মানসিক চাপে সংকুচিত হয় নারীদের মগজ! জেনেনিন

Written by News Desk

Published on:

খুব বেশি মানসিক অশান্তি ও চাপে থাকেন সবসময়?
তবে আপনার জন্য রয়েছে বড় ধরণের দুঃসংবাদ! একেবারেই সাম্প্রতিক সময়ে জার্নাল নিউরোলজিতে প্রকাশিত হওয়া একটি গবেষণার ফল থেকে দেখা গেছে, অনেক বেশি মানসিক চাপের মুখে জীবন যাপনের ফলে বয়স ৫০ হতেই স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও মগজ ছোট হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যান অ্যানটোনিওর ইউটি হেলথের নিউরোলজির প্রফেসর ও প্রধান গবেষক ডাঃ সুধা শেষার্ধি বলেন, ‘উচ্চমাত্রার স্ট্রেস হরমোন তথা কর্টিসল ব্রেইন ফাংশন, ব্রেইন সাইজ ও ব্রেইনের পারফরম্যান্সের উপর প্রভাব ফেলে’।

তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষা থেকে আমরা দেখেছি, অপেক্ষাকৃত তরুণরাও স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও মগজ সংকুচিত হওয়ার মতো সমস্যায় আক্রান্ত। অথচ তাদের মাঝে কোন ধরণের লক্ষণ দেখা দেয়নি’।

কেউ যখন মানসিক চাপের মুখে থাকে, তখন অ্যাড্রেনাল গ্ল্যান্ড প্রয়োজনের চাইতে অনেক বেশি কর্টিসল উৎপাদন ও নিঃসরণ করে। আবার মানসিক চাপের সমস্যা কেটে গেলে কর্টিসলের মাত্রা কমে যায় এবং শরীরের অভ্যান্তরিন সিস্টেম আগের অবস্থায় ফিরে যায়।

তবে মানসিক চাপ ক্রমাগত বজায় থাকলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপ ব্যাহত হয়। যা থেকে ডিপ্রেশন, হৃদরোগ, মাথাব্যথা, ওজন বৃদ্ধি, ঘুমের সমস্যা, স্মৃতিভ্রষ্ট ও মনোযোগ হারানোর মতো সমস্যাগুলো দেখা দিতে শুরু করে।

আলঝেইমার অ্যাসোসিয়েশনের সায়েন্টিফিক প্রোগ্রামের ডিরেক্টর কেইথ ফার্গো বলেন, ‘মগজ খুবই ক্ষুদার্ত একটি প্রত্যঙ্গ। ভালোমতো কাজ করার জন্য যার প্রতিনিয়ত পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি উপাদান ও অক্সিজেনের সাপ্লাইয়ের প্রয়োজন হয়। যে কারণে শরীরের যখন মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য এই সকল উপাদানের (পুষ্টি ও অক্সিজেন) প্রয়োজন হয়, তখন মগজে প্রয়োজনীয় উপাদানে ঘাটতি দেখা দেয়।

ডিমেনশিয়ার কোন লক্ষণ নেই, এমন ২০০০ মানুষের উপর বিভিন্ন ধরণের সাইকোলজিক্যাল পরীক্ষা চালানো হয় তাদের চিন্তাভাবনা নিয়ে। প্রাথমিক পরীক্ষার প্রায় আট বছর পর তথ্যগুলো বয়স, লিঙ্গ, শরীরের আকার এবং ধূমপানের তথ্য সঙ্গে যাচাই বাছাই শেষে দেখা যায়- যাদের শরীরে উচ্চমাত্রায় কর্টিসল রয়েছে, তাদের স্মৃতিশক্তি হ্রাসের সমস্যা রয়েছে।

গবেষণা থেকে অবাক করা মতো আরও যে বিষয়টি দেখা যায়, কর্টিসলের প্রভাবে মগজের আকারও সংকুচিত হয়ে যায় এবং আকারে পরিবর্তন চলে আসে। উচ্চ কর্টিসলযুক্ত মানুষের মগজের সেরেব্রামস তুলনামূলক ছোট হয়। এই অংশটি মূলত চিন্তা, আবেগ ও পেশির কার্যকারিতার কাজ করে থাকে।

স্বাভাবিক মাত্রার কর্টিসলযুক্ত একজন মানুষের ব্রেইন ভলিউম যেখানে ৮৮.৭, সেখানে উচ্চমাত্রার কর্টিসলযুক্ত মানুষের ব্রেইন ভলিউম পাওয়া যায় ৮৮.৫। আরও অবাক করার মতো তথ্য হলো, কর্টিসলের ফলে ব্রেইন ভলিউমের এই তারতম্যটি শুধুমাত্র নারীদের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পুরুষদের উপর এর কোন প্রভাব দেখা যায়নি।

কেইথ ফার্গো জানান, শরীরচর্চা ডিমেনশিয়া দেখা দেওয়ার সম্ভবনা কমিয়ে আনে। নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখতে বেড়াতে যাওয়া, মেডিশন করা ও নিজের পছন্দের কাজ করার পরামর্শও দেন তিনি।

RS

Related News