হার্ট অ্যাটাকের এই লক্ষণগুলো সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন না তো? দেখেনিন একনজরে

Written by News Desk

Published on:

বিখ্যাত সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্দন ওরফে কেকে কলকাতার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর।

মঞ্চে গান গাওয়ার সময়েই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে জানা যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কেকে’র শিল্পীর মৃত্যু হয়েছে।

নেটমাধ্যমে এখন কেকে’র শেষ অনুষ্ঠানের পারফরমেন্স ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে নিশ্চয়ই দেখেছেন গান গাওয়ার সময় কেক প্রচণ্ড ঘামছিলেন এমনকি একটু পর পর জল পান করছিলেন। আবার বেশ কয়েকবার মাথায় হাত বুলিয়েছেন।

এসবই হয়তো হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ ছিল। তবে শিল্পী বিষয়গুলো সাধারণ ভেবে গান গেয়েই যাচ্ছিলেন। শুধু এই শিল্পীই নন বরং হার্ট অ্যাটাকের এসব ছোট ছোট লক্ষণ কমবেশি আমরা সবাই অবহেলা করি বলেই বিপদ ঘটে।

হার্ট অ্যাটাকের আগেই শরীর বিভিন্ন ইঙ্গিতের মাধ্যমে তা জানান দেয়। তবে আমরা বুঝি না বা এড়িয়ে যাই। বিশেষ করে কাজের চাপ থাকলে এসব বিষয়কে সামান্য অসুস্থতা বলে ভুল করি।

যাদের উচ্চ রক্তচাপ বা রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি ও স্থূলতার সমস্যা আছে, তাদের এমনিতেই হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি। হার্ট অ্যাটাক যে কোনো বয়সে ও যে কোনো সময়ে হতে পারে।

অনেকেই মনে করেন, ছেলেদের হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বেশি। তবে মেয়েদের ক্ষেত্রেও ঝুঁকি থাকে। তাই সবারই সতর্ক থাকা জরুরি। জেনে নিন হার্ট অ্যাটাকের কোন কোন লক্ষণ এড়িয়ে গেলেই বিপদ হতে পারে-

>> শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হলে কিংবা দম আটকে আসলে দেরি করবেন না। অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিন। হৃদযন্ত্রের কোনো সমস্যা হলে ফুসফুস অক্সিজেন কম পায় বলেই এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

>> কোনো কারণ ছাড়াই ঘাম হওয়া কিংবা একটুতেই হাঁপিয়ে ওঠার বিষয়টি কিন্তু হেলাফেলায় নেবেন না। মঞ্চে গান গাওয়ার সময় শিল্পী কেকে কিন্তু প্রচণ্ড ঘামছিলেন।

আসলে শরীরে রক্ত চলাচল ঠিকঠাক না হলে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিক করে অক্সিজেন পায় না। তাই হাঁপিয়ে ওঠা ও ঘাম হতে পারে।

>> হার্ট অ্যাটাকের আগে মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়া ও প্রচণ্ড ঘাম হতে পারে। এই লক্ষণটি কিন্তু মোটেও উপেক্ষা করবেন না।

>> বুকে ব্যথা বা চাপ লাগার মতো অনুভূতি হলে অবশ্যই চিকিৎসককে জানান।

>> নারীদের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা, ঘাম হওয়া বা হাঁপিয়ে ওঠা ছাড়াও পেটে অস্বস্তি ও পিঠে ব্যথার মতো কিছু অন্যান্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত নেচারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মাহামারিতে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়েছে ৭২ শতাংশ। যারা কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাদের সমসাময়িক নিয়ন্ত্রণ গ্রুপের তুলনায় স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা ৫২ শতাংশ বেশি।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রীষ্মের তাপও হার্ট অ্যাটাকের কারণ। খুব উচ্চ তাপ রক্তচাপ কমাতে পারে যার ফলে হৃৎপিণ্ড দ্রুত স্পন্দিত হয়। ফলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে যখন তখন।

প্রচণ্ড গরমের সময়, শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক করার জন্য আরও রক্ত পাম্প করার জন্য হার্টের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

কীভাবে হার্ট অ্যাটাক এড়ানো যায়?

হার্ট অ্যাটাক এড়াতে চিকিৎসকরা বড় ধরনের জীবনধারা পরিবর্তনের পরামর্শ দেন। নিয়মিত ব্যায়াম, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিণ, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করা যায়।

Related News