আপনি কি আবেগে ভেসে বার বার ভুল করছেন? তাহলে যেভাবে নিজেকে শুধরাবেন, দেখেনিন

যা মনে আসে তাই করে বসেন। রাগ হলে মেরে আধমরা করে ফেলেন। দুমদাম কাজ করে বসলেন। যা দেখেন তাই কেনেন। খরচের সীমা নেই। প্রেমে পাগল হয়ে সব ছেড়েছুড়ে তাঁর জন্য অসাধ্যসাধন করেন।

এসবে এক সময় নিজেই বলেন আর নয়। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। এমন নাছোড় আগেবের বশে পড়ে ক্ষতি যা হয়েছে তা বলার নয়৷ তাই মুক্তি চাইছেন এমন অতিরিক্ত আবেগের হাত থেকে৷ কিন্তু জানেন কীভাবে মুক্তি মেলে এ থেকে?

যে কোনও কাজের মূলে থাকে আবেগ আর যুক্তি৷ কখনও যুক্তি আগে আসে কখনও আবেগ৷ অধিকাংশ মানুষ কম–বেশি দু’টির মিশেলেই কাজ করেন৷ হঠকারীদের প্রথমে আবেগ আসে, প্রবলভাবে৷ আর আসামাত্র তাঁরা কাজটা করে ফেলেন৷ এরপর যখন যুক্তি আসে, শুরু হয় আফসোস৷ ভেবে দেখুন, আপনারও কি এরকম হয়?

এমন যদি আপনারও হয়, তবে হতাশ হবেন না, আবেগে করা কাজ যে সবসময় খারাপ হয়, তা নয়৷ বহু ভাল কাজই আবেগের বশে করা হয়ে থাকে৷ কিন্তু মুশকিল হল ভাল আবেগের সঙ্গে অনেক সময় খারাপ আবেগও আসে৷ তাকে সামলাতে না পারলে কিছু ভুল হয়৷ ভুল আবেগ সামলাতে না পারার একটা বড় কারণ স্পর্শকাতরতা৷ আপনি হয়তো অল্পেই আঘাত পান৷ এবং ভাবনা–চিন্তা কম করেন বলে আঘাত পাওয়ামাত্র প্রত্যাঘাত করে ফেলেন৷

আবেগকে যুক্তির লাগাম পরাতে না পারলে মুক্তি নেই৷ রাতারাতি পারবেন না৷ কিন্তু একটু ভাবনা–চিন্তা করে কয়েকটি পদক্ষেপ নিলে দেখবেন কাজটা যত কঠিন ভেবেছিলেন, তত কঠিন নয়৷

১. এ কাজের প্রথম ধাপ হল কিছু করে ফেলার আগে একটু সময় নেওয়া৷ কোনও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু করে ফেলার তীব্র আবেগ জাগামাত্র থেমে যান৷ ঠিক করুন, এই মুহূর্তে কিছু বলবেন না বা করবেন না৷ ঘটনার মধ্যে থাকুন৷ দেখুন কী ঘটছে, কে কী বলছেন৷ কিন্তু নিজের মুখে কুলুপ লাগিয়ে দিন৷ হাবভাব ও মুখের চেহারাও যথাসম্ভব স্বাভাবিক রাখুন৷

২. ভাল করে ভেবে দেখুন, যে কোনও আবেগই কিন্তু সময়ের সঙ্গে কেটে যায়৷ নতুন আবেগ পুরনোর জায়গা নেয়৷ যা কাটে না তা হল ঝোঁকের মাথায় বলে ফেলা কথা বা ভুল কাজ৷ নিজেকে একটু সময় দিলে এই সব ভুলের হাত থেকে বাঁচতে পারবেন৷

৩. ধৈর্য কম হলে এ রকম পরিস্থিতিতে কিছু না করে চুপ করে বসে থাকা খুব কঠিন৷ কাজেই কী করে ধৈর্য বাড়াবেন তা নিয়েও ভাবনা–চিন্তা করুন৷ ধৈর্যশীল মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা করলে কিছুটা কাজ হতে পারে৷

৪. মনে রাখবেন, রাগ–দুঃখ–অভিমানের ধাক্কা সহ্য করা এক ধরনের মানসিক ব্যায়াম৷ প্রথমে কষ্ট হয়৷ কিন্তু চালিয়ে গেলে আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যায়৷ কাজেই পরিস্থিতি যত বিরূপই হোক, আপনি চুপ করে থাকুন, কিংবা দু’–চার কথায় বিষয়টা বুঝে নিন৷ কিন্তু অস্থিরতা কাটার আগে পর্যন্ত মতামত দেবেন না৷ সিদ্ধান্ত নেবেন না৷

৫. অস্থিরতা অসহ্য হলে মন ঘোরাতে হবে৷ ভিজ্যুয়াল ইমেজারি এবং সুইচ অফ–সুইচ অন অভ্যাস করুন৷ অর্থাৎ অশান্তির বিষয়টা নিয়ে ভাবা বন্ধ করে অন্য কোনও বিষয় নিয়ে ভাবা শুরু করুন৷

৬. মন ঘোরাতে ব্যায়াম করা বা আড্ডা মারা চলতে পারে৷ বই পড়তেও পারেন৷ গান শুনতে পারেন৷ অর্থাৎ মন ঘোরাতে যা ইচ্ছে তাই করুন৷ শুধু সেই মুহূর্তে রিঅ্যাক্ট করবেন না৷

News Desk

Recent Posts

অতিরিক্ত ঘাম কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরম আবহাওয়ায় ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তবে শীতেও অতিরিক্ত ঘাম কিন্তু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবেও…

7 hours ago

নখ দেখেই বুঝে নিন শরীরে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে কি না

শরীরে কোনো রোগ বাসা বেঁধেছে কি না, তার ইঙ্গিত আগে থেকেই দেয় শরীর। তবে অনেকেই তা টের পান না, আবার…

9 hours ago

কাচের বোতলে কেন পানি খাবেন?

পানির অপর নাম জীবন। দৈনিক পর্যাপ্ত পানি না পান করলে শরীরে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। যা শারীরিক বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।…

9 hours ago

সকালে নাস্তা না করলে যে রোগের ঝুঁকি বাড়ে

সকালের নাস্তা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর উপরই সারাদিন শরীরের শক্তি নির্ভর করে। সকালে পুষ্টিকর খাবারে পেট ভরালে সারাদিন অ্যানার্জি…

9 hours ago

কুমড়া থেকে ছোলা, ওজন কমাতে আরও যা খাবেন

ওজন কমাতে চাইলে পুষ্টিকর খাবারের দিকে নজর রাখতে হবে। এর পাশাপাশি শরীরচর্চাও জরুরি। তবে ওজন কমাতে খাবার ৭০ শতাংশ আর…

10 hours ago

তীব্র গরমেও শরীর বরফ ঠান্ডা রাখবে যে পানীয়

গরমে হাঁসফাঁস করছে সবাই। এমন তাপপ্রবাহের মধ্যে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে অনেকেই নানা ধরনের পানীয়ে চুমুক দিচ্ছে। তবে কোমল পানীয় থেকে…

10 hours ago