সাবধান! বর্তমানে আপেলের নামে আপনারা যা যা খাচ্ছেন, জানলে অবাক হবেন

ফল ভালবাসেন অথচ আপেল ভালবাসেন না, এমন মানুষ দুর্লভ। দোকান থেকে দিব্যি খুঁজে খুঁজে লাল টকটকে, তরতাজা, চকচকে আপেল কিনে আনছেন। কোনও কোনও সময়ে নামজাদা ফার্মের স্টিকারও লাগানো থাকছে ফলের গায়ে। সেই দেখে ক্রেতা হিসেবে আপনি আরও নিশ্চিন্ত হচ্ছেন। কিন্তু এই আপেলের সত্যতা কী? জানলে শিউরে উঠবেন।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। তাতে দেখা যাচ্ছে, এক ভারতীয় দিব্যি চকচকে একটি আপেল নিয়ে তার উপরে ত্যারছা ভাবে একটি ছুরি ঘসা শুরু করছেন। আর সঙ্গে সঙ্গে আপেলের খোসা থেকে খসে পড়ছে সাদা রঙের গুঁড়ো গুঁড়ো কিছু। ভিডিওটি যাঁরা তুলছেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, এই সাদা গুঁড়ো আসলে মোম। গাছ থেকে পাড়ার পরে এক ধরনের অসৎ ফল ব্যবসায়ী আপেলের গায়ে লাগিয়ে দিচ্ছেন মোম। আপেল যাতে চকচকে দেখায়, সেই জন্যই মোম লাগানো হয় আপেলে। এবং মোম সমেত আপেল খেলে ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ে।

আপেলে মোম লাগানোর এই দাবি কতটা সত্য? বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভিন্ন সময়ে আপেল চাষিদের সঙ্গে কথা বলে প্রশ্নটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে। সেই সমস্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, আপেলে সত্যিই মোম লাগানো হয়। মূলত আপেলকে তাজা রাখার জন্যই মোম লাগানো হয় আপেলে। এতে আপেলের ভিতরকার আর্দ্রতা বাইরে যেতে পারে না। এবং আপেলও তরতাজা থাকে।

ইউরোপ এবং আমেরিকায় সাধারণত আপেল এবং অন্যান্য ফলে ন্যাচারাল ওয়্যাক্স অর্থাৎ প্রাকৃতিক মোম লাগানো হয়। এই ধরনের মোম সাধারণত শরীরের কোনও ক্ষতি করে না বলেই জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে ফল চাষের ছবিটা এতটা নিরাপদ নয়। এখানে যে সস্তার মোম ব্যবহার করা হয় আপেল এবং অন্যান্য ফলমূলকে তরতাজা এবং চকচকে রাখার জন্য, সেগুলি অধিকাংশ সময়েই মোমবাতি তৈরির কাজে লাগে।

এমনকী অনেক সময়ে ভেসলিন জাতীয় জিনিসও লাগানো হয় আপেল এবং অন্যান্য ফলে। এতে ফল চাষের খরচা কমে এবং লাভের পরিমাণ বাড়ে। এই ধরনের উপাদান কিন্তু স্বাস্থ্যের পক্ষে মোটেই নিরাপদ নয়। ডাক্তাররা বলছেন, মোমবাতির মোম কিংবা ভেসলিন পেটে গেলে ক্যানসারের সম্ভাবনা তেমন না থাকলেও, গুরুতর পেটের অসুখ, পেট ব্যথা, বা বমির মতো সমস্যা দেখা দিতেই পারে।

রক্তচাপের সমস্যা কিংবা মাথা ঘোরার অসুবিধা ঘটাও অত্যন্ত স্বাভাবিক। যাঁরা বেশি পরিমাণে আপেল খান, তাঁদের মধ্যে এই ধরনের বিপদের সম্ভাবনা যে বেশি, তা বলাই বাহুল্য। যে তথ্য আরও আতঙ্কের তা এই যে, এই জাতীয় উপাদান শুধু আপেলেই ব্যবহার করা হয়, তা নয়। অন্যান্য ফলকেও চকচকে করে তোলার জন্য তাদের গায়ে লাগানো হয় মোম জাতীয় উপাদান।

এই মোমের বিষময়তা থেকে বাঁচার উপায় কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফলের খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া, এবং ফল খাওয়ার আগে হালকা গরম জলে আধ ঘন্টাখানেক ভিজিয়ে রাখা, মোমের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচার সহজ এবং মোটামুটি নিরাপদ উপায়।

News Desk

Recent Posts

প্রতিদিন আমলকি খেলে কী হয়?

স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে শুরু করে মুখের ব্রণের মতো সমস্যা দূর করে তাই একে উপকারিতার স্টোরহাউজ বলা হয়। বলছি আমলকির কথা।…

8 mins ago

সিলিং ফ্যান পরিষ্কারের ট্রিকস

সবার ঘরেই অন্তত একটি করে হলেও সিলিং ফ্যান আছে। এই গরমে যাদের ঘরে এসি বা এয়ার কন্ডিশন নেই, তাদের ভরসা…

12 hours ago

প্রতিদিন ১০ মিনিট হাসলে শরীরে যা ঘটে

বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই হাসতে ভুলে গেছেন। তবে হাসিখুশি থাকা যে শরীর ও মনের জন্য কতটা উপকারী, তা হয়তো অনেকেরই…

13 hours ago

গরমে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়লে দ্রুত যা করবেন

কোষ্ঠকাঠিন্য হলো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। এই তাপপ্রবাহে ডায়রিয়ার সমস্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই অনেকের আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বেড়েছে। যারা এরই…

16 hours ago

এই গরমে শিশুকে সুস্থ রাখতে কী কী খাওয়াবেন?

তীব্র গরমে বড়দের পাশাপাশি হাঁসফাঁস করছে ছোটরাও। এ সময় শিশুদের কীভাবে সুস্থ রাখবেন তাই এখন বড় প্রশ্ন, প্রত্যেক মা-বাবার জন্য়।…

16 hours ago

ত্বকে হিট র‌্যাশ উঠলে সারাতে কী করবেন?

তাপপ্রবাহে সবার মধ্যেই অস্বস্তি বেড়েছে। গরমে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি ত্বকেও দেখা দেয় ঘামাচি, ফুসকুড়ি, ট্যানসহ নানা সমস্যা। তার মধ্যে…

16 hours ago