ভ্যাপসা গরমে সুস্থ থাকতে আপনার যা করণীয়, দেখেনিন একঝলকে

ভ্যাপসা গরমের কারণে সবার জীবন অতিষ্ঠ। নানা রকম রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই। অনেকেই গরম থেকে স্বস্তি পেতে এসির উপর ভরসা করছেন।

তবে এমন গরমে শুধু এসির উপর ভরসা না করে এর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। নইলে বার বার অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয় থেকেই যায়।

ভ্যাপসা গরমে কি ধরনের অসুস্থতা হতে পারে

>> ঘাম ও চড়া রোদের কারণে র‍্যাশ বেরোতে পারে চামড়ায়।

>> হিট সিনকোপ নামের সমস্যায় রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন।

>> এমন গরমে অতিরিক্ত কাজ, খেলা বা ব্যায়াম করলে পেশিতে তীব্র ব্যথা হতে পারে। একে বলে হিট ক্র্যাম্প।

>> রান্নারান্না সেরেই এসি চালিয়ে বিশ্রাম নিলে, বাইরে থেকে এসে ঘাম না শুকিয়ে ঠাণ্ডা জল খেলে বা ঠাণ্ডা ঘরে বসে পড়ার মতো অনিয়ম করলে জ্বর, সর্দি ও কাশি এড়ানো খুবই কঠিন।

>> তীব্র রোদের দিন হিট এক্সারসানে খুব বেশি ঘাম হয়। রোগী ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়েন। দ্রুত শ্বাস পড়ে। তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা না নিলে এখান থেকে হিট স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

>> হিট স্ট্রোকে তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কম থাকায় হঠাৎ শরীরের তাপ বেড়ে যেতে পারে। তা ১০৫ ডিগ্রির উপরও হতে পারে। এটা কিন্তু জ্বর নয়। এর সঙ্গে ঘাম হয় না বলে শরীরের তাপ বেরোতে পারে না। এর ফলে বিপদ বাড়ে।

>> সারাদিন ভ্যাপসা গরমের পর সন্ধ্যার দিকে ঝড়বৃষ্টি এলে হঠাৎ ৭–৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমে যায়। অ্যাজমা রোগীদের এই সময় যত্নে রাখুন। তাপমাত্রার ওঠানামায় এদের অ্যাটাক হতে পারে।

এসব বিপদ ঠেকাতে যা করবেন 

>> রোদে বেরুলে ছাতা, টুপি, সানগ্লাস ও হালকা সুতির পোশাক পরুন।

>> পেশিতে ব্যথা হলে অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা জায়গায় গিয়ে ব্যথা না কমা পর্যন্ত বিশ্রাম নিন। ও্যর স্যালাইন খেতে পারেন।

>> রোদে বা গরমের মধ্যে অনেকক্ষণ টানা কাজ করবেন না। কাজের ফাঁকে ঠাণ্ডা জায়গায় বসে বিশ্রাম নিয়ে আবার কাজে ফিরুন।

>> প্রসাব হলুদ হলে বা প্রসাবের পরিমাণ কমে গেলে জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান। জল খাওয়ায় বিধি-নিষেধ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

>> হাঁপানি রোগীরা অবস্থা বুঝে এই সময় ইনহেলারের একটা পাফ নিন। বা যদি মনে হয় কষ্ট শুরু হতে পারে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধের ডোজ বাড়াতে পারেন।

>> ডিহাইড্রেশন এড়াতে কফি ও কোমল পানীয় খাওয়া কমান। হালকা খাবার খান, পেট একটু খালি রাখুন। বেশি খেয়ে রোদে বেরুবেন না আবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুয়েও পড়বেন না।

>> চড়া রোদ এড়ানো সম্ভব না হলে বেরুনোর আগে এক গ্লাস জল খান। প্রেসার-সুগার না থাকলে লবণ-চিনির জল বা ও্যর স্যালাইন খেতে পারেন। ডাবের জল, টাটকা ফলের রস বা ঘোলও খেতে পারেন।

>> হিট এক্সারশন হলে গরম থেকে সরে গিয়ে বিশ্রাম নিন। কষ্ট না কমা পর্যন্ত স্যালাইন জল বা ডাবের জলও খেতে পারেন। কষ্ট কমতে শুরু করার পর হাত-মুখ ধুয়ে ফ্যান বা এসি চালিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন।

>> অজ্ঞান হয়ে গেলে খুব তাড়াতাড়ি তাকে গরম থেকে সরিয়ে ঠাণ্ডা জল দিয়ে বার বার শরীর মুছে এবং মাথা ধোয়াতে থাকুন। ফ্যান বা এসি চালিয়ে দিন। স্বাভাবিক ঠাণ্ডা জলে স্নানও করাতে পারেন। জল শূন্যতা পূরণের জন্য ডাবের জল কিংবা ও্যর স্যালাইন খাওয়ান। বেশি জটিল মনে হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

News Desk

Recent Posts

ক্যানসার হবে কি না জানতে পারবেন ৭ বছর আগেই

ক্যানসারের নাম শুনলেই কমবেশি সবাই আঁতকে ওঠেন। কঠিন এই ব্যাধি থেকে বাঁচতে সচেতনতা জরুরি। ক্যানসার রোগের আগাম খবর পেতে সারা…

1 hour ago

নেবুলাইজার কেন ব্যবহার করা হয়?

হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও অন্যান্য শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। রোগী যখন ইনহেলারের…

19 hours ago

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

1 day ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

1 day ago

গরমে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

হঠাৎ করেই কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎই বিকল হতে পারে কিডনি। মূলত তাপমাত্রা ও…

1 day ago

খাবার কেনার আগে প্যাকেটের কোন লেখা অবশ্যই পড়বেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই এখন রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। এ কারণে বেশিরভাগ খাবারই এখন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। প্রায়…

2 days ago