খেলার ছলেও নিজের সন্তানকে শেখাতে পারেন যে জিনিসগুলো, জেনেনিন

Written by News Desk

Published on:

বাচ্চারা চঞ্চলমতি, কোন কিছুতেই স্থির থাকে না। তাই এদেরকে সহজেই কিছু শেখানো যায় না। কিন্তু খেলা এদের খুব প্রিয়। এই খেলার ছলেই অনায়াসে বাচ্চাদেরকে অনেক কিছু শেখানো যায়।

এমন অনেক খেলা আছে যা আপনার সন্তানকে আনন্দ দিবে আবার এর মাধ্যমে অনেক কিছু শিখতেও পারবে। তবে বয়স অনুযায়ী বদলাবে হবে এই খেলার ধরনও। দু’ থেকে তিন বছর বয়সি বাচ্চাদের জন্য যেসব খেলা থাকবে, পাঁচ থেকে সাত বছরের বাচ্চাদের খেলার ধরন হবে ভিন্ন।

সন্তানের বয়স যখন ২ থেকে ৪
বাচ্চাদের তৈরি করার সময় হলো এটি। ফলে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে ওরা আনন্দে আগ্রহী হয়ে উঠে এবং এর সঙ্গে সঙ্গে পড়াশোনার সহজ উপকরণগুলোও তৈরি হয়।

ব্লক গেমস:
বিল্ডিং ব্লক দিতে পারেন খেলার জন্য। এতে একটির সঙ্গে আর একটি ব্লক জুড়ে পিলার, টাওয়ার, বাড়ি ইত্যাদি নতুন জিনিস বানাতে শিখবে। এতে ছোট বাচ্চারা যেমন আনন্দ পাবে তেমনি পেন, পেনসিল হাতে ধরার গ্রিপ তৈরি হবে। এক জায়গায় স্থির হয়ে বসতেও শিখবে।

কাউন্টিং:
বাচ্চার সামনে কিছু পুঁতি নিয়ে মালা গাঁথার মতো করে দেখান। পরে ওর হাতে ধরিয়ে দিন, এক, দুই, তিন বলে বলে গেঁথে ফেলতে বলুন। এতে গুনতে শিখবে আবার হাতের গ্রিপও তৈরি হবে। অবশ্য বড় ধরনের পুঁতি দিবেন। কারণ বাচ্চাদের ছোট জিনিস মুখে দেওয়ার প্রবণতা থাকে।

ছবিতে রং দেওয়া:
রঙের প্রতি ছোটদের বেশ আকর্ষণ। তাই ছবি এঁকে ওদের রং দিয়ে ভরাট করতে বলুন। এতে অনেক কিছু শিখবে ওরা। পাতার রং সবুজ, ঠোটের রং লাল বা চুলের রং কালো- রঙের এই প্রাথমিক ভাগগুলো চিনতে-জানতে শিখবে। আর প্রথমে ছবির বাইরে রং বেরিয়ে গেলেও তাকে উৎসাহ দিন আঁকার মধ্যে থাকার। এতে সীমার মধ্যে থাকতে শিখবে সে।

সন্তানের বয়স যখন ৫ থেকে ৮
এই বয়স বাচ্চাদের মানসিক বিকাশের সময়। ফলে এমন খেলায় ওদের ব্যস্ত রাখুন, যাতে মাথা বা বুদ্ধি খাটাতে হয়।

ম্যাপ পয়েন্টিং:
ছুটির দিনে একটা গ্লোব বা ম্যাপ নিয়ে বসতে পারেন সন্তানের সঙ্গে। এক একটি দেশের নাম তাকে খুঁজে বার করতে বলুন। আর সেটা কোন মহাদেশে, সেটাও দেখাতে বলুন। এর থেকে সহজেই ভূগোলে তার দক্ষতা বাড়বে। সন্তানের পর্যবেক্ষণ শক্তিও বাড়বে।

ওয়ার্ড গেম:
এই খেলায় অনেক অ্যালফাবেট থাকে। এগুলো পর পর সাজিয়ে শব্দ বানাতে হয়। এই শব্দ তৈরির খেলাও কিন্তু বাচ্চাদের ওয়ার্ড লিমিট বাড়াতে সাহায্য করে। আবার অনেক গেম থাকে, যেখানে হয়তো পাঁচটা অক্ষর দেওয়া থাকল। এই পাঁচটা অক্ষর দিয়ে সে সর্বাধিক কতগুলো শব্দ বানাতে পারছে, সেটাই খেলা।

মেমরি গেম:
ছোটবেলায় অনেকেই হয়তো এ রকম খেলা খেলেছেন। মুখে মুখে এই মেমরি গেম খেলতে পারেন আপনার সন্তানের সঙ্গে। আপনি একটি নাম বলবেন। তার সঙ্গে জুড়ে সে একটি নাম বলবে। আবার আপনি এর সঙ্গে জুড়ে তিনটি নাম একসঙ্গে বলবেন। এই গেম সন্তানের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে খুবই সহায়ক।

বেড়ানো বা শপিং:
ছুটির দিনে সময় কাটাতে অনেকেই হয়তো বেড়াতে বা শপিংয়ে বেড় হন। এই সময় ওকে বলুন ক’টা অজানা জিনিস দেখতে পেল সে তা খুঁজে বার করতে। এবার সে আপনাকে সেটা বললে আপনি তাকে সেই জিনিস সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝিয়ে দিন। এতে সন্তানের আইকিউ বাড়বে।

গল্প পড়া:
আপনি গল্পের বইয়ের একটা ইন্টারেস্টিং জায়গা সন্তানকে পড়ে শোনান। সন্তানের আগ্রহ তৈরি হলে বইটা বন্ধ করে রেখে দিন। সে যদি গল্পটা আরও জানতে চায়, তখন তাকে বাকি গল্পটা পড়ে নিতে বলুন। দেখবেন সে পড়ে ফেলবে। এতে বইটাও পড়া হয়ে যাবে আর ওর সময়ও কেটে যাবে।

অঙ্কের ধাঁধায়:
অঙ্কের ধাঁধা তৈরি করে সন্তানকে বলুন সেই ধাঁধার উত্তর দিতে। এতে ওর যোগ-বিয়োগ, গুণ-ভাগ সহজ ও অনেক পোক্ত হবে। অন্যদিকে দোকানের বিলের টাকা মেটানোর সময়ে সন্তানের হাতে টাকা দিন। ওকেই বলুন, হিসেব করে টাকা ফেরত আনতে। এতে কিন্তু ওর দায়িত্বও বাড়বে। আবার হিসেব করতেও শিখবে।

এই ধরনের খেলার অনেক সুবিধা আছে। একে তো সন্তান বুঝতেই পারবে না যে, সে খেলার ছলেই কত কিছু শিখে নিচ্ছে। ফলে পড়াশোনার চেয়ে এই ধরনের খেলায় সহজেই তাকে আগ্রহী করে তোলা যাবে। তার মনোযোগও বাড়বে।

Related News