নিম পাতা ভেজানো জলের যত উপকার, জানলে অবাক হবেন আপনিও

নিমপাতার ব্যবহার সেই প্রাচীন কাল থেকেই হয়ে আসছে। প্রায় ৫,০০০ বছর ধরে নানারকম রোগ এবং উপসর্গের সঙ্গে লড়াই করে নিমপাতা আজো এক নম্বরে। অনেকেই আছেন, যারা সকাল বেলা খালি পেটে নিমপাতা বা নিমপাতা ভেজানো জল খান। কিন্তু ত্বকের সুরক্ষায় নিমের ভূমিকা আমরা কজনই বা জানি? তাই তো বোল্ডস্কাই আপনাদের জানাবে নিমপাতা ভেজানো জলে স্নান করলে আমরা কতটা উপকৃত হতে পারি।

১. ত্বকের নানা সমস্যা দূর করে নিমের পাতা থেকে কাণ্ড অবধি প্রায় ১৪০ ধরণের উপকারি উপাদানের সন্ধান মেলে। যেগুলি জীবাণুনাশক হিসাবে কাজ করে। তাই তো যে কোনও কারণে ত্বকে কোনও জীবাণু সংক্রমন হলে নিমপাতা ফোটানো জলে স্নান করা উচিত। এমনটা করলে কয়েকদিনের মধ্যেই সংক্রমণ পুরোপুরিভাবে সেরে যায়। প্রসঙ্গত, চিকেন পক্সের সময় নিমপাতা ভেজানো জলে স্নান করালে খুবই উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও ত্বকে ঘা বা সোরোসিসের প্রকোপ কমাতেও নিম পাতার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

২. ব্রণ, ব্ল্যাকহেড এবং ক্ষত সারায়: নিমপাতা ভেজানো জলে স্নান করলে অ্যাকনে এবং ব্ল্যাকহেডের সমস্যা কমে যায়। এছাড়াও শরীরের কোনও স্থানে আঘাত লেগে কেটে গেলে তাতেও নিমপাতা ভেজানো জল লাগালে দারুণ উপকার পাওয়া যায়।

৩. গায়ের দুর্গন্ধ দূর করে: দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রতিদিন নিয়ম করে নিমপাতা ভেজানো জলে স্নান করলে শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর সব ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। ফলে গায়ের দুর্গন্ধ দূর হয়।

৪. খুশকির প্রকোপ কমায়: চুলের যে কোনও সমস্যায় নিমপাতা খুবই উপকারি ভূমিকা নেয়। যেমন ধরুন, খুশকির সমস্যায় ভুগলে নিয়মিত নিমপাতা লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ এমনটা করলে এই ধরনের ত্বকের রোগ একেবারে সেরে যায়। শুধু তাই নয়, ধুলো ময়লা জমে চুলের গোঁড়া নোংরা হয়ে যায় অনেকেরই। এক্ষেত্রেও স্কাল্পে নিম পাতা লাগালে উপকার পাওয়া যায়। অন্যদিকে নিমপাতা ভেজানো জল দিয়ে চুল ধুলে চুল মজবুত এবং উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

৫. চোখের সংক্রমণের চিকিৎসায় কাজে আসে: নিমপাতায় উপস্থিত জীবাণুনাশক উপাদান চোখের সংক্রমণ কমাতে দারুন কাজে আসে। ধুলো, ময়লার কারণে আমরা অনেক সময়ই চোখের সংক্রমণে ভুগে থাকি। আর এই কারণেই নিমাপাতা ভেজানো জলে স্নান করলে বা চোখ ধুলে এই সব সমস্যা দারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।

কিভাবে বানাবেন নিমের জল-

১. পরিমাণ মতো পরিষ্কার এবং তাজা নিমপাতা জোগাড় করুন।

২. ভাল করে জল দিয়ে ধুয়ে নিন পাতাগুলি।

৩. একটি পাত্রে জলের মধ্যে নিমপাতা দিয়ে ফুটতে দিন।

৪. জল ফুটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস নিভিয়ে দেবেন না। আরও ৩ থেক ৫ মিনিট জলটা ফুটতে দিন।

৫. জলের রঙ সামান্য হলদে হয়ে এলে এবং নিমের গন্ধ বেরোলে গ্যাস বন্ধ করে দিন।

৬. গরম জলটা ছেঁকে নিয়ে বালতির ঠাণ্ডা জলের সঙ্গে মিশিয়ে স্নান করুন।

News Desk

Recent Posts

জ্বরসহ কী কী লক্ষণ দেখলে ডেঙ্গু টেস্ট করানো জরুরি?

দেশে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। তাই এখন কারো জ্বর হলেই ঘরের সবাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন ডেঙ্গু ভেবে। ডেঙ্গু জ্বর একটি…

12 hours ago

যে রঙের কাপড়ে মশা বেশি আকৃষ্ট হয়

মশা কমবেশি সবাইকেই কামড়ে থাকে। তবে কারও কারও একটু বেশিই কামড়ায়! এর কারণ কী জানেন? আসলে মশা কাকে বেশি আক্রমণ…

16 hours ago

ভিটামিন ডি’র ঘাটতি করোনা সংক্রমণে বিপদ বাড়াচ্ছে

ভিটামিন শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই ভিটামিন শুধু যে হাড়ের স্বাস্থ্যই ভালো রাখে তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকেও…

17 hours ago

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবে যে যোগব্যায়াম

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশ মুশকিল। যদিও সঠিক জীবনযাত্রা ও শরীরচর্চার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এমনকি এর থেকে মুক্তিও মেলে।…

2 days ago

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে হতে পারে যেসব রোগ

সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম অধিক জরুরি। এ কারণেই প্রতিদিন নির্দিষ্ট কয়েক ঘণ্টা সবাইকে ঘুমাতে হয়। ঘুমানোর ফলেই শরীরে মেলে বিশ্রাম। শুধু…

2 days ago

প্রাকৃতিক উপায়ে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াবেন যেভাবে

রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর অনেকেই জানতে পারেন হিমোগ্লোবিনের ঘাটতিতে ভুগছেন তিনি। এ সমস্যায় কমবেশি সবাই ভুগে থাকেন। তবে ক্রমশ…

2 days ago