খাবার নিয়ে যত প্রচলিত ধারণা এখনও অনেকের মনে বসবাস করে থাকে, দেখেনিন

খাবার নিয়ে আমাদের রয়েছে অনেক ভুল ধারণা। বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে খাবার সংক্রান্ত কিছু শুনে অনেক সময় আমরা সেটাই মেনে চলতে থাকি। যাচাই করে দেখি না, সেটা ঠিক না ভুল। খাবার নিয়ে এরকমই কয়েকটি ভুল ধারণা ও তার সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া হল আজ।

* কাঁচা লবণ খাওয়া খারাপ : কাঁচা আর রান্না করা লবণের মধ্যে কোনো ফারাক নেই। লবণ কতটা খাচ্ছি সেটাই বড় ব্যাপার। মাত্রাতিরিক্ত লবণ শরীরের পক্ষে ভালো নয়। তাই কাঁচা বা রান্না যেটাই হোক না কেন লবণ খেতে হবে পরিমিত।

* মিষ্টি খেলে কৃমি হয় : অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললেই কৃমির সংক্রমণ ঘটে। মিষ্টি খাবারের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।

* কীটনাশক দেওয়া শস্য ক্ষতিকর : ধান ও গম খেতে যেসব কীটনাশক দেওয়া হয় সেসব কীটনাশকের প্রতিক্রিয়া ধান বা গমে ২১ দিন থাকতে পারে। তারপর ব্যবহার করা নিরাপদ। ২১ দিন পর ব্যবহারে ক্ষতির কিছু নেই।

* টক ফল খেলে সেলাই পেঁকে যায় : টক ফলের রসে থাকে ভিটামিন সি। তাই সেলাই পাঁকা নয় বরং ফলের রস সেলাই শুকাতে সাহায্য করে।

* ফার্মের ডিম ভালো নয়, দেশি ডিম ভালো : আমাদের অনেকেরই একটা ধারণা আছে দেশি ডিম ফার্মের ডিমের চেয়ে পুষ্টিকর ও নিরাপদ। কিন্তু এটা একেবারেই ভুল ধারণা। ফার্মের ডিম পাওয়া যায় স্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে এবং এই ডিমের ওজন দেশি ডিমের তুলনায় বেশি। ফার্মের ডিম দেশি ডিমের চেয়ে অধিক পুষ্টিকর।

* কলা খেলে ঠাণ্ডা বেড়ে যায় : অনেকেই ঠাণ্ডা লাগলে কলা খেতে চান না এই ভয়ে যে, কলা খেলে ঠাণ্ডা বেড়ে যাবে। কিন্তু কলা খেলে ঠাণ্ডা লাগবে বা ঠাণ্ডা বাড়বে এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ঠাণ্ডা লাগার একমাত্র কারণ জীবাণুর সংক্রমণ।

* ইউরিয়া দিয়ে ভাজা মুড়ি খারাপ : ইউরিয়া শরীরের বর্জ্য পদার্থ। রক্তে এর একটা নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। ক্রনিক রেনাল ফেলিওরে রক্তে এর মাত্রা বেড়ে যায়। তাই রেনাল ফেলিওর রোগীদের এই মুড়ি খাওয়া ঠিক নয়। কিন্তু সাধারণ সুস্থ মানুষের ইউরিয়া দিয়ে ভাজা মুড়িতে কোনো ক্ষতি হবে না।

* চিকেনপক্স হলে মাছ-মাংস খাওয়া যাবে না : এটি পুরপুরি ভুল ধারণা। বরং অসুখ হলে শরীরে প্রোটিনের বেশি প্রয়োজন হয়। এই সময় মাছ-মাংস না খেলে শরীর আরো দুর্বল হয়ে পড়বে। তাই চিকেনপক্স হলে বেশি করে মাছ-মাংস খেতে হবে।

* ফল খেলে অ্যাসিড হয় : বিভিন্ন ফলে নানারকম অ্যাসিড থাকে, যেমন- সাইট্রিক অ্যাসিড, অক্সালিক অ্যাসিড, টারটারিক অ্যাসিড ইত্যাদি। এইসব আসিডের সঙ্গে পাকস্থলীর হাইড্রোক্লোরিক আসিডের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং ফলের কিছু অ্যাসিড পাকস্থলীর সোডিয়াম লবণের সঙ্গে মিশে একধরনের যৌগপদার্থ তৈরি করে, যা হজমে সাহায্য করে। তাই ফল খেলে অ্যাসিড হয় না, ফল হজমেই সাহায্য করে।

News Desk

Recent Posts

নেবুলাইজার কেন ব্যবহার করা হয়?

হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও অন্যান্য শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। রোগী যখন ইনহেলারের…

12 hours ago

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

19 hours ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

20 hours ago

গরমে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

হঠাৎ করেই কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎই বিকল হতে পারে কিডনি। মূলত তাপমাত্রা ও…

20 hours ago

খাবার কেনার আগে প্যাকেটের কোন লেখা অবশ্যই পড়বেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই এখন রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। এ কারণে বেশিরভাগ খাবারই এখন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। প্রায়…

2 days ago

বিশ্বব্যাপী যে কারণে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব

গরমে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। একই সঙ্গে বাড়ে মৃতের সংখ্যাও। আজ ১৬ মে জাতীয় ডেঙ্গু দিবস। ডেঙ্গু…

2 days ago