রূপচর্চায় বেকিং সোডার ব্যবহার কতটা জানতে পড়ুন

Written by News Desk

Published on:

রান্নাঘরে নিত্য যাতায়াত আছে কিন্তু বেকিং সোডার সাথে পরিচিতি নেই, এমন মানুষ বাধ্য পাওয়া যাবে না। খাবারের গুণমানকে যে বেশ কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয় বেকিং সোডা সে কথাও বোধহয় অজানা নয় সবার। কিন্তু জানেন কি আপনার বিউটি ট্রিটমেন্ট এও একইরকম ভাবে কাজ করতে পারে এই বস্তুটি।

ব্রণ, ব্ল্যাকহেড, সানবার্ন কমাতে স্ক্রাব ও ক্লিঞ্জারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় সে। কিন্তু বর্তমান দিনে বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও দেখা যাচ্ছে। সেটা নিয়েও আলোচনা হবে আজ। সব মিলিয়ে আপনি ঠিক করবেন বেকিং সোডা আপনার রোজকার রূপচর্চার যোগ্য উপকরণ হয়ে উঠবে কি না!

উপকারী দিক:

স্কিনের জেল্লা ফেরাতে:

স্কিনের জেল্লা ফিরিয়ে আনতে খুবই কার্যকরী বেকিং সোডা। এর জন্য এক টেবিলচামচ বেকিং সোডার সাথে দুই টেবিলচামচ লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন।

তারপর সেটা মুখের সম্পূর্ণ অংশে লাগিয়ে নিন ও ৫-১০মিনিট মতো ছেড়ে রাখুন। তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

এরপর চাইলে ফেসওয়াশ দিয়েও মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। তাতে আরো ভালো কাজ দেবে।

লেবুর এস্কর্বিক এসিড ত্বকের তরতাজা ভাব ফিরিয়ে এনে ত্বক করে তোলে গ্লোয়ি। বেকিং সোডা ভালো এক্সফোলিয়েটর এর কাজ করে ত্বকের রন্ধ্রে জমাট বাঁধা পোরস খুলে দেয়।

ব্রণ দূর করতে:

ব্রণর জন্য যদি আপনি বাইরে সোশ্যাল ইন্টারএকশনে কনফিডেন্সের অভাব অনুভব করেন তো আপনার মুশকিল আসান করবে বেকিং সোডা।

বেকিং সোডা ১ টেবিলচামচ এর সাথে সমপরিমাণ জল মিশিয়ে নিন ও ব্রনর উপর লাগান।এবার ১০-২০ বিরতি নিন।

তারপর ঈষৎ উষ্ণ গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এবার তুলো দিয়ে মুখ সাফ করে ফেলুন।

এটি ত্বকের গভীরে এপিডার্মিস এ গিয়ে ব্রণর ধ্বংস করে।

সানবার্ন প্রতিরোধে:

  • বেকিং সোডা ও নারকেল তেল ২:১ অনুপাতে মিশিয়ে বানিয়ে ফেলুন ঘরোয়া স্ক্রাব। তবে বেশি ড্রাই করবেন না।
  • এবার সোটা চক্রাকারে মুখের উপর লাগিয়ে ম্যাসাজ করে নিন। তার কিছুক্ষণ পর হালকা গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • এরপর মুখে সানস্ক্রিন লাগিয়ে বাইরে বেরোন। সূর্যরশ্মি আপনার ত্বকের কোনো ক্ষতিসাধন করতে পারবেনা। ইউভি সান রে থেকেও সুরক্ষিত থাকতে পারবেন আপনি।

শরীরের কালচে দাগ কমাতে:

বগল, হাঁটু ও কব্জি ইত্যাদিতে অনেকসময়ই মোটা দেহত্বকের জন্য ব্যাকটেরিয়া ও নোংরা জমে কালচে দাগ ধরে যায়।

এর জন্য আলুর রসের সাথে বেকিং সোডা মিশিয়ে জায়গাগুলোতে এপ্লাই করুন। ১০মিনিট পর জল দিয়ে ধুয়ে ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

আলুর রস বের করার জন্য আলু গ্রেট করে তার থেকে নির্যাস বের করে নিতে পারেন।

আলুর অক্সালিক এসিড ও সোডার এন্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান দাগ দূর করবে দু সপ্তাহের মধ্যে।

বলিরেখা নির্মূলে:

হাফ চা চামচ বেকিং সোডার সাথে এক চা চামচ হলুদ এর গুঁড়ো মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ফেলুন ও তাতে এড করুন সামান্য জল।

এবার সেটা লাগিয়ে নিন মুখের সমগ্র অংশে ও ১০মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

হলুদের এন্টি অক্সিডেন্ট ও বেকিং সোডার ক্ষারীয় ধর্ম ত্বকের ভেতরের প্রদাহ হ্রাস করবে ও ধরে রাখবে ত্বকের যৌবন।

বেকিং সোডার সাথে কয়েক ফোঁটা এসেন্সিয়াল অয়েল মিশিয়ে যেখানে ঘাম হয় সেখানে লাগাতে পারেন।প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট এর কাজ করবে।

সতর্কতা:

  • বেকিং সোডার পোশাকি নাম হলো সোডিয়াম বাই-কার্বনেট। এতে আছে সোডিয়াম এলুমিনেট সালফেট এবং মনোক্যালশিয়াম যার পিএইচ এর মান ৭ এর বেশি। আমাদের ত্বকের তুলনায় যা অনেকটা বেশি ফলে তা আশঙ্কার কারণ হতে পারে আমাদের এসিড মেন্টেল এর জন্য।
  • এটি ত্বকের গঠন পাতলা করে ফলে স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে চামড়া। যার ফলে ব্যাকটেরিয়া, সূর্যরশ্মি, দূষণে সহজেই আক্রান্ত হয় স্কিন।
  • সেনসিটিভ স্কিনের জন্য অনেকসময় সারফেস বার্নিং হয়ে লাল লাল ছোপ হতে দেখা গেছে।
  • অনেকসময় মুখের শুষ্কতা বেড়ে গিয়ে দাগ ধরা পড়তে পারে।
  • তাই এটি ব্যবহার করার সময় সযত্নে ব্যবহার করুন।আমরা আপনাদের কাছে এটির ভালো ও খারাপ উভয় দিকই নিরপেক্ষ ভাবে তুলে ধরলাম লুকোছাপা না রেখেই।
  • এবার আপনি কতটা নিরাপদে ও কি মাত্রায় ব্যবহার করবেন বা করবেন না তা নির্ভর করছে একান্তই আপনার ব্যক্তিগত বিচারের উপর।

Related News