কলার বিশেষ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জেনেনিন অবশ্যই

কলা যেমন পুষ্টিকর, তেমনই সুস্বাদু। কাঁচাকলা আর পাকাকলা এই দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অনেকে মনে করেন কলাতে ক্যালোরি বেশি হওয়ায় তা ডায়েটের জন্য ভালো না, কিন্তু এ ধারণা ভুল। তবে কলার রকমফেরে কাঁচা থেকে পাকার মধ্যেও বদলে যায় তার গুণাগুণ। এজন্য শরীরের প্রয়োজন বুঝে তারপর কলা খেতে হবে।

১.কাঁচা অবস্থায় কলা সবুজ থাকে। পাকার সঙ্গে সঙ্গে হলুদ হয় সেই সঙ্গে  পুষ্টিগুণও বদলাতে থাকে। রং দেখেই বোঝা যায় উপস্থিত উপাদানগুলোর পরিমাণ।

২.সবুজ কলায় রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি এবং শর্করার পরিমাণ কম থাকে। অ্যামিনো অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালশিয়াম, ফসফরাসের মতো উপাদানও থাকে যথেষ্ট পরিমাণে।

৩. কলা পাকার সঙ্গে সঙ্গে রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চ শর্করায় পরিবর্তিত হতে থাকে। তাই হলুদ কলায় শর্করা বেশি। সেই সাথে এতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের পরিমাণ বেশি থাকে।

৪.যে কলা একটু বেশি পাকার দিকে চলে যায় অর্থাৎ খয়েরি ছোপযুক্ত কলায় শর্করার পরিমাণ আরও বেশি। খয়েরি ছোপ যত বেশি, ততই বেশি শর্করা।

৫. সম্পূর্ণ খয়েরি কলা মানে সেটি অতিরিক্ত পাকা কলা। এতে শর্করা এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, দু’টিই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আছে।

রোগ সারাতে কলা:

ডায়াবেটিক রোগীদের এখন আমরা কোনও ফল খেতেই মানা নেই, শুধু পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কলার ক্ষেত্রেও তাই। যদি কোনও রোগীর ডায়েটে ১০০-১৫০ গ্রাম ফল থাকে, তা হলে তার অর্ধেক অর্থাৎ ৫০-৭৫ গ্রাম কলা খাওয়া যাবে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাদের পাকা কলা খাওয়া উচিত। এতে ফাইবার থাকায় পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। আবার পেট খারাপের সমস্যায় ভুগলে কাঁচকলা খেলে উপকার পাওয়া যাবে। কলা পটাশিয়াম, মিনারেল, ভিটামিন সি-তে পরিপূর্ণ। তবে পটশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকার কারণেই, যাদের রেনাল ফেলিয়োর রয়েছে বা কোনও অসুখের কারণে পটাশিয়াম খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে, তাদের কলা না খাওয়াই ভাল। ভিটামিন, মিনারেলের পাশাপাশি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও পাওয়া যায় কলায়।

যাদের ওজন অতিরিক্ত কম, তাদেরও কলা খেতে বলা হয়। কলায় ক্যালরির পরিমাণ অন্যান্য ফলের তুলনায় অনেকটা বেশি। যাদের ওবেসিটি বা হার্টের কোনও সমস্যা রয়েছে, তাদের ডায়েটে বেশি কার্বোহাইড্রেট রাখা যাবে না। তারাও বিকল্প হিসেবে কলা খেতে পারেন। এছাড়া, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় পাকা কলা খেতে হবে আর পেট খারাপ হলে কাঁচকলা। ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় কলা খেলে ভালো হজম হয়। কলার উচ্চ পটাশিয়াম মাত্রার কারণে শরীরের পটাশিয়ামের অভাব থাকলে বা হাইপোক্যালেমিয়ায় ভুগলে নিয়মিত কলা খেতে হবে।

কখন, কীভাবে খাবেন

ভারী খাবারের সঙ্গে কলা না খাওয়াই ভাল। খাবার খাওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টা পরে কলা খাবেন। কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এই সময়ের ব্যবধানে খেলে ফাইবার সহজেই শরীর গ্রহণ করতে পারবে।

অনেকে সরাসরি কলা খেতে পছন্দ করেন না। সে ক্ষেত্রে কলার স্মুদি বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। আবার ফলের স্মুদির সঙ্গেও কলা মিশিয়ে নেওয়া যায়। কলা ও ওটসের স্মুদিও খেতে পারেন।

News Desk

Recent Posts

ডাবের পানি যেভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে

গরমে এক গ্লাস ঠান্ডা ঠান্ডা ডাবের পানি মুহূর্তেই শরীরে প্রশান্তি এনে দেয়। ঠিক একইভাবে রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর…

10 mins ago

একমাস চিনি না খেলে শরীরে যে পরিবর্তন ঘটে

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কমবেশি চিনিযুক্ত খাবার সবাই খান। তবে স্বাস্থ্য সচেতনরা অবশ্য মিষ্টি খাবার দেখলেই ভয় পান! কারণ শরীরের জন্য চিনিযুক্ত…

39 mins ago

তাল মিছরি কেন খাবেন?

তাল মিছরি আমাদের পরিচিত একটি খাবার। এটি মূলত বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে পথ্য হিসেবে কাজ করে। সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে রক্তস্বল্পতা- অনেক…

2 hours ago

অতিরিক্ত ঘাম কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরম আবহাওয়ায় ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তবে শীতেও অতিরিক্ত ঘাম কিন্তু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবেও…

19 hours ago

নখ দেখেই বুঝে নিন শরীরে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে কি না

শরীরে কোনো রোগ বাসা বেঁধেছে কি না, তার ইঙ্গিত আগে থেকেই দেয় শরীর। তবে অনেকেই তা টের পান না, আবার…

21 hours ago

কাচের বোতলে কেন পানি খাবেন?

পানির অপর নাম জীবন। দৈনিক পর্যাপ্ত পানি না পান করলে শরীরে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। যা শারীরিক বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।…

21 hours ago