করোনায় বিপদের আশঙ্কা বুঝবেন যে ৩টি লক্ষণে, জেনেনিন

বেশিরভাগ করোনা রোগীই সংক্রমণের ১০-১৪ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। তবে যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ন্ত; তারাই সুস্থ হতে পারেন। অন্যদিকে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের শরীরে করোনার প্রভাব মারাত্মক হতে পারে- বিভিন্ন সমীক্ষা এমন তথ্যেই উঠে এসেছে।

করোনায় আক্রান্তদের বেশিরভাগই একই ধরনের উপসর্গ টের পেয়ে থাকেন। তবে করোনাভাইরাস যাদের শরীরে টিকতে পারে না, তাদের শরীরের বিভিন্ন উপসর্গগুলো ৫-৭ দিন পরেই কমতে শুরু করে। অন্যদিকে করোনাভাইরাস যাদের শরীরে বংশবিস্তার করার সুযোগ পেয়ে যায়, তারা ৫-৭ দিনের মধ্যেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।

তবে অনেকেই করোনা রোগীর গুরুতর অবস্থা প্রাথমিক পর্যায়ে টের না পাওয়াই, রোগীর শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করে। বেশিরভাগ চিকিত্সকদের মতে, রোগীর গুরুতর অবস্থার কয়েক ঘণ্টা আগেও যদিও হাসপাতালে আনা যায়; তাহলে বাঁচানোর সম্ভাবনা থাকে।

দিল্লির সেন্ট স্টিফেনস হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. ম্যাথিউ ভার্গিজের মতে, করোনা সংক্রমণের প্রথম সপ্তাহেই এর তীব্রতা এবং গুরুতর অবস্থা টের পাওয়া যায়। বেশ কয়েকটি লক্ষণ আছে, যেগুলো প্রথম সপ্তাহের শেষ দিকে প্রকাশ পেলেই রোগীকে আর ঘরে রাখা যাবে না। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিতে হবে।

অনেকেই আছেন, যারা অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া, বুকের ব্যথা বা শ্বাসকষ্টের বিষয়ে মনোযোগী হন। তবে এগুলো বাদেও আগাম কিছু লক্ষণ আছে, যেগুলো প্রকাশ পেলেই চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে। জেনে নিন সেগুলো-

লাগাতার জ্বর

করোনা সংক্রমণের শুরুতেই জ্বর হওয়া খুবই সাধারণ লক্ষণ। ৪-৫ দিনের মধ্যে জ্বর সেরে যেতে পারে। তবে যাদের জ্বর ৪-৫ দিন পরেও না সারে; তখন তা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডা. ভার্গিজের মতে, সংক্রমণের প্রথম ৭ দিনের মধ্যে একজন কোভিড পজেটিভ রোগীর জ্বর কতদিন স্থায়ী হয়; সে সম্পর্কে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যদি রোগীর জ্বর সেরে গিয়ে আবারও ফিরে আসে কিংবা পুরো সপ্তাহ জ্বরে আক্রান্ত থাকে; তখন গুরুতর বলে বিবেচিত হবে।

অতিরিক্ত কাশি

করোনায় আক্রান্ত রোগীর খুশখুশে কাশি হয়ে থাকে। অতিরিক্ত কাশির কারণে অনেকে শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। মনে রাখবেন, করোনায় কাশির ফলে মিউকাস বা শ্লেষ্মা বের হয় না ঠিকই; কিন্তু তা বিপজ্জনক। করোনায় কাশি একটি সতর্কতা চিহ্ন হতে পারে।

অতিরিক্ত কাশির সমস্যা ভুগলে বুজতে হবে আপনার ফুসফুস এবং শ্বাসযন্ত্র তীব্রভাবে সংক্রমিত হয়েছে। অবিরাম কাশি, শ্বাসকষ্টের সঙ্গে বুকে জ্বালা-পোড়াও নিউমোনিয়ার লক্ষণ হতে পারে, যা শরীরে ক্ষুদ্র বায়ু থলের সংক্রমণ। এমন লক্ষণ দেখলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে।

বুকে ব্যথা ও অস্বস্তি

করোনাভাইরাস যখন ফুসফুসের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করে নেয়; তখন বুকে ব্যথা ও অস্বস্তিভাব হয়ে থাকে। হার্ট ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। অন্যদিকে ফুসফুসের বিভিন্ন কোষগুলো ভাইরাস ধ্বংস করতে থাকে।

তাই করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই যদি বুকে ব্যথার উপসর্গ টের পান; তাহলে ঘরে বসে না থেকে বরং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। করোনায় বুকে ব্যথা ও অস্থিরতা হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। ভাইরাস যখন শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে; তখন বুকের চারপাশে ব্যথা হয়ে থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় ওই ব্যথা আরও বেড়ে যায়।

News Desk

Recent Posts

উচ্চ রক্তচাপ কমাতে যেভাবে সাহায্য করে মৌরি

সকালে উঠে মৌরি ভেজানো পানি পান করে অনেকেই দিন শুরু করেন। মূলত পেট পরিষ্কার করতে এর উপর ভরসা রাখেন অনেকে।…

16 mins ago

এনার্জি পেতে চা-কফির পরিবর্তে অভ্যাস করুন ৬ জিনিসের

সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা বা কফিতে চুমুক না দিলে যেন শরীর ও মন চাঙ্গা হয়ে ওঠে না।…

1 hour ago

গরমে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় ও প্রতিরোধে কী করবেন?

শীত শেষে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে এরই মধ্যে। প্রায় সব ঘরেই দিন-রাতে চলছে ফ্যান বা এসি। ঋতু পরিবর্তনের এ সময়…

2 hours ago

শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি আছে কি না বুঝে নিন ৫ লক্ষণে

শরীরকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে প্রোটিনের বিকল্প নেই। আপনি যদি নির্বিঘ্নে কাজ করতে চান, তাহলে পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে।…

3 hours ago

ঘুমের মধ্যে কিংবা হাঁটতে গিয়ে পেশিতে টান ধরে যে কারণে

পেশিতে টান ধরার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। কখনো ঘুমের মধ্যে কিংবা কখনো হাঁটতে গিয়ে বা আড়মোড়া ভাঙতে গিয়ে হঠাৎই পেশি শক্ত…

5 hours ago

পুরুষের চেয়ে নারীরা যে কারণে বেশি ডিপ্রেশনে ভোগেন

নারীরা মানসিকভাবে পুরুষদের চেয়ে অনেক বেশি জটিলতা ভোগ করেন। শারীরিক সমস্যার মতো মানসিকভাবেও জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে ভেঙে পড়েন…

16 hours ago