সবজি ও ফল খেলে উদ্বেগ-অবসাদ কমায়! জানাচ্ছে গবেষণা

Written by News Desk

Published on:

শাকসবজি আর ফলমূল যে শরীর ভালো রাখে, তা নতুন নয়। শরীরের পাশাপাশি মনেও গভীর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে সবজি-ফল। যাদের খাবারে এগুলো থাকে না তারা উদ্বেগ-অবসাদের শিকার হন। সাম্প্রতিক একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা তেমনটাই বলছে।

গত বৃহস্পতিবার ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথ’ নামের বিখ্যাত বিজ্ঞানপত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়, উদ্বেগ-অবসাদের মতো মনোবিকারের আশঙ্কা তাঁদের ঢের বেশি যাদের খাদ্যতালিকায় অনুপস্থিত থাকে ফল-সবজি।

নর্থ আমেরিকান প্রাইমারি কেয়ার রিসার্চ গ্রুপের করা সেই গবেষণা বলা হয়, যারা প্রতিদিন অন্তত তিন ধরনের ফল-সবজি খান না, মধ্যবয়স কিংবা প্রৌঢ়ত্বে তাদের অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার ও ডিপ্রেশনের আশঙ্কা প্রায় ২৪% বেশি। গত নয় বছর ধরে ২০৬৯ জনের উপর সমীক্ষা ও গবেষণা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গবেষকরা।

যত দিন যাচ্ছে ততই টাটকা সবজি কিংবা তাজা ফলের চেয়ে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় বেশি করে ঢুকে পড়ছে জাঙ্কফুড। এর ফলে বাড়ছে উদ্বেগ-অবসাদের মতো মনোবিকারও। ২০১৩-র গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজের রিপোর্ট বলছে, প্রাণঘাতী অসুখগুলোর মধ্যে মনের এই সমস্যা সারা দুনিয়ায় দ্বিতীয় স্থানে অর্থাৎ হার্ট অ্যাটাকের পরেই রয়েছে।

ডায়েটিশিয়ানদের মতে, সেই কারণেই ফল ও সবজি নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রত্যেকের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর ফলে শুধুমাত্র শারীরিক উন্নতি নয়, মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো হয়। ফল কিংবা সবজি সব সময়েই শক্তিবর্ধক বা এনার্জাইজার এবং তা মানসিক ও শারীরিক দুই ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

উপমহাদেশের মানুষ ফল ও সবজি বেশি খায় বলেই ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে মানসিক চাপ ও উদ্বেগে কম ভোগেন। কিন্তু মিষ্টি জাতীয় খাবার, জাঙ্কফুড, পশ্চিমা সংস্কৃতির খাবার যে হারে আমাদের সমাজে ঢুকে যাচ্ছে, তাতে ইউরোপ-আমেরিকানদের মতো অবসাদে ভুগতে বেশি দিন লাগবে না।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল ও সবজি সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তা সে শারীরিক স্বাস্থ্যই হোক বা মানসিক স্বাস্থ্য। তাই আমাদের প্রচুর সালাদ, সবুজ শাকসবজি ও ফল খেতে অভ্যস্ত হতে হবে। তাহলেই উদ্বেগ-অবসাদ কমানো যাবে।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘অন্ত্রে যে বন্ধু-ব্যাকটেরিয়া থাকে, তার সঙ্গে অ্যাংজাইটির সম্পর্ক বহু পুরোনো। এই ব্যাকটিরিয়ার উপস্থিতি ও অ্যাংজাইটির সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতিক। প্রোবায়োটিক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সব সময়েই ওই ব্যাকটেরিয়াকে ভালো রাখে। তাই উদ্বেগ-অবসাদও পাল্লা দিয়ে কমে।

Related News