চা নাকি কফি কোনটির বেশি উপকারিতা?

এটি ঠিক যে আমাদের দেশে কফির জনপ্রিয়তা চায়ের মতো অতটা প্রাচীন নয়। কিন্তু আড্ডায়, একাকিত্বে চায়ের পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে কফিও। শহরের মোড়ে কফি শপ গড়ে ওঠা তার প্রমাণ। আর শীতের সময়ে চায়ের চেয়েও বেশি কফি পান করা হয়।

এই পর্যায়ে এসে আপনার মনে যদি প্রশ্ন জাগে, চা ভালো নাকি কফি? তবে উত্তরটা একটু জটিলই হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চা খেলে যেমন হাজারটা উপকার মেলে, কফি খেলেও তাই। আবার রয়েছে কিছু পার্থক্য, কিছু অপকারিতাও! চলুন জেনে নেয়া যাক-

ক্যাফেইন উপকারী, ক্ষতিকরও!
আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ক্যাফেইন। কিন্তু তা সঠিক মাত্রা পর্যন্ত। আমাদের শরীরে এই উপাদানটির মাত্রা বেড়ে গেলে উল্টো বিপদে পড়তে হয়। অ্যাংজাইটি লেভেল বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, থাকে অনিদ্রার ভয়ও। এমনকী হতে পারে হজমের সমস্যাও। এখন প্রশ্ন হল, চা না কফি, কোনটায় বেশি ক্যাফেইন রয়েছে? এক কাপ লিকার চায়ে কম-বেশি ১৪-৭০ মিলি গ্রাম ক্যাফেইন থাকে, যেখানে সমপরিমাণ কফিতে ৯৫-২০০ মিলি গ্রাম। তাই কফি খাবেন ঠিকই, তবে বেশি মাত্রায় না।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি দূর
রক্তে মিশে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানের হাত থেকে রক্ষা পেতে শরীরে যাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি না হয়, সেদিকে নজর রাখা প্রয়োজন। সুখবর হলো চা-কফি, দু’টিতেই প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। লিকার চায়ে রয়েছে থিয়াফ্লাভিনস এবং ক্যাটাচিন। এদিকে কফিতে মজুত রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ক্লোরোজেনিক এসিড। এই বিভাগে কফির চেয়ে চা-ই এগিয়ে থাকবে।

চা খেলে এনার্জির ঘাটতি মেটে
ক্লান্তি দূর করতে কফির মতোই কাজ করে চা। বলতে পারেন, কফির থেকে একটু বেশিই কাজ করে। কারণ, এই পানীয়তে ক্যাফেইনের পাশাপাশি রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই দু’য়ের যুগলবন্দিতে ক্লান্তি তো দূর হয়ই, সেই সঙ্গে ব্রেনের ক্ষমতাও বাড়ে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে কফি
কফিতে থাকা ক্লোরোজেনিক এসিড ওজন কমাতে সাহায্য করে। এই উপদানটি শরীরে প্রবেশ করলে শরীরের ফ্যাট বার্নিং প্রক্রিয়াটি আরও ত্বরান্বিত হয়, যে কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে শুধু কফি খেয়েই ওজন কমানো সম্ভব নয়। সঙ্গে ডায়েটিং এবং শরীরচর্চাও করতে হবে।

চা দাঁতের বেশি ক্ষতি করে
চা আর কফি- এই দুই পানীয়তেই আছে ট্যানিন, নানা ধরনের অ্যাসিড এবং ক্রোমোজেন। এই তিনটি উপাদানই দাঁতের রং পাল্টে দেওয়া থেকে শুরু করে দাঁতের ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে। কিন্তু চা-ই বেশি ক্ষতিটা করে থাকে, কারণ, চায়ে কফির তুলনায় বেশি ট্যানিন থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সব দিক বিচার করলে কফির থেকে চাই বেশি স্বাস্থ্যকর। তবে চা-কফি যা-ই খান না কেন, তাতে যতটা সম্ভব কম চিনি মেশাবেন। লিকার চা বা ব্ল্যাক কফি খেলে যতটা উপকার পাওয়া যায়, ততটাই পাওয়া যায় দুধ চা বা কফিতে দুধ মিশিয়ে খেলেও। বরং দুধ মেশালে একটু বেশিই উপকার মেলে।

News Desk

Recent Posts

সিলিং ফ্যান পরিষ্কারের ট্রিকস

সবার ঘরেই অন্তত একটি করে হলেও সিলিং ফ্যান আছে। এই গরমে যাদের ঘরে এসি বা এয়ার কন্ডিশন নেই, তাদের ভরসা…

3 hours ago

প্রতিদিন ১০ মিনিট হাসলে শরীরে যা ঘটে

বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই হাসতে ভুলে গেছেন। তবে হাসিখুশি থাকা যে শরীর ও মনের জন্য কতটা উপকারী, তা হয়তো অনেকেরই…

4 hours ago

গরমে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়লে দ্রুত যা করবেন

কোষ্ঠকাঠিন্য হলো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। এই তাপপ্রবাহে ডায়রিয়ার সমস্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই অনেকের আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বেড়েছে। যারা এরই…

7 hours ago

এই গরমে শিশুকে সুস্থ রাখতে কী কী খাওয়াবেন?

তীব্র গরমে বড়দের পাশাপাশি হাঁসফাঁস করছে ছোটরাও। এ সময় শিশুদের কীভাবে সুস্থ রাখবেন তাই এখন বড় প্রশ্ন, প্রত্যেক মা-বাবার জন্য়।…

7 hours ago

ত্বকে হিট র‌্যাশ উঠলে সারাতে কী করবেন?

তাপপ্রবাহে সবার মধ্যেই অস্বস্তি বেড়েছে। গরমে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি ত্বকেও দেখা দেয় ঘামাচি, ফুসকুড়ি, ট্যানসহ নানা সমস্যা। তার মধ্যে…

7 hours ago

দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখা যে কারণে বিপজ্জনক

কাজের ব্যস্ততা কিংবা আলস্যের কারণে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভ্যাস হতে পারে বিপজ্জনক। এই অভ্যাসের কারণেই…

8 hours ago