মশার কামড়ের তাৎক্ষণিক প্রতিকারে ঘরোয়া টোটকা!

মশার কামড় মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক। মশার ঝুঁকি ঘরে-বাইরে সর্বত্রই। মশা ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগ ব্যাধি ছড়ায়। তবে মশার কামড়ের সবচেয়ে বিরক্তিকর হলো তাৎক্ষণিক চুলকানি, স্ক্র্যাচিং এবং ফোলাভাব।

আপনি জেনে বিস্মিত হবেন আপনার রান্নাঘরে এমন কতগুলো জিনিস রয়েছে, যা আপনাকে মশার কামড়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করবে। এই সহজ ঘরোয়া প্রতিকারগুলো মশার কামড়ের ফলে সৃষ্ট চুলকানি ও ফোলারোধ করবে।

মশার কামড়ের চিকিৎসায় ঘরোয়া কিছু উপায়:

বরফ:
ঠান্ডা তাপমাত্রা প্রদাহ হ্রাস করতে সহায়তা করে। তবে ত্বকে সরাসরি বরফ লাগাবেন না, আইস প্যাক ব্যবহার করুন। আক্রান্ত স্থানে ১০-১৫ মিনিটের জন্য আইস প্যাক আলতো করে লাগিয়ে রাখুন। এছাড়াও আপনি ত্বকের ওপরে একটি ভেজা কাপড় দিয়ে তার উপর বরফ রাখতে পারেন।

অ্যালোভেরা:
অ্যালোভেরা প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে। এটি চুলকানি, ফোলাভাব হ্রাস করে দ্রুত নিরাময়ে সহায়তা করে। এটি রোদে পোড়া দাগও দূর করে। অ্যালোভেরার খোসা ছাড়িয়ে জেলটি বের করে নিতে হবে। জেলটি প্রায় ১০-১৫ মিনিটের জন্য ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিন। ঠান্ডা হয়ে এলে ত্বকে আলতো করে ঘষুণ।

লেবুর রস:
লেবু মূলত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং ব্যাথানাশক বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। লেবু ফোলাভাব এবং ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। লেবুর একটা টুকরো নিয়ে আক্রান্ত স্থানে ঘষুণ। এছাড়াও আপনি লেবুর রস ও তুলসী দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে তা আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন।

বেকিং সোডা এবং অ্যাপল সিডার ভিনেগার:
বেকিং সোডা ক্ষারীয় হওয়ার কারণে আক্রান্ত স্থানের পিএইচ স্তরকে প্রতিরোধ করে মশার কামড়ের চুলকানি দূর করতে সহায়তা করে। জলে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান। এটি ১০-২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপরে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

অ্যাপল সিডার ভিনেগার অন্যান্য ভিনগারের তুলনায় কম অ্যাসিডিক। তাই এটি প্রাকৃতিকভাবেই পিএইচ স্তরের ক্ষত সারিয়ে উঠতে সহায়তা করে। এটি আপনার ত্বকে সরাসরি লাগিয়ে কিংবা কয়েক ফোটা গোসলের জলে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন।

পেঁয়াজ ও রসুন:
ঝালযুক্ত এই উপাদানগুলো ফোলাভাব কমাতে এবং চুলকানি প্রশমিত করতে সহায়তা করে। তাছাড়াও এগুলোর তীব্র গন্ধ মশা এবং পোকামাকড় দূরে রাখে। কাঁচা পেঁয়াজ বা রসুন আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং পরে ধুয়ে ফেলুন।

লবণ:
মশার কামড়ের চিকিৎসার একটি সহজ প্রতিকার লবণ। অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি ব্যাথা উপসমে সহায়ক। জলে কিছুটা লবণ মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে মিশ্রণটি লাগিয়ে কিছুক্ষণ পরে ধুয়ে ফেলুন।

মধু:
মধুতে অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তাই এটি রোগ সংক্রামিত হতে বাধা দেয়। তবে কাঁচা মধু ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। চুলকানো স্থানে কয়েক ফোঁটা মধু ব্যবহারে প্রদাহ হ্রাস করবে।

এসেনসিয়াল অয়েল:
চা, রোজমেরি, ল্যাভেন্ডার, নিম এবং সিডার জাতীয় কিছু তেল মশার কামড়ের জন্য অস্থায়ী স্বস্তি পেতে সহায়তা করবে। অল্প পরিমাণ জল মিশিয়ে পাতলা করে আক্রান্ত স্থানে আলতোভাবে ঘষুন। এতে তাৎক্ষণিক প্রতিকার পাবেন।

News Desk

Recent Posts

ওজন কমে যাওয়া কঠিন যে ৫ রোগের লক্ষণ হতে পারে

অতিরিক্ত ওজনে যারা ভুগছেন সামান্য ওজন ঝরতেই তারা খুশি হয়ে যান! তবে ডায়েট বা শরীরচর্চা ছাড়াও যদি হঠাৎ করে আপনার…

2 hours ago

জ্বরসহ কী কী লক্ষণ দেখলে ডেঙ্গু টেস্ট করানো জরুরি?

দেশে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। তাই এখন কারো জ্বর হলেই ঘরের সবাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন ডেঙ্গু ভেবে। ডেঙ্গু জ্বর একটি…

19 hours ago

যে রঙের কাপড়ে মশা বেশি আকৃষ্ট হয়

মশা কমবেশি সবাইকেই কামড়ে থাকে। তবে কারও কারও একটু বেশিই কামড়ায়! এর কারণ কী জানেন? আসলে মশা কাকে বেশি আক্রমণ…

22 hours ago

ভিটামিন ডি’র ঘাটতি করোনা সংক্রমণে বিপদ বাড়াচ্ছে

ভিটামিন শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই ভিটামিন শুধু যে হাড়ের স্বাস্থ্যই ভালো রাখে তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকেও…

24 hours ago

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবে যে যোগব্যায়াম

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশ মুশকিল। যদিও সঠিক জীবনযাত্রা ও শরীরচর্চার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এমনকি এর থেকে মুক্তিও মেলে।…

2 days ago

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে হতে পারে যেসব রোগ

সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম অধিক জরুরি। এ কারণেই প্রতিদিন নির্দিষ্ট কয়েক ঘণ্টা সবাইকে ঘুমাতে হয়। ঘুমানোর ফলেই শরীরে মেলে বিশ্রাম। শুধু…

2 days ago