কীভাবে বুঝবেন আলসার হয়েছে! জেনেনিন বিস্তারিত

আলসার হয় পাকস্থলীর ভেতরের দেয়ালের স্তরে। আরো হয় অন্ত্রনালীর এক অংশে যাকে বলা হয় ‘স্মল ইনটেস্টাইন’। পাকস্থলীতে আলসার হলো পেপটিক আলসারের সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ। পাচক রস থেকে পাকস্থলীতে রক্ষায় পাতলা শ্লেষ্মার যে স্তর থাকে, তা হ্রাস পেলে দেখা দেয় আলসার। এর পরিমাণ কমে গেলে পাচক রস পাকস্থলীর দেয়াল খেয়ে ফেলতে থাকে।

সাদারণত দুই ধরনের আলসার দেখা যায়। পাকস্থলী এবং অয়েসোফাগাস আলসার। দুটোর আবির্ভাব ঘটে সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে। অফেসোফাগাস সচরাচর দেখা যায় না। এটি হয় বেশি বেশি অ্যালোকোহল সেবনে। অন্যদিকে, এলোমেলো জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসে দেখা দেয় পাকস্থলীর আলসার।

আলসারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি লক্ষণ স্পষ্টভাবে জড়িত। প্রধান লক্ষণটি হলো বুক ও নাভীমূলের মধ্যে ব্যথা হওয়া। আরেকটি বড় লক্ষণ হলো রক্ত বমি হওয়া। এই ব্যথা কিন্তু অ্যান্টাসিডের মতো ওষুধ খেলে আরো বেড়ে যায়।

অনেক কারণে আলসার দেখা দেয়। ব্যাকটেরিয়া আছে যাকে দেখা যায় পাকস্থলির শ্লেষ্মার স্তরে। এরা স্মল ইনটেস্টাইনেরও থাকে। ব্যথা উপশমে নিয়মিত ওষুধ খেলে বাড়তি ঝুঁকি দেখা যায়। এ সময় ধূমপান, অ্যালোকোহল সেবন এবং মসলাদার খাবার খেলে আরো বেশি সমস্যা দানা বাঁধে। পাকস্থলীর ভেতরের দেয়ালে প্রদাহ দেখা দেয়। সার্জারি বা সার্জারি ছাড়া চিকিৎসাব্যবস্থার মাধ্যমে আলসার থেকে মুক্তি মেলে।
এখানে এই অতি পরিচিত রোগের কারণ ও লক্ষণগুলো জেনে নেওয়া যাক।

সাধারণ কারণ
১. হেলিকোবেকটার পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া আলসারের কারণ হতে পারে। পাকস্থলীর ভেতরের দেয়ালে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। এই সংক্রমণ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়াতে পারে। চুমু, খাবার বা পানি আদান-প্রদানের কারণে এমনটা হয়।

২. নিয়মিত ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার জন্যে একই ঘটনা ঘটে। ননস্টেরয়ডাল অ্যান্টি-ইনফ্লামাটরি ওষুধ (এনএসএআইডি) পাকস্থলী এবং স্মল ইনটেস্টাইনে প্রদাহের কারণ হয়। বয়স্কদের মধ্যে পেপটিক আলসার অনেক বেশি দেখা যায় অতিমাত্রায় ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার কারণে।

৩. অন্যান্য ওষুধের কারণে আলসার দেখা দেয়। স্টেরয়েড, অ্যান্টিকগুলান্ট, কমমাত্রার অ্যাসপিরিন খেলে আলসার হতে পারে।

লক্ষণ
আলসার যাদের রয়েছে বা হতে চলেছে তারা চোখ-কান খোলা রাখলে লক্ষণগুলো বুঝতে পারবেন। খেয়াল রাখুন-

১. পেটের ওপর ও মাঝামাঝি অংশে ব্যথা হবে। মনে হবে যেন পুড়ে যাচ্ছে। কেবলমাত্রা এন্টাসিড খেলেই এই ব্যথা থেকে মুক্তি মেলে।

২. খাওয়ার পর আলসারের ব্যথা নির্ভর করে ঠিক কোন স্থানে রোগ হয়েছে তার ওপর। গ্যাস্ট্রিক আলসার হলে খাওয়ার পর পরই পেটে ব্যথা বাড়তে পারে। আর ডুয়োডেনাল আলসার হলে পেটের ব্যথা বাড়ে খাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর।

৩. খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেটে ব্যথা শুরু হয়। এটা আলসারের লক্ষণ।

৪. ক্রমাগত ঢেঁকুর ওঠা এবং বমি ভাব আসা।

৫. অবসাদ ভাব ঘিরে ধরে। সাধারণত বমির আগে দিয়ে এমনটা মনে হয়।

News Desk

Recent Posts

ক্যানসার হবে কি না জানতে পারবেন ৭ বছর আগেই

ক্যানসারের নাম শুনলেই কমবেশি সবাই আঁতকে ওঠেন। কঠিন এই ব্যাধি থেকে বাঁচতে সচেতনতা জরুরি। ক্যানসার রোগের আগাম খবর পেতে সারা…

2 hours ago

নেবুলাইজার কেন ব্যবহার করা হয়?

হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও অন্যান্য শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। রোগী যখন ইনহেলারের…

20 hours ago

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

1 day ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

1 day ago

গরমে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

হঠাৎ করেই কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎই বিকল হতে পারে কিডনি। মূলত তাপমাত্রা ও…

1 day ago

খাবার কেনার আগে প্যাকেটের কোন লেখা অবশ্যই পড়বেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই এখন রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। এ কারণে বেশিরভাগ খাবারই এখন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। প্রায়…

2 days ago