অনেক সময় গর্ভাবস্থায় দেখা দেয় চোখের সমস্যা, আজই সাবধান হন

যেকোনো নারীর জীবনে গর্ভাবস্থা একটি বিশেষ সতর্কতার সময়। গর্ভবতীর শরীরে সে সময় হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রপিন, ইস্ট্রোজেন, প্রজেসটেরন, প্রোল্যাকটিন, রিল্যাক্সিন ইত্যাদি হরমোনের আধিক্য থাকে। এই হরমোনগুলো গর্ভস্থ শিশুর বিকাশ ও জন্মের জন্য প্রয়োজনীয়।

এই হরমোনগুলোর প্রভাবে গর্ভবতীর শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা যায়। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সকালে বমি বমি ভাব, খাবারে অরুচি, মুখে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কালো ছাপ পড়া, শরীরে পানি জমা ইত্যাদি।

গর্ভাবস্থায় চোখের উপসর্গ

চোখ আলোয় সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। ফলে রোদে মাথা যন্ত্রণা করতে পারে। যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে, তাঁদের এ সমস্যাটি গর্ভাবস্থায় বেড়ে যেতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ এই সময় খাওয়া উচিত নয়। রোদে সানগ্লাস ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
চোখের অশ্রু নিঃসরণ কমে যেতে পারে। ফলে চোখ লাল হয়ে চুলকাতে পারে।
এমন হলে চোখের চিকিৎসককে জানান যে আপনি গর্ভবতী। গর্ভাবস্থায় যেকোনো ওষুধ প্লাসেন্টারের মাধ্যমে শিশুর শরীরে চলে যায়। কাজেই ওষুধগুলো শিশুর জন্য নিরাপদ হওয়া জরুরি।

গর্ভাবস্থায় চোখে যা হতে পারে

গর্ভাবস্থায় শরীরের অন্যান্য অংশের মতো চোখের কর্নিয়ায় পানি জমে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।
যাঁরা আগে থেকে চশমা পরেন বা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন, তাঁরা এই সময় আগের চশমা বা কন্টাক্ট লেন্স দিয়ে ঝাপসা দেখতে পারেন।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিশুর জন্মের পর এই ঝাপসাভাব কেটে যায়। কিন্তু দৃষ্টিশক্তি অত্যধিক কমে গেলে তা অন্য কোনো বড় সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে।
দৃষ্টিশক্তি অত্যধিক কমে গেলে আপনার গায়নোকলজিস্টকে জানান এবং পরে চক্ষু চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ, প্রি-একলাম্পসিয়া এবং একলাম্পসিয়া
এই জটিল পরিস্থিতিগুলোয় গর্ভবতী মায়ের রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হয়। পরিস্থিতিগুলো মা ও শিশু উভয়ের জন্য বিপজ্জনক। দেরি না করে অতিদ্রুত গায়নোকলজিস্টের পরামর্শ নিন।

এই পরিস্থিতিতে যদি চোখে ঝাপসা দেখা যায়, চোখে বিদ্যুতের চমকের মতো আলো দেখা যায়, মাথা যন্ত্রণা করে, তবে অবশ্যই চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি
যেসব মায়ের আগে থেকে ডায়াবেটিস ছিল বা যাঁদের প্রেগনেন্সির জন্য রক্তে সুগার বেড়েছে, উভয় ক্ষেত্রেই চোখের রেটিনার সূক্ষ্ম রক্তবাহিকাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হতে পারে। এ অবস্থায় চোখের চিকিৎসক দেখাতে হবে।

News Desk

Recent Posts

ক্যানসার হবে কি না জানতে পারবেন ৭ বছর আগেই

ক্যানসারের নাম শুনলেই কমবেশি সবাই আঁতকে ওঠেন। কঠিন এই ব্যাধি থেকে বাঁচতে সচেতনতা জরুরি। ক্যানসার রোগের আগাম খবর পেতে সারা…

20 hours ago

নেবুলাইজার কেন ব্যবহার করা হয়?

হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও অন্যান্য শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। রোগী যখন ইনহেলারের…

2 days ago

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

2 days ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

2 days ago

গরমে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

হঠাৎ করেই কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎই বিকল হতে পারে কিডনি। মূলত তাপমাত্রা ও…

2 days ago

খাবার কেনার আগে প্যাকেটের কোন লেখা অবশ্যই পড়বেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই এখন রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। এ কারণে বেশিরভাগ খাবারই এখন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। প্রায়…

3 days ago