স্কিন টাইমেরে ফলে কি কি বিপদ হতে পারে? বিস্তারিত জানতে পড়ুন

শিশু খেতে না চাইলে কিংবা বেশি কান্নাকাটি করলে আমরা মোবাইল ফোনে ভিডিও গান চালিয়ে শিশুদের হাতে দিয়ে দেই। অথবা তাদের পছন্দের কোন গেইম চালিয়ে দেই যেন শিশু শান্ত থাকে এবং খেলার দিকে মনোযোগ দেয়। এতে খাবার খাওয়ানো যায় সহজেই। অনেকটা এইভাবেই একটি শিশুর মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ কিংবা টিভির প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়।

একটা সময়ে এই আকর্ষণ অতিরিক্ত হয়ে দাঁড়ালে বেড়ে যায় মোবাইল কিংবা টিভি ব্যবহারের মাত্রা। অন্য দিকে শিশুর মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করলেও জিদের মুখে মোবাইল দিয়ে দিতে হয় তাদের হাতে। আর এভাবেই প্রতিদিন শিশুদেরকে গুরুত্বর স্বাস্থ্য ঝুঁকির ভেতর ফেলে দিচ্ছি না জেনেই।

কী সেই স্বাস্থ্য ঝুঁকি? অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম শিশুদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। স্ক্রিন টাইম (Screen Time) হলো মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও টিভির সেলুলয়েড পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকা কিংবা এই সকল গ্যাজেটের সাথে কাটানো মোট সময়।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি এমন শঙ্কা প্রকাশ করে সতর্ক করেছে, চব্বিশ ঘন্টার ভেতর দুই-তিন ঘন্টার বেশি স্ক্রিন টাইম একদম নয়।

এই অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট ডঃ স্টিফেন ড্যানিয়েলস বলেন, ‘স্ক্রিন টাইম বৃদ্ধির সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি পায় ও ওবেসিটি দেখা দেয়। যার ফলে দেখা দেয় উচ্চ কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। এই সমস্যাগুলো যদি শিশুকালেই তৈরি হয় তবে পরিণত বয়সেও এই শারীরিক সমস্যাগুলো অব্যাহত থাকে’।

বর্তমান সময়ের ৮-১৮ বছরের শিশু কিশোররা দৈনিক ৭ ঘন্টার বেশি সময় কাটায় মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, অন্যান্য স্ক্রিন বেসড গ্যাজেট ও টিভির স্ক্রিনে।

শুধু তাই নয়, স্ক্রিন টাইম শিশুদের খাওয়ার অভ্যাসেও পরিবর্তন নিয়ে আসে। কারণ, মোবাইলে খেলার সময় খাওয়ানোর ফলে শিশুরা বুঝতে পারে না তাদের পেট ভরে গেছে কিনা, জানান ইন্সটিটিউট আরম্যান্ড ফ্র্যাপ্পিয়ার অ্যান্ড সেইন্ট-জাস্টিন ইউনিভার্সিটি হসপিটাল রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ট্র্যাসিয়া বার্নেট।

তিনি আরো জানান, স্ক্রিন টাইম শিশুদের ঘুমের সাইকেল, সময় ও মানের উপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যার ফলে বার্নেট উপদেশ দেন, বেডরুমে স্ক্রিন জাতীয় কোন গ্যাজেট না রাখার জন্য। শিশুদের গ্যাজেট বিহীন খেলার প্রতি আকৃষ্ট করার চেষ্টা করতে হবে। বুদ্ধিবৃত্তিক কোন খেলার প্রতি তাদের আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করতে হবে।

তবে সবচেয়ে বড় কথা, শিশুদের স্ক্রিন টাইম থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। তাদের সুস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য একদম শুরু থেকেই সকল ধরণের গ্যাজেটকে দূরে রাখতে হবে শিশুদের কাছ থেকে।

News Desk

Recent Posts

গরমে কেন বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি?

শুধু শীত নয়, গরমেও বাড়তে পারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। বিশেষ করে আপনার যদি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা উচ্চ কোলেস্টেরল থাকে তাহলে…

2 hours ago

টয়লেটে মোবাইল ব্যবহার যে কারণে মারাত্মক

বর্তমানে মোবাইল ফোনে ব্যস্ত ছোট-বড় সবাই। শুধু মোবাইল বললে ভুল হবে, স্মার্টফোনের ব্যবহার এখন বিশ্বব্যাপী। সারাক্ষণই এতে ব্যস্ত হয়ে সময়…

3 hours ago

হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে যে সবজি খাবেন

গরমে অতীষ্ট এখন জনজীবন। এ সময় শরীরের উপর বিরাট ধকল যাচ্ছে কমবেশি সবারই। তীব্র গরমে রোদে বাইরের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ…

4 hours ago

শরীরের যে স্থান পরিষ্কার না করলে বাড়বে রোগব্যাধি

শরীর পরিষ্কার রাখতে গোসল করা জরুরি। তবে জানলে অবাক হবেন, গোসল করলেও শরীরের কয়েকটি স্থান পরিষ্কার হয় না সহজে। আর…

6 hours ago

ওষুধ ছাড়াই কিডনির পাথর গলানোর ঘরোয়া উপায়

কিডনিতে পাথর জমার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। যদিও এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্যগত সমস্যা, তবুও এটি কারও কারও ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে।…

6 hours ago

একনাগাড়ে হাঁচি হলে থামাবেন যেভাবে

হাঁচি তো কমবেশি সবাই দেন। সর্দি থেকে শুরু করে ধুলাবালি বা অ্যালার্জির কারণেই মূলত হাঁচি বেশি হয়। বিশেষ করে অ্যালার্জিতে…

10 hours ago