সুস্থ থাকতে আদা খাওয়া উচিত নয় যাদের, আজই জেনেনিন বিস্তারিত

Written by News Desk

Published on:

আদা পুষ্টি সমৃদ্ধ এবং বায়োঅ্যাকটিভ যৌগযুক্ত উদ্ভিদ যার মানসিক এবং দৈহিক উপকারিতা প্রচুর। প্রাচীন চীনে হাজার হাজার বছর আগে থেকেই ঔষধি কাজে এটি ব্যবহার করা হত। আদার মূল রান্না ও ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে ইনফ্লামেশন এমনকি হৃদরোগের সমস্যা সমাধানেও ব্যবহার হয় আদা। কিন্তু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এই অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর উপাদানটি হতে পারে অনেক বেশি মারাত্মক। আপনি যদি এই দলে পড়েন তাহলে আপনার উচিত দ্রুত আদা গ্রহণ করা বন্ধ করে দেয়া। চলুন তাহলে জেনে নিই কাদের জন্য আদা গ্রহণ করা বিপজ্জনক।

১. কম ওজন যাদের: হাইপোগ্লাইসেমিয়া, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার রোগীরা ওজন কমানোর জন্য আদা গ্রহণ করেন। একটি গবেষণায় জানা গেছে যে, আদার রস শরীরের ওজন ও লিপিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

আদা পাকস্থলীর pH এর মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং ডাইজেস্টিভ এনজাইমকে উদ্দীপিত করে উচ্চমাত্রার ফাইবার এর জন্য। যখন আমাদের শরীর অপ্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান আমাদের শরীর থেকে কার্যকরীভাবে বের করে দিতে পারে তখন ওজন কমে।

যাদের বডি মাস ইনডেক্স (BMI) কম থাকে তাদের শরীরে পুষ্টির পরিমাণ কম থাকে এবং তাদের ওজন কম হয়। তাদের শরীর থেকে চর্বি বের হয়ে যাওয়া তাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক পরিণতি সৃষ্টি করতে পারে যেমন- পেশীর ভর কমে যাওয়া, চুল কমে যাওয়া, অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়া এবং ভিটামিনের ঘাটতি হওয়া। যদি আপনার চিকিৎসক বলেন যে আপনার ওজন বৃদ্ধি করা প্রয়োজন তাহলে আপনার ডায়েট থেকে আদা একবারে বাদ দিয়ে দিন অথবা আদা গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে দিন।

২. গর্ভবতী নারী: আদা শক্তিশালী উদ্দিপকে পরিপূর্ণ যা আমাদের পেশীর স্বাস্থ্য এবং পরিপাকের জন্য আদর্শ একটি উপাদান। কিন্তু গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি অনিয়মিত সংকোচন ঘটাতে পারে, যার কারণে অপরিণত প্রসব হতে পারে। গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে আদা বাদ দেয়া অত্যাবশ্যকীয় বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষ মাসে। আদার মূল মর্নিং সিকনেস প্রতিরোধ করে, যা গর্ভাবস্থার প্রথম দিকের একটি সাধারণ লক্ষণ। তাই সেই সময়ে আদা গ্রহণ করা যেতে পারে।

চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন এবং আয়রনের শোষণে বাঁধার সৃষ্টি করে আদা। যদি আপনার গর্ভধারণের ইচ্ছা থাকে তাহলে আদার সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করার আগে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

৩. রক্ত সম্পর্কিত সমস্যা আছে যাদের: হিমোফিলিয়া একটি বিরল জেনেটিক সমস্যা যেখানে রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি তীব্র রক্তপাতের সমস্যায় ভুগতে পারেন।

আদা রক্ত সঞ্চালনকে উদ্দীপিত করে। যা অনেক মানুষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যারা পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা বা রাইনডস ডিজিজে ভুগছেন তাদের জন্য।

আদা শুধু জীবন রক্ষাকারী ঔষধের প্রভাবই নষ্ট করে দেয় না বরং রক্ত সঞ্চালন যদি অনেক বেশি উদ্দীপিত হয় তাহলে হিমোফিলিয়ার অবস্থা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে এবং কখনো কখনো মারাত্মক রক্তপাত হতে পারে।

৪. যারা নির্দিষ্ট ঔষধ গ্রহণ করেন: যদি আপনি উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে ভুগে থাকেন এবং এর জন্য ঔষধ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে আদা গ্রহণ করলে এই ঔষধ আপনার শরীরে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার কথা তার ধরণকে পাল্টে দিতে পারে। বিশেষ করে বেটা ব্লকারস, অ্যান্টিকোঅ্যাগুলেন্টস এবং ইনসুলিন এর সাথে আদা গ্রহণ করা হতে পারে খুবই মারাত্মক।

আদার ব্যবহার মারাত্মক হতে পারে কারণ আদা রক্তচাপ কমাতে পারে এবং রক্তকে পাতলা হতে উদ্দীপিত করে। যা চিকিৎসকের নির্দেশিত ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে এবং অপ্রীতিকর ফল নিয়ে আসতে পারে।

খালি পেটে আদা কি ক্ষতিকর?

সাধারণত পেটের পীড়ায় আদা অনেক উপকারী। কিন্তু এর অতিরিক্ত ব্যবহার হিতে বিপরীত হতে পারে। এছাড়া সাধারণ ঠান্ডা জ্বরের মোকাবিলায় আদা মহৌষধের মতো উপকারী। ঠান্ডার জন্য দায়ী রাইনোভাইরাসকে এটা মেরে দেয়। এছাড়া পেটে গোলমাল বা ব্যথার উপশমেও কাজে দেয় আদা। তবে এটা খালি পেটে ক্ষতিকর হতে পারে।

আমেরিকার বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের স্বাস্থ পাতার পরামর্শক ড. ম্যান্নি আদা নিয়ে বলেন, ‘আদা আমাদের পাকস্থলীতে পিত্ত নিঃসরণ বাড়ায় যা হজমে সহায়তা করে। কিন্তু খালি পেটে আদা খেলে এটা গ্যাস্ট্রিক বা হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।’

তাই খালি পেটে আদা খাওয়া থেকে সাবধান! তবে খাওয়া দাওয়ার পর বা হালকা খাবারের পর আদার জুস বা আদা চা শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

বেশি বেশি আদা খাওয়ার বিস্ময়কর উপকারিতাগুলো:

আপনার ভাঁড়ারঘর এবং ফ্রিজটি একনজরে পরখ করুন। সেখানে কি আপনি কোনো গুড়ো করা বা কাঁচা আদা দেখতে পাচ্ছেন? যদি না দেখে থাকেন তাহলে এখনই সময় মুদি দোকানে যাওয়ার! কেননা এই ওষুধি বিস্ময় চীনা ঔষধ শাস্ত্র এবং ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে রোগ নিরাময়ী মসলা হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে বহুদিন। আধুনিক বিজ্ঞানও এবার তার পক্ষে দাঁড়িয়েছে।

আর শুধু মোটরযানে ভ্রমণের সময় সৃষ্ট অসুস্থতার চিকিৎসায়ই নয় বরং আরো নানা ধরনের অসুস্থতায় আদা বেশ কার্যকরী। মাথা ব্যাথা, বমি এবং নারীদের ঋতুস্রাবকালীন পেটের ব্যাথাসহ নানা রোগের উপশম করে আদা।

আদার সাতটি বিস্ময়কর উপকার হলো:

আদা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: আদাতে রয়েছে বেশিরভাগ ঠাণ্ডা-সর্দিজনিত রোগের পেছনে দায়ী রাইনো ভাইরাস দমনের শক্তিশালি রাসায়নিক উপাদান। এছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এটি একটি প্রাকৃতিক ব্যাথা-নাশক এবং জর প্রতিরোধী হিসেবেও কাজ করে।

আর্থ্রাইটিসের ব্যাথা দূর করে: আদা শরীরের জোড়াগুলোতে সৃষ্ট ব্যাথা এবং আর্থ্রাইটিসে আক্রান্তদের প্রদাহ দূর করে। কারণ আদাতে রয়েছে জিঞ্জারোল নামের একটি উপাদান। যা প্রদাহরোধী উপাদান। এটি প্রদাহজনক সাইটোকিন গঠন প্রক্রিয়াকে দমন করে।

আর্থ্রাইটিস অ্যান্ড রিউম্যাটোলজি-তে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, হাঁটুর অস্ট্রিওআর্থ্রাইটিসের লক্ষণগুলো ব্যাপকহারে কমিয়ে আনে আদার নির্যাস।

মাংসেপেশির ব্যাথা লাঘব করে: জিমে যাওয়ার আগে আদা খান। গবেষণায় দেখা গেছে, আদা একটি প্রাকৃতিক ব্যাথা উপশমকারী এবং প্রদাহরোধী উপাদান হিসেবে কাজ করে। ভারী ব্যায়াম করার পর মাংসপেশিতে যে ব্যাথা সৃষ্টি হয় তা দূর করে আদা।

জার্নাল অফ পেইনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ২ গ্রাম আদা খান তারা ব্যায়াম করার ২৪ ঘন্টা পর মাংসপেশিতে অনেক কম ব্যাথা অনুভব করেন। দৌড়বিদ সহ অন্যান্য ক্রীড়াবিদরাও আদা থেকে উপকৃত হতে পারেন। প্রদাহ এবং মাংসপেশির ব্যাথায় ট্যাবলেটের চেয়েও বেশি কার্যকর আদা।

পেটফাঁপা দূর করে: আপনার জানেন আদা বমিরোধী। কিন্তু এটাই আদার একমাত্র পাকস্থলীজাত উপকারিতা নয়। আদা আপনার হজম শক্তি বাড়াবে এবং আপনাকে কষ্টকর এবং অস্বস্তিদায়ক পেট ফাঁপা থেকে রক্ষা করবে। বায়ুনাশক ঔষধি উপাদান হিসেবে আদা পাচক রস এবং হজম প্রক্রিয়ার উদ্দীপনা বাড়ায়। পাশাপাশি এতে রয়েছে জিনজিয়াবিন এনজাইম যা প্রোটিন ভাঙ্গতে সহায়ক।

নারীদের ঋতুস্রাবকালীন ব্যাথা লাঘব করে: আদার সবচেয়ে বিস্ময়কর উপকারিতা হলো এটি নারীদের ঋতুস্রাবকালীন ব্যাথা লাঘব করে। জার্নাল অফ অল্টারনেটিভ অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঋতুস্রাবকালীন ব্যাথা উপশমের ক্ষেত্রে আদা ইবুপ্রোফেন ওষুধের মতোই কার্যকর।

মাইগ্রেনের ব্যাথাও দূর করে: মাইগ্রেনের ব্যাথা সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাথা। আদার রয়েছে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন সংশ্লেষণ দমনের ক্ষমতা। যা রক্তের শিরা-উপশিরাগুলোকে স্ফীত হওয়া এবং চাপ সৃষ্টি করা থেকে বিরত রাখে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইগ্রেনের ব্যাথার চিকিৎসায় আদা ওষুধের মতোই কার্যকর। আর কি চাই? এছাড়া আদা বমির উদ্রেককারী পাকস্থলির মোচড়ানোও দূর করে। যা থেকে অনেক সময় মাইগ্রেনের ব্যথার উৎপত্তি হয়।

স্মৃতি শক্তির সংরক্ষণ করে: আদা আপনার মস্তিষ্ককে আলঝেইমার থেকে রক্ষা করবে। এই স্নায়ুক্ষয়ী রোগটি সৃষ্টি হয় মস্তিষ্কে অপ্রয়োজনীয় অ্যামিলয়েড প্রোটিন জমা হওয়ার মাধ্যমে। পরীক্ষাগারের এক গবেষণায় দেখা গেছে, আদা এই স্নায়ুক্ষয়ী প্রোটিন থেকে আপনার মস্তিষ্কের কোষগুলোকে প্রতিরক্ষা দিতে সক্ষম। এবং এভাবে আলঝেইমার রোগও প্রতিরোধ করতে সক্ষম। তবে মানুষের ওপর এ ব্যাপারে এখনো কোনো গবেষণা বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়নি। তবে আদাকে মস্তিষ্কের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকাভুক্ত করাটাই শ্রেয়।

কাঁচা আদার উপকারিতা ত্বক আর চুলের জন্য: আদা যে শুধু একটা মশলার উপাদান নয়, তা তো আপনারা সবাই জানেন। আদার ভেষজ গুণ অসীম। এমনিতে তো আদা চা আমরা সবাই খেয়ে থাকি সর্দি-কাশি হলে বা মাথা ধরলে। উপকারও পাই। কিন্তু জানেন কি, আদা আমাদের ভেতর থেকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি খুব সুন্দর ভাবেই ত্বক আর চুলকেও ভালো রাখতে পারে। আজ আসুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে কাঁচা আদা খেলে আমরা ত্বক আর চুলকে সুন্দর রাখতে পারি।

ত্বকের যত্নে কাঁচা আদা:
আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে কাঁচা আদার ব্যবহার করেই দেখতে পারেন। এতে কিন্তু আপনি খুবই উপকার পাবেন।

১. বয়সের ছাপ হতে দেয় না: এখন আমাদের কাজের চাপ, চিন্তা, ব্যস্ততা এইসবের জন্য অল্পবয়সেই মুখে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে থাকে। অনেক কিছু মেখে হয়তো বাইরে থেকে সাময়িক ফল পেতে পারেন, কিন্তু স্থায়ী সমাধান কিছু হবে না। এক্ষেত্রে আপনি কাঁচা আদা ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-এজিং উপাদান আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান টক্সিন বের করে দেয়। মুখে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বাড়ায়।

কীভাবে খাবেন: রোজ সকালে খানিক কাঁচা আদা মুখে নিয়ে চিবিয়ে নিন। প্রথম দিকে সমস্যা হবে। কিন্তু অভ্যেস করলে উপকার পাবেনই।

২. শীতে ত্বকের কুঁচকে যাওয়া আটকায়: শীতকালে আমাদের ত্বক সবারই কম-বেশী কুঁচকে যায়। রক্ত শীতে খানিক ঘন হয়ে যায়। তাই শরীরের সব জায়গায় সমান ভাবে রক্ত পৌঁছতে পারে না। মুখেও পৌঁছতে পারে না। তাই চামড়া কুঁচকিয়ে যায়। আদা খেলে কিন্তু এই সমস্যার থেকে মুক্তি পাওয়া যায় আর স্কিন থাকে টানটান।

কীভাবে খাবেন: গরম জলে ৪ টেবিল চামচ মতো আদা কুচি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এবার এই জল ঠান্ডা করে খেতে থাকুন। দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি উপকার পাবেন।

৩. শ্বেতী রোগ কমাতে: শ্বেতী রোগ নিয়ে আমাদের অনেক বাছ-বিচার আছে। এই রোগ হলে দেখতে তো খারাপ লাগেই, তা অনেকসময় সামাজিক অসম্মানের কারণও হয়ে থাকে। কিন্তু জানেন কি কাঁচা আদা খুব সুন্দরভাবে এই শ্বেতীকে কমিয়ে আনতে পারে।

কীভাবে খাবেন: কাঁচা আদা মুখে ফেলে রাখুন শুধু। ব্যাস আর কিছুই করতে হবে না। এছাড়া আপনারা আদা বাটাও মাখিয়ে রাখতে পারেন ওই শ্বেতীর জায়গায়। কয়েক সপ্তাহেই উপকার পাবেন।

৪. পোড়া দাগ দূর করে: আপনার ত্বকে যে কোনো দাগই থাকুক না কেন, তা যদি রোদে পোড়া কালো দাগই হয়ে থাকে, তার থেকেও আদা আপনাকে মুক্তি দেবে।

কীভাবে খাবেন: কাঁচা আদার রস করে নিন আগে। তারপর তা রোজ খেতে থাকুন খালি পেটে। এছাড়া কাঁচা আদাও আপনি পোড়া জায়গায় ঘষতে পারেন। ৪ থেকে ১২ সপ্তাহ করে দেখুন।

৫. ব্রণ দূর করতে: ব্রণ মূলত হয় ব্যাকটেরিয়া থেকে। আদায় থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান তাই ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। ব্রণর জ্বালাও কমাতে সাহায্য করে। নিয়ম করে তাই আদার ব্যবহার করুন।

কীভাবে খাবেন: আদার রস করে নিয়ে খালি পেটে খেতে থাকুন। আর সঙ্গে আদার একটা টুকরো হাল্কা করে ঘষতে থাকুন ব্রণর জায়গায়। কয়েক সপ্তাহেই ফল পাবেন।

চুলের জন্য:
ত্বকের জন্য যে আদা খুবই ভালো সেটা তো জানলেনই। এবার চুলের জন্যও যে কাঁচা আদা খুবই জরুরী তা দেখে নিন। তবে এক্ষেত্রে লাগাতে পারলে বেশী উপকার পাওয়া যাবে।

১. চুলের গ্রোথ বাড়ায়: আদা স্ক্যাল্পে রক্তের সঞ্চালন বাড়ায়। হেয়ার ফলিকল মজবুত করে। তাই চুলের বৃদ্ধি খুব ভালো হয়।

উপকরণ: ৪ চামচ কাঁচা আদা বাটা, ৭ ফোঁটা জোজোবা অয়েল।

পদ্ধতি: দুটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে চুলে রাখুন ৩০ মিনিট। গোটা স্ক্যাল্পে লাগিয়ে রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন করুন।

২. ড্রাই হেয়ারের জন্য খুবই ভালো: অনেকেরই চুল খুব ড্রাই হয়। শীতকালে তো আরও ড্রাই হয়ে যায়। এর থেকেও রক্ষা করবে আদা। আদায় থাকা ভিটামিন, জিঙ্ক, ফসফরাস চুলের ড্রাই ভাব কমায়।

উপকরণ: আদা বাটা ৫ চামচ, টক দই।

পদ্ধতি: দু’টি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে চুলে সম্পূর্ণ মেখে নিন। তারপর ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন গরম জল দিয়ে আগে। তারপর নর্মাল জল দিন। এটাও সপ্তাহে দু’দিন করতে পারেন।

৩. চুল পড়া কমায়: সাধারণ সমস্যা চুল পড়া। এর থেকে আদার রস সুন্দরভাবে মুক্তি দেয়।

উপকরণ: আদার রস পরিমাণ মতো।

পদ্ধতি: আদার রস তুলো দিয়ে স্ক্যাল্পে লাগিয়ে রাখুন মিনিট ১৫ মতো। তারপর ধুয়ে ফেলুন। রোজ রাতে করুন। ২ সপ্তাহেই উপকার পাবেন।

৪. আগা ফাটা বন্ধ করে: চুলের আগা ফাটাও একটা সাধারণ সমস্যা। অতিরিক্ত গরমে আর দূষণে আমাদের চুলের আগা ফেটে যায়। আদার ব্যবহার এখানেও কামাল দেখায়।

উপকরণ: আদার রস পরিমাণ মতো।

পদ্ধতি: এই আদার রস আপনি লাগিয়ে নিন গোটা চুলে। তারপর ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটাও সপ্তাহে দু থেকে তিনদিন করুন।

৫. খুশকি কমাতে সাহায্য করে: খুশকি নিয়ে অনেক আর্টিকেলই তো পড়েছেন আমাদেরই সাইটে। আজ জেনে নিন আদা কীভাবে খুশকি দূর করতে পারে।

উপকরণ: ৪ চামচ আদার রস, ২ চামচ পাতিলেবুর রস।

পদ্ধতি: এই দুটো উপকরণ মিশিয়ে চুলে থুপে থুপে লাগান তুলো দিয়ে। রাখুন ৩০ মিনিট মতো। তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

তাহলে আজ থেকেই আদা জল খেয়ে আদা ত্বক আর চুলের যত্নে ব্যবহার শুরু করুন। দেখবেন হতাশ হবেন না।rs

Related News