স্বাস্থ্য অটুট রাখতে চান! তাহলে নিয়মিত খান এই ফল ও বাদাম, বলছে বিশেষজ্ঞরা

ফল ও বাদাম দুটোই স্বাস্থ্যকর খাবার। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে এই দুটি খাদ্য উপাদানই রাখা দরকার। ফল ও বাদামের নিজস্ব পুষ্টিগুণ আছে। ফলে ভিটামিন ও ফাইবার ভরপুর থাকে। অপরদিকে বাদামে থাকে অতি প্রয়োজনীয় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এছাড়া থাকে প্রোটিন ও অন্যান্য মিনারেলস। কিন্তু ওজন কমানোর জন্য ফল বা বাদামের মধ্যে একটিকে যদি প্রথমে বেছে নিতে বলা হয় তাহলে কী করবেন?

বাদামের পুষ্টিগুণ নিয়ে গবেষণায় বলা হয়েছে, এতে এমন একটি উপাদান থাকে যা ছোট ছোট খিদে মেটায়। বিকালের স্ন্যাক্সে একমুঠো বাদাম খেলে পেট ভরে যায়। ফলে দু-তিন ঘণ্টা আর খিদে পায় না। তাই অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি ঝোঁক কমে যায়। আবার ফলের পক্ষ নিয়ে অনেকে বলেন, খিদে পেলে একটা কলা ও কয়েক টুকরো পেঁপে খেয়ে নিন। এতেও কাজ দেয় অনেক। ইন্টারনেট ঘাঁটলেও এমন অজস্র তথ্য মেলে। তাই আরও বিভ্রান্তিতে পড়ছে মানুষ। তাহলে জেনে নেওয়া যাক ফল না বাদাম- ওজন কমাতে প্রয়োজন কোনটা?

ফল: এতে থাকে ফাইবার ও প্রাকৃতিক চিনি। ফল খেলে সেই চিনি ধীরে ধীরে রক্তে মেশে। সেই কারণে রক্তে শর্করার হার বাড়তে দেয় না।

বাদাম: পলি ও মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটে সমৃদ্ধ। ঠিকঠাক ওজন ধরে রাখতে গেলে বাদামের বিকল্প নেই। একমুঠো বাদাম খারাপ কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। যা হার্টের স্বাস্থ্যের পক্ষে মঙ্গলদায়ক।

ফল: অনেকে ফলের থেকে ফলের রস খুব পছন্দ করেন। কিন্তু গোটা ফল থেকে যে পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় ফলের রস থেকে তা অনেকটাই কম মেলে। যেমন, এক গ্লাস কমলালেবুর রসে ২১ গ্রাম সুগার থাকে। সেখান থেকে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ওজনও বাড়ে। আবার ফলের রস থেকে ফাইবারও খুব কম পাওয়া যায়। তাই পুষ্টিবিশারদরা সবসময় গোটা ফল খেতে বলেন।

বাদাম: ১০০ গ্রাম বাদাম থেকে ৫৮০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। অথচ এই পরিমাণ জাঙ্কফুড থেকে দ্বিগুণ ক্যালোরি শরীরে ঢোকে। ফ্যাট থাকে চারগুণের বেশি। তাই বিকালের স্ন্যাক্সে বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিশারদরা।

ফল: তরমুজ, ফুটি, শশা বা জামরুল জাতীয় ফলে জলের পরিমাণ থাকে বেশি। তাই এই সব ফল খেলে শরীর থাকে হাইড্রেট। এছাড়া অন্যান্য ফলে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। ফলে যে ফ্রুকটোস থাকে তা কিন্তু অনেকক্ষণ খিদে মেটায় না।

বাদাম: কাজু, আখরোট বা আমন্ড খেলে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়ে কিন্তু এই সব বাদাম ওজন ঝরানোর পক্ষে আদর্শ। পুষ্টিবিজ্ঞান বলছে, বাদাম খেলে জাঙ্কফুড খাবারের প্রতি ঝোঁক কমে। ফলে এই সব অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে শরীরে অতিরিক্তি ক্যালোরি ঢুকতে পারে না।

তাহলে উপসংহারে কী দাঁড়াল? প্রতিবেদনের শুরুতে যা বলা হয়েছিল সবশেষে সেটাই মিলে গেল। এটা অনস্বীকার্য ফল ও বাদামের নিজস্ব পুষ্টিগুণ আছে। তাদের কার্যকারিতা আলাদা। ফলে যদি প্রাকৃতিক চিনি থাকে তো বাদামে আছে হেলদি ফ্যাট। ফল রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে এবং পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। ওদিকে বাদাম শরীরের পেশি ও হার্টের খেয়াল রাখে। মনে রাখবেন, ফল হোক বা বাদাম কেউই চটজলদি ওজন কমাতে পারে না। তাই বাছবিচারে না গিয়ে দুটোই রাখুন প্রতিদিনের ডায়েটে।

News Desk

Recent Posts

ক্যানসার হবে কি না জানতে পারবেন ৭ বছর আগেই

ক্যানসারের নাম শুনলেই কমবেশি সবাই আঁতকে ওঠেন। কঠিন এই ব্যাধি থেকে বাঁচতে সচেতনতা জরুরি। ক্যানসার রোগের আগাম খবর পেতে সারা…

7 hours ago

নেবুলাইজার কেন ব্যবহার করা হয়?

হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও অন্যান্য শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। রোগী যখন ইনহেলারের…

1 day ago

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

1 day ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

1 day ago

গরমে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

হঠাৎ করেই কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎই বিকল হতে পারে কিডনি। মূলত তাপমাত্রা ও…

1 day ago

খাবার কেনার আগে প্যাকেটের কোন লেখা অবশ্যই পড়বেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই এখন রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। এ কারণে বেশিরভাগ খাবারই এখন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। প্রায়…

2 days ago