আপনি কি প্রায়ই শ্বাসকষ্টে ভুগছেন? তাহলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ, দেখেনিন

শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা সাধারণ ভেবে অনেকেই এড়িয়ে যান। এ কারণেই শরীরে বিভিন্ন রোগ বিস্তার লাভ করে। বর্তমানে কমবয়সীদের মধ্যেও বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে সুস্থ স্বাভাবিক ও ফিট মানুষও হঠাৎ করেই হার্ট অ্যাটাক করছেন! এ কারণে বিভিন্ন লক্ষণ শরীরে দেখা দিলে অবশ্যই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

হার্টের কাজ করার জন্য অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রয়োজন। যদি প্লাক (যা চর্বি, কোলেস্টেরল ও অন্যান্য পদার্থের সমন্বয়ে থাকে) হৃদপিণ্ডে রক্ত বহনকারী ধমনীতে তৈরি হয়, তাহলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আর হৃদপিণ্ডে দীর্ঘক্ষণ রক্তপ্রবাহ না হলে হঠাৎ করেই হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। এ সময় শরীরে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়, যার মধ্যে অন্যতম হলো শ্বাসকষ্ট।
ধমনী ব্লক হয়ে যাওয়ার কারণে রক্তপ্রবাহ না হওয়ায় রোগী শুধু বুকে ব্যথাই নয় মাথা ঘোরা, বুকে আঁটসাঁট ভাব ও শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ অনুভব করেন। এ সময় লক্ষণ টের পেলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে রোগীকে নিয়ে গেলে তিনি বেঁচে যেতে পারেন।

সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের ৪ লক্ষণ জেনে রাখুন-

বুকে ব্যথা, চাপ, পূর্ণতা, বা অস্বস্তি
কখনো কখনো হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা হঠাৎ ও তীব্র হয়, আবার অনেকের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা হয় না। আসলে বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাকের রোগীর বুকের মাঝখানে হালকা ব্যথা বা অস্বস্তিভাব থাকে।
এই লক্ষণগুলো সাধারণত ধীরে ধীরে শুরু হয়, আবার চলে গিয়ে ফিরেও আসতে পারে। অনেক সময় রোগীরা এ ধরনের লক্ষণকে গ্যাস্ট্রিক ভেবে ভুল করেন।

শরীরের বিভিন্ন স্থানে অস্বস্তি
হার্ট অ্যাটাক শুধু হৃদয়কে প্রভাবিত করে না, হৃদযন্ত্রে কোনো সমস্যা হলো তার প্রভাব পুরো শরীরেই পড়ে। এক্ষেত্রে শরীরের বিভিন্ন স্থান যেমন- ঘাড়, চোয়াল, পেট কিংবা ঘাড়ে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন।
এই লক্ষণগুলো এক ব্যক্তি থেকে অন্যজনে পরিবর্তিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, অনেকে হার্ট অ্যাটাকের আগে পিঠে তীব্র ব্যথা অনুভব করে। আবার অনেক পিঠে ভারি চাপ অনুভব করেন। এসব লক্ষণ কখনো উপেক্ষা করবেন না।

শ্বাসকষ্ট ও মাথা ঘোরা
সামান্য হাঁটাহাঁটি করলেও কি আপনি হাঁপিয়ে উঠছেন? এটিও কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের আগাম লক্ষণ হতে পারে। এর কারণ হতে পারে আপনার হৃদয় শরীরের বাকি অংশে রক্ত পাম্প করতে সক্ষম নয়। শ্বাসকষ্ট বুকে ব্যথার সঙ্গে বা হঠাৎ করেই হতে পারে। এটিও কিন্তু একটি নীরব হার্ট অ্যাটাকের একটি সাধারণ লক্ষণ।
এর সঙ্গে মাথা ঘোরা বা হালকা মাথাও অনুভব করতে পারেন। এ পর্যায়ে অনেকেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই এমনটি ঘটতে পারে। তবে নারীদের শ্বাসকষ্ট অনুভব করা আরও সাধারণ।

বমি বমি ভাব ও ঠান্ডা ঘাম
ঠান্ডা ঘামে ঘুম থেকে ওঠা, বমি বমি ভাব ও বমি ফ্লুর লক্ষণ হতে পারে। তবে এগুলো কিন্তু নীরব হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণও হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের নীরব লক্ষণগুলো কখনো উপেক্ষা করবেন না। এ বিষয়ে সবারই সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখবেন, হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায় হলো হার্ট পরীক্ষা করা। এর পাশাপাশি রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার মাধ্যমে হৃদযন্ত্রও সুস্থ রাখতে পারবেন।

News Desk

Recent Posts

ওজন কমে যাওয়া কঠিন যে ৫ রোগের লক্ষণ হতে পারে

অতিরিক্ত ওজনে যারা ভুগছেন সামান্য ওজন ঝরতেই তারা খুশি হয়ে যান! তবে ডায়েট বা শরীরচর্চা ছাড়াও যদি হঠাৎ করে আপনার…

2 hours ago

জ্বরসহ কী কী লক্ষণ দেখলে ডেঙ্গু টেস্ট করানো জরুরি?

দেশে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। তাই এখন কারো জ্বর হলেই ঘরের সবাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন ডেঙ্গু ভেবে। ডেঙ্গু জ্বর একটি…

18 hours ago

যে রঙের কাপড়ে মশা বেশি আকৃষ্ট হয়

মশা কমবেশি সবাইকেই কামড়ে থাকে। তবে কারও কারও একটু বেশিই কামড়ায়! এর কারণ কী জানেন? আসলে মশা কাকে বেশি আক্রমণ…

22 hours ago

ভিটামিন ডি’র ঘাটতি করোনা সংক্রমণে বিপদ বাড়াচ্ছে

ভিটামিন শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই ভিটামিন শুধু যে হাড়ের স্বাস্থ্যই ভালো রাখে তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকেও…

24 hours ago

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবে যে যোগব্যায়াম

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশ মুশকিল। যদিও সঠিক জীবনযাত্রা ও শরীরচর্চার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এমনকি এর থেকে মুক্তিও মেলে।…

2 days ago

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে হতে পারে যেসব রোগ

সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম অধিক জরুরি। এ কারণেই প্রতিদিন নির্দিষ্ট কয়েক ঘণ্টা সবাইকে ঘুমাতে হয়। ঘুমানোর ফলেই শরীরে মেলে বিশ্রাম। শুধু…

2 days ago