকে যে যে মারণ রোগে যুব সমাজ বেশি মাত্রায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তার বেশিরবাগেরই পিছনে স্ট্রেস নামক কারণটি দায়ী থাকে। তাই একবার যদি স্ট্রসকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারেন তাহলেই কেল্লাফতে!

৫। শবাসন: পা দুটি যতটা সম্ভব ফাঁক করে শুয়ে পরুন। এই সময় চোখ বন্ধ থাকবে এবং শরীর এবং মনকে যতটা সম্ভব শান্ত রাখতে হবে। প্রয়োজন শবাসনে থাকাকালীন যে কোনও একটা কিছু মন দিয়ে ভাবার চেষ্টা করবেন। প্রসঙ্গত, স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে নিতে ৫ মিনিট আসনটি করলেই শরীর ও স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে শুরু করবে।

Related News