পকেটে ফোন, পরিনাম জানলে আঁতকে উঠবেন, জেনেনিন বিস্তারিত ভাবে

ঘর থেকে বেরোলে ফোন সঙ্গে নেওয়া মাস্ট। তাই ফোন বুক পকেট বা প্যান্টের পকেটে রেখেই সো জায়গায় গমন। আর মহিলাদের ক্ষেত্রে পকেট দেওয়া জামা পড়ার তেমন প্রচলন নেই বলে, তারা অনেকেই অন্তর্বাসের ভিতরে মোবাইল রেখে দেন। এতে কি হচ্ছে বা হতে পারে, তা কি জানা আছে? আসলে মোবাইল কোম্পানিগুলি আপনাদের কখনোই তাদের ক্ষতিকারক দিকগুলি বোঝাতে আসবেন না। এমনকি, সামান্য জানিয়ে দেওয়ার দায়িত্বও তারা নেবেন না। কারণ, তারা তাদের কোম্পানির ব্যবসা দেখবেন, তার লাভ দেখবে। আপনার শরীর নিয়ে তাদের কোনও মাথা ব্যাথা থাকার কারণ নেই। মোবাইল ফোনের এরকম বহু ক্ষতিকারক দিক আছে। সেগুলি নিয়েই আজ আলোচনা করবো এই প্রতিবেদনে।

– বহু সমীক্ষায় দেখা গেছে যে পুরুষদের জন্য মোবাইল মোটেও ভাল নয়। এর কারণ, মোবাইল পুরুষদের ক্ষেত্রে বীর্যের পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে। সমীক্ষায় দেখান হয়েছে যে, কথা বলার সময় ফোন যদি পুরুষাঙ্গের কাছাকাছি থাকে, তবে তা বীর্য উৎপাদনকারী কোষের মারাত্মকভাবে ক্ষতি করে। এতে পরিমাণ মতো বীর্য তৈরি হতে পারে না। এতে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত বীর্যের কারণে সন্তান দুর্বল এবং শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মাতে পারেন। যে সকল পুরুষ কানে ফোন ব্যবহার বা করে হেড সেট ব্যবহার করেন এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল ফোন পকেটে থাকে, তাদের ক্ষেত্রে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা সবথেকে বেশি থাকে। ক্লেভল্যান্ড-এ অবস্থিত সেন্টার ফর রিপ্রোডাক্টিভ মেডিসিন-এ মোবাইল ফোনের ওপর একটি সমীক্ষা ছালান হয়। তাতে ৩২ জন পুরুষের ওপর এই সমীক্ষা হয়। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে বীর্যের নমুনা নিয়ে , তা দিয়ে নানা ধরণের পরীক্ষা নিরিক্ষা চালানো হয়। এক সময় নমুনাগুলির কাছাকাছি ফোন রেখে দিয়ে তার প্রভাব পরীক্ষা করা হয় এবং দেখা যায় যে, বীর্যগুলি যথারীতি খতিগ্রস্থ হয়েছে। এরই সঙ্গে বীর্য কম তৈরি বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ হিসাবে দায়ি করা হয়েছে পরিবেশ দূষণ এবং মূত্রসংক্রান্ত প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণকে।

– মোবাইল ফোন থেকে কি সত্যিই ক্যান্সার হয়? এই প্রশ্নটি আমাদের মনে বারবার করে উঠে আসে। আসলে মোবাইল ফোনের থেকে সত্যি সত্যিই ক্যান্সারের সম্ভাবনা সম্পর্কিত। মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে নানা ধরণের ক্যান্সার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। এর বড় কারণ হল, মোবাইল ফোনের ক্ষতিকারক বিকিরণ। এই ক্ষতিকারক বিকিরণের কারণে নারী এবং পুরুষ দুইই দারুণভাবে শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হন। ফলে, আশঙ্কা বাড়ে স্তন ক্যান্সার সহ অন্যান্য ক্যান্সারের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মোবাইল ফোন সহ বিভিন্ন ওয়্যারলেস ডিভাইসকে টু বি রিস্ক-এর আওতায় রেখেছে। এর কারণ এগুলি যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গকে ব্যবহার করে, যা মানুষের মধ্যে ক্যান্সারের প্রবণতা বৃদ্ধি করতে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করে। অনেকেই মনে করেন যে, মোবাইল ,ক্যান্সার হওয়ার অবশ্যম্ভাবী কারণ হিসাবে কাজ করে। এমনকি, এর ওপর বহু পরীক্ষা নিরিক্ষা করে বহু কিছু প্রমাণিতও হয়েছে।

– ক্যালিফোর্নিয়ার ব্রেস্টলিঙ্ক নামক একটি সংস্থায় গবেষণা করে দেখা গেছে যে, স্তন ক্যান্সারের সঙ্গে মোবাইল ফোনের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, যে সমস্ত পরিবারে পূর্বে কোনও ক্যান্সারের ইতিহাস নেই বা আক্রান্তের কোনও তথ্য নেই, সেই পরিবারেও এখন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত, চল্লিশ বছরের মধ্যে যে সকল মহিলা রয়েছেন, তাদের ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা সবথেকে বেশি। গবেষণা থেকে প্রমাণিত, যে সকল নারী অন্তর্বাসের ভিতরে মোবাইল ফোন রাখেন, তাদের প্রত্যেকের বুকের কোনও না কোনও স্থানে টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল এবং এদের সকলের স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
– মোবাইল ফোন যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন। একান্তই ব্যবহার করতে হলে, তাকে এমনভাবে রাখুন যাতে শরীরের কাছাকাছি না থাকে। সবথেকে বড় কথা, মোবাইল ফোন পকেটে রাখবেন না, বেল্টের সঙ্গে আটকাবেন না বা অন্তর্বাসের ভিতর রাখবেন না। সেই সঙ্গে ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোন অফ করে রাখুন।

– কিভাবে আরও সাবধানতা নেওয়া যায়? মোটামুটি এই পাঁচটি জিনিস মাথায় রাখুন। মোবাইল ব্যবহারে তাতে খানিকটা হলেও বিপদকে এড়াতে পারবেন। কানে হেড সেট ব্যবহার করুন। এতে শরীর থেকে দূরে ফোন থাকতে পারবে। ফোনে কথা বলার সময় আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্ক প্রচুর পরিমাণে বিকিরণের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা আমাদের খুবই ক্ষতি করে। তাই কথা বলার সময় হেড ফোন ব্যবহার করুন এবং ফোন কে একটি নির্দিষ্ট দুরত্বে রাখুন। কথা কম বলুন, মেসেজ করুন- যতটা সম্ভব ফোনে কথা কম বলে মেসেজের মাধ্যমে জরুরি কথা বলুন। সিগনাল ভাল থাকলে কথা বলুন। ফোনে যদি নেটওয়ার্কের পরিমাণ কম দেখায়, তাহলে সেই সময় কোনোভাবেই ফোনে কথা বলবেন না। কারণ, ফোনের সিগন্যাল বার কম দেখানো মানেই ফোন নিজের থেকে সিগন্যাল খোঁজার চেষ্টা করছে। এই সময়ে বিকিরণের মাত্রা খুব বেশি থাকে। পকেটে বা বালিশের নিচে ফোন রাখবেন না- যদি ফোন নির্দিষ্ট কিছু সময়ে ব্যবহার না করতে চান, তাহলে ফোন থেকে দূরে থাকুন। এছাড়া, কোনও সময় ফোন বালিশের নীচে নিয়ে শোবেন না। কারণ, ফোন ব্যবহার না করলেও শুধু অন থাকলে, তখনও প্রচুর পরিমাণে বিকিরণ ছড়াতে পারে।

News Desk

Recent Posts

মাছের তেল খেলে শরীরে কী ঘটে?

মাছের তেল শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এ কারণে পুষ্টিবিদরা মাছের তেল খাওয়ার পরামর্শ দেন। এতে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড।…

9 hours ago

গাছপাকা নাকি কৃত্রিমভাবে পাকানো আম চিনবেন যেভাবে

বাজারে এখন পাকা আম উঠতে শুরু করেছে। তবে সেগুলো আদৌ গাছপাকা নাকি কৃত্রিমভাবে পাকানো তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। গাছপাকা হলে…

9 hours ago

বেশি তরমুজ খেলে কি সত্যিই ওজন বাড়ে?

বাজারে এখন তরমুজ বেশ সহজলভ্য। এই রসালো ফল খেতে কমবেশি সবাই পছন্দ করেন। তবে প্রতিদিন এই ফল খাওয়া কি স্বাস্থ্যের…

13 hours ago

ঘরে রক্তচাপ মাপার সময় যে ভুলগুলো করবেন না

হাই প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ হলো একটি ক্রনিক রোগ। অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে এই রোগ থাকে। পাশাপাশি এর কারণে শরীরের অন্যান্য…

1 day ago

সন্তানের মোবাইল আসক্তি কমাতে কী করবেন?

ছোট্ট সোনামনির হাতে কমবেশি সবাই মোবাইল তুলে দেন কোন না কোনো সময়। তবে কিছু সময়ের জন্য মোবাইল দেখা এক সময়…

1 day ago

ক্যানসার হবে কি না জানতে পারবেন ৭ বছর আগেই

ক্যানসারের নাম শুনলেই কমবেশি সবাই আঁতকে ওঠেন। কঠিন এই ব্যাধি থেকে বাঁচতে সচেতনতা জরুরি। ক্যানসার রোগের আগাম খবর পেতে সারা…

2 days ago