ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে ঘরেই তৈরি করুন ডিওডোরেন্ট জেনে নিন পদ্ধতি

Written by News Desk

Published on:

অফিসে মিটিংয়ে অংশ নিতে খুব সুন্দর জামাকাপড় পরে রওনা হলেন। যেতে যেতে ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা। এবার কীভাবে যাবেন সবার সামনে? নিজের মনোবল যেমন হারিয়ে ফেলবেন, অন্যদিকে সবার হাসির পাত্রও হলেন। কী একটা অবস্থা!

শরীরে ঘাম হওয়া এবং দুর্গন্ধ হওয়া খুবই স্বাভাবিক। বিশেষ করে গরমের এই সময়টাতে। ধুলাবালি, ঘামের মাধ্যমে শরীরে দুর্গন্ধ হতে পারে। এটি নিজের কাছে যেমন অস্বস্তিকর ব্যাপার; তেমনি সামাজিকভাবেও হেয় হতে হয়।

মানুষের ত্বকে দুই ধরণের গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থি থেকে ঘামের উৎপত্তি হয়। শরীরচর্চা বা পরিশ্রমের ফলে উৎপন্ন ঘাম তৈরি করে একরিন নামক গ্রন্থি। এই ঘামে কোনো দুর্গন্ধ নেই। বরং তা শরীরকে ঠান্ডা রাখে। অন্য গ্রন্থটি হলো অ্যপোক্রিন গ্রন্থি।

যেটি বগল ও গোপনাঙ্গের আশপাশে থাকে। অবাঞ্ছিত লোম থেকে উৎপন্ন ঘামে এক বিশেষ ধরনের প্রোটিন থাকে। এতে প্রথমে দুর্গন্ধ না থাকলেও ব্যাকটেরিয়ার কারণে পরে দুর্গন্ধ তৈরি হয়। ব্যাকটেরিয়া ক্ষুদ্র হলেও বেশ শক্তিশালী কারণ তারা সেই বিশেষ প্রোটিনটি ব্যবহার করে।

তবে খুব সহজেই শরীরে দুর্গন্ধ দূর করতে পারেন। এজন্য ডিওডোরেন্ট ও অ্যান্টি-পার্সপির্যান্ট সুগন্ধি ব্যবহার করে অনেকেই ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার চেষ্টা করেন।ডি ওডোরেন্ট দুর্গন্ধকে আড়াল করে রাখে। এতে ব্যাকটেরিয়া রোধ করে এমন কিছু উপাদানও থাকে।

আর অ্যান্টি-পার্সপির্যান্ট ঘামের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। বাজারের ডিওডোরেন্টগুলো নানান সুগন্ধি দিয়ে তৈরি হলেও, এর মধ্যে থাকে প্রচুর কেমিকেল। যা আপনার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। এজন্য বাড়িতে খুব সহজে তৈরি করে নিতে পারেন পছন্দমতো ডিওডোরেন্ট।

চলুন জেনে নেয়া যাক ঘরোয়া কোন উপাদানগুলো আপনাকে ঘামের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি দিতে পারে-

বেকিং সোডা:
বহু শতাব্দী থেকে দুর্গন্ধ দূর করতে ব্যবহার হয়ে আসছে বেকিং সোডা। এর এমন বৈশিষ্ট্য আছে, যা ঘাম শোষণ এবং দুর্গন্ধ দূর করতে করতে সহায়তা করে।

শিয়া বাটার:
এই উপকরণটি রান্নার কাজে যেমন ব্যবহার করা হয় তেমনি ওষুধি এবং সৌন্দর্য চর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য।

মোম :
সৌন্দর্যচর্চায় মোমের ব্যবহার বহুকাল আগে থেকেই। এটি ত্বককে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে এবং মসৃণ করে।

নারকেল তেল:
চুলের পাশাপাশি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী নারকেল তেল। এটি শরীরের দুর্গন্ধ শোষণ করে এবং দূর করতে সহায়তা করে। এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ নারকেল তেল নিয়ে শরীররে যে যে অংশে বেশি মাত্রায় ঘাম হয়; সেখানে লাগালেই দেখবেন অল্প সময়েই ঘামের গন্ধ দূর হয়ে যাবে।

জবা, গ্রিনটি এবং ল্যাভেন্ডার তেল:
এই তেলগুলো এসেন্স হিসেবেও কাজ করবে। এতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ট্যানিক অ্যাসিড গায়ের গন্ধ দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘরেই ডিওডোরেন্ট কীভাবে তৈরি করবেন-

প্রথম পদ্ধতি: দুই কাপ বেকিং সোডার সঙ্গে সমপরিমাণ এরারুট, ৫ চামচ নারকেল তেল, ৫ ফোঁটা করে জবা, গ্রিনটি এবং ল্যাভেন্ডার তেল। প্রথমে বেকিং সোডা এবং এরারুট একসঙ্গে একটি ব্লেন্ডারে নিয়ে মিশিয়ে নিন। বাকি উপকরণগুলো মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। ব্লেন্ড করতে করতেই দেখবেন ঘন মিশ্রণ তৈরি হয়ে গেছে। এবার এই মিশ্রণ এয়ার টাইট জার কিংবা আপনার খালি ডিওডোরেন্টের বোতলে ভরে রাখুন। একবার বানিয়ে সংরক্ষণ করতে পারবেন ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত।

দ্বিতীয় পদ্ধতি: প্রথমটির মতো একই উপকরণ প্রয়োজন। বাড়তি লাগবে শুধু গলানো মোম ও শিয়া বাটার। এজন্য ১/৮ কাপ বেকিং সোডা, ১/৩ কাপ এরারুট, আধা কাপ জোজোবা তেল, আধা কাপ শিয়া বাটার, আধা কাপ মোম, নারকেল তেল ১০ ফোঁটা, ল্যাভেন্ডার তেল ১০ ফোঁটা। এবার একটি পাত্রে জল ফুটিয়ে নিন। এর উপর আরেকটি পাত্রে মোম গলতে দিন। এটাকে বলে ডাবল বয়লার পদ্ধতি। অন্য একটি বাটিতে, বেকিং সোডা, এরারুট এবং জোজোবা তেল নিয়ে মেশাতে থাকুন। মোমের সঙ্গে মিশিয়ে ডাবল বয়লার পদ্ধতিতে গরম করে নিন।

এবার এই মিশ্রণের সঙ্গে শিয়া বাটার মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। নামিয়ে কিছুটা ঠান্ডা করে বাকি তেলগুলো মিশিয়ে নিন। এবার একটি পরিষ্কার এয়ার-টাইট জারে সংরক্ষণ করুণ ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত।

সূত্র:RS

Related News