সাবধান! লাগামহীন যৌন চাহিদাও এক ধরনের রোগ? জানাচ্ছে চিকিৎসকরা

Written by News Desk

Published on:

স্বামীর অনুপস্থিতিতে একাধিক পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অনেক স্ত্রী। আবার সুযোগ পেলেই একাধিক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন পুরুষরা। সম্প্রতি এমন কয়েকটি ঘটনা এসএসকেএমের ‘ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রি’ চিকিৎসকদের হাতে আসে।

‘ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রি’-র অধিকর্তা প্রদীপ সাহা এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান, নারীদের ক্ষেত্রে এই রোগের নাম নিমফোম্যানিয়া আর পুরুষদের ক্ষেত্রে নাম স্যাটেরিয়াসিস। অস্বাভাবিক মাত্রায় শারীরিক চাহিদা পূরণের জন্য নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসে আক্রান্তরা একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কখনো একের পর এক সম্পর্কে, কখনো আবার একই সঙ্গে একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা।

অনেক সময় এই শারীরিক চাহিদা বা তাকে পূরণের সক্ষমতাকে আরো বাড়িয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন রকমের মাদকও সেবন করেন তারা। অতিরিক্ত বা অস্বাভাবিক এই কামাসক্তি সমাজের কাছে ‘ব্যাভিচার’ বা ‘চারিত্রিক দোষ’ বলে বিবেচিত হলেও মনস্তত্ত্ববিদ বা মনরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে এটি একটি মানসিক ব্যাধি, নাম নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিস।

মার্কিন মনরোগ বিশেষজ্ঞ টিমোথি জে লেগ-এর একটি গবেষণাপত্রের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকার প্রায় তিন কোটি মানুষ নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসে আক্রান্ত। কোনো ব্যক্তি নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসে আক্রান্ত হলে তা কীভাবে সনাক্ত করা যাবে, সে বিষয়ে আমেরিকান সাইকোলজিকাল অ্যাসোসিয়েশন এর গবেষকরা এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি। কেন এই রোগ মানুষের মনে বাসা বাঁধে আর অস্বাভাবিক বা বিকৃত যৌন আসক্তি তৈরি করে সে সম্পর্কেও তেমন কোনো কারণ নির্দিষ্ট করতে পারেননি তারা।

নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসের লক্ষণ:

১) নিয়মিত ঘন ঘন হস্তমৈথুন,

২) একাধিক যৌন সম্পর্ক, একাধিক যৌনসঙ্গী বা শুধুমাত্র যৌন বাসনা চরিতার্থ করতে সামায়িকভাবে কোনো সম্পর্কে জড়ানো,

৩) পর্নোগ্রাফির প্রতি অস্বাভাবিক আসক্তি,

৪) অসুরক্ষিত এবং উদ্যাম যৌনজীবনের প্রতি অস্বাভাবিক আকর্ষণ,

৫) সাইবার সেক্স, ফোন সেক্স বা ভিডিও কনফারেন্সে যৌনতায় লিপ্ত হওয়া,

৬) অশ্লীলভাবে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে অনাবৃত করার ইচ্ছা,

৭) অন্যকে অনাবৃত অবস্থায় দেখার বা যৌনতায় লিপ্ত হতে দেখার ইচ্ছা ইত্যাদি।

এর সঙ্গেই বেশির ভাগ সময় অপরাধবোধ কাজ করে। তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তি বেশির ভাগ সময় উদ্বিগ্ন, অন্যমনস্ক বা অবসাদগ্রস্ত থাকেন।

নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসের চিকিৎসা:

ধ্যান বা যোগাভ্যাস আর নানা রকম ওষুধপত্রের মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। তবে ওষুধপত্র ছাড়াও ‘রেসিডেন্সিয়াল ট্রিটমেন্ট প্রোগ্রাম’, ‘কগনিটিভ বিহেভিয়েরাল থেরাপি’ কাজে লাগিয়েও নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসের চিকিৎসা করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

Related News