রাতে বারবার ঘুম ভাঙে যে ৫ কারণে

Written by News Desk

Published on:

রাতে অনেকেরই বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়ার সমস্যা থাকে। এতে ঘুম পরিপূর্ণ হয় না। ফলে পরের দিন মাথাব্যথা ও ক্লান্তি ঘিরে ধরতে পারে। তবে কেন হঠাৎ করেই বারবার ঘুম ভেঙে যায়, সে বিষয়ে অনেকেরই কোনো ধারণা থাকে না।

বর্তমানে সবার মধ্যেই অনিয়মিত জীবনযাপনের প্রবণতা বেড়েছে। সময়মতো খাওয়া, ঘুম কিংবা শরীরচর্চা কোনোটিতেই তেমন গুরুত্ব দেন না কমবেশি সবাই। এতে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিও বাড়ছে।

আসলে ঘুমের মধ্যে আমাদের শরীর বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে। আপনি যদি সঠিক সময়ে না ঘুমান কিংবা ঘুমের পরিবেশ ঠিক না রাখেন তাহলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটবেই।

এমনকি ঘুমের ঠিক আগে অনেকেই এমন কিছু ভুল করে ফেলেন যে কারণে রাতে বারবার ঘুম ভাঙতে পারে। জেনে নিন কারণগুলো কী কী-

খাওয়ার পরেই ঘুমিয়ে পড়া

অনেকেই রাতে খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়েন। এটি কিন্তু মারাত্মক একটি ভুল অভ্যাস। রাতের খাওয়া শেষ করার অন্তত ২ ঘণ্টা পর ঘুমাতে হবে।

ভরপেটে ঘুমিয়ে পড়লে শরীরের বিপাক হার কমে যায়। ফলে খাবার হজম হতে সময় নেয় ও রাতে ঘুমে অসুবিধা হয়। তাই রাতের খাবারের পরপরই ঘুমানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন।

বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করা

ঘুমের আগে সব ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করা বন্ধ করুন। অনেকেই রাতে ঘুমানোর আগে শুয়ে শুয়ে ফোন ব্যবহার করেন কিংবা টিভি দেখেন। এসবের বদলে হালকা যোগাসন করুন।

একই সঙ্গে শ্বাসের ব্যায়াম বা ধ্যান করুন। ঘুম না আসলে পছন্দের বই পড়ার অভ্যাস করুন। দেখবে দ্রুত ঘুম চলে আসবে। এমন ঘুম গভীর হয়।

ক্লান্তি নিয়ে ঘুমানো

রাতে ঘুমানোর আগে খানিকটা সময় নিজের জন্য বের করুন। এ সময় রূপচর্চা করতে পারেন। একই সঙ্গে গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট। এতে সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। ফলে রাতে ভালো ঘুম হবে।

ঘুমানোর আগে দুশ্চিন্তা করা

অনেকেই রাতে শুয়ে শুয়ে বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়ের সঙ্গে ফোনে গল্প করেন। এ সময় হতাশা, রাগ, দুঃখ প্রকাশ করেন অনেকেই। জানেন কি, নেতিবাচক চিন্তার কারণেও আপনার ঘুমে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে।

তাই ঘুমানোর আগে মনে শান্তি আনুন ও ইতিবাচক চিন্তা করুন। দেখবেন দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েছেন। আর এমন ঘুমও গভীর হবে। ফলে বারবার রাতে ঘুম ভাঙার আশঙ্কাও থাকবে না।

টাইট পোশাক পরা

ঘুমানোর আগে অবশ্যই আরামদায়ক পোশাক পরুন। এখন যেহেতু গরম, তাই পাতলা সুতির কাপড় পরে ঘুমান। আবার চুল বেশি টাইট করে বেঁধে ঘুমাবেন না। এতে চুল ঝরবে বেশি আবার মাথাও ব্যথা হবে।

ভালো ঘুম সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। অন্যদিকে অনিদ্রা কিংবা ঘুমের সমস্যা শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা ডেকে আনে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে অনিদ্রার সমস্যা বিশ্বের ছোট-বড় সব সয়সী মানুষই কমবেশি ভুগছেন। এর কারণ হলো অনিয়মিত জীবনযাপন।

আজ বিশ্ব ঘুম দিবস। ঘুমের প্রয়োজনীয়তা ও ঘুম সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে সচেতনতার লক্ষ্যে প্রতিবছর ১৮ মার্চ সারাবিশ্বে পালিত হয় বিশ্ব ঘুম দিবস। ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর ১৮ মার্চ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ঘুম দিবস।

ওয়ার্ল্ড স্লিপ সোসাইটি এই ঘুম দিবস নিয়ে কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের উদ্যোগেই শুরু হয় এই বিশেষ দিন উদযাপন।

বিশ্ব ঘুম দিবসের প্রথম সহ-সভাপতি ছিলেন আপস্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটির নিউরোলজির অধ্যাপক ও নিউ ইয়র্কের কমিউনিটি জেনারেল হাসপাতালের দ্য স্লিপ সেন্টারের পরামর্শদাতা আন্তোনিও কুলেব্রাস।

Related News