আপনার শিশু অটিজমে আক্রান্ত কি না যেভাবে বুঝবেন বাবা-মা, দেখেনিন একঝলকে

Written by News Desk

Published on:

অটিজম মূলত অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার বা এএসডি। এটি খুবই জটিল এক অবস্থা। এর ফলে কথা বলতে, যোগাযোগ করতে বা আচরণের ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়।

অটিজমে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে শব্দ করা, অঙ্গভঙ্গি, মুখের অভিব্যক্তি ও স্পর্শের মাধ্যমে নিজের ভাব প্রকাশ করা কঠিন। আবার নতুন জিনিস শেখার ক্ষেত্রেও সমস্যা হয় তাদের।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অটিজমে আক্রান্তের দক্ষতা অসমভাবে বিকশিত হয়। যেমন- কথোপকথনে সমস্যা হলেও সঙ্গীত, গণিত, স্মৃতি বা কোনো নির্দিষ্ট শিল্পে রোগী অস্বাভাবিক রকম ভালো হতে পারে।

অটিজম মানসিক বিকাশজনিত একটি সমস্যা, যা শিশুর জন্মের প্রথম তিন বছরের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর ২ এপ্রিল অটিজম সচেতনতা দিবস পালন করা হয়।

এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘এমন বিশ্ব গড়ি, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তির প্রতিভা বিকশিত করি’।

অটিজমের উপসর্গ কী কী?

এ বিষয় ভারতের কলকাতা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শিশুর বিকামেল একাধিক স্তর থাকে। দৈহিক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বৃদ্ধিও এমনই একটি স্তর।

এ সময়ে শিশু মাকে দেখে হাসে, আবার কোনো কিছুর দিকে আকার ইঙ্গিতে নির্দেশ করে কিংবা শিশুর শব্দস্ফুরণ হয়। অর্থাৎ সমাজে চলতে শেখার শুরু হয়। এই প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারে না টিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারে আক্রান্তরা। এক্ষেত্রে যে যে লক্ষণ দেখা দেয় তা হলো-

>> কারও সঙ্গে মেলামেশা না করা
>> অনেক খেলনার মাঝেও কেবল একটি খেলনা নিয়ে খেলা
>> নতুন কিছুতে আগ্রহ না দেখানো
>> নাম ধরে ডাকলে সারা না দেওয়া
>> সব সময় উদাসহীন থাকা ইত্যাদি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সদ্যজাত অবস্থা থেকেই এই সমস্যা শুরু হতে পারে। তবে মূলত স্কুলে যাওয়ার বয়সের আগেই মূল উপসর্গগুলো পরীক্ষা করানো উচিত। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস ১৬-২৪ মাস বয়সী শিশুদের বিশেষভাবে পরীক্ষা করার পরামর্শ দেয়।

এই পরীক্ষা ঘরেই বাবা-মা করতে পারেন। যদি বয়স অনুযায়ী শিশুর ব্যবহারে কোনো অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করেন বাবা-মা তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

অটিজমের ঝুঁকি কাদের বেশি?

পরিসংখ্যানগতভাবে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে অটিজম চারগুণ বেশি দেখা যায়। তবে যে কোনো জাতিগোষ্ঠী বা সামাজিক পটভূমির মানুষের মধ্যে এই রোগ দেখা দিতে পারে। জীবনধারার সঙ্গে এর বিশেষ কোনো যোগ নেই।

তবে পরিবারে এই রোগের ইতিহাস থাকলে এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি বেশি বয়সে সন্তানধারণ করলে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অ্যালকোহল বা অ্যান্টি-সিজার জাতীয় ওষুধ খেলে অটিস্টিক শিশু জন্মানোর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

কিছু গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ফিনাইলকিটোনুরিয়া ও রুবেলা ইত্যাদির রোগ অটিজমের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

অন্যদিকে অটিজমের এখনো বিশেষ কোনো প্রতিকার নেই। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে অটিজমে আক্রান্ত শিশুর বিকাশ সহজতর হয়। তাই উপসর্গ দেখা গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।rs

Related News