ধূমপান ছেড়ে দিলে কি ওজন বৃদ্ধি পায়? জেনেনিন কি বলছে চিকিৎসকরা

মানুষ জেনে শুনে যেসব ভুল করে ধূমপান তার মধ্যে অন্যতম। ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। একবার এই নেশায় আসক্ত হলে, তা ছেড়ে দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ ধূমপান এমন একটি নেশা, যেটি শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ওপরে সরাসরি প্রভাব ফেলে।

যারা ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাদের মধ্যে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। ওজন বেড়ে যাওয়া তার মধ্যে একটি। তবে তার মানে এই নয় যে, আপনি ধূমপান করা চালিয়ে যাবেন। ধূমপান আপনার ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের রোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্ম দিতে পারে।

ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর ওজন বৃদ্ধি কারণ

জার্নাল ড্রাগ অ্যান্ড অ্যালকোহল ডিপেন্ডেন্সে প্রকাশিত এক গবেষণার ফলে জানা গেছে যে, ধূমপান ছাড়ার সময় ওজন বৃদ্ধির জন্য আসলে দ্বায়ী আমাদের মস্তিষ্ক। আর নিকোটিন প্রত্যাহার করলে তা অস্বাস্থ্যকর এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের জন্য আমাদের আকাঙ্ক্ষা বাড়ায়। এছাড়া সিগারেট ক্ষুধা কমায়।

সুতরাং যখন আপনি ধূমপান ছেড়ে দেন, তখন আপনি ক্ষুধার্ত বোধ করতে পারেন এবং স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খেতে পারেন। ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করার সময় এসব কারণ ওজন বৃদ্ধির জন্য দ্বায়ী। আর ধূমপান ছাড়ার পরে ওজন বৃদ্ধির আরেকটি কারণ হলো ধীরগতিতে বিপাক হওয়া, যা নিকোটিনের অভাবে ঘটে।

ধূমপান ছাড়ার পর যেভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন

আপনি যদি ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করেন তা হলে শুরু থেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেয়া ভালো। ওজন কমানোর চেষ্টা করলে আপনার যে বিষয়গুলোতে খেয়াল রাখা জরুরি-

সময়মতো ঘুমান

আপনি যখন ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তখন আপনার ঘুমের সময়সূচিটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনিদ্রা বা কম ঘুম হলে তা সকালে অস্বাস্থ্যকর খাবারের জন্য আপনার ক্ষুধা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এছাড়া এটি মেজাজ পরিবর্তন ও বিরক্তিরও সৃষ্টি করতে পারে।

সক্রিয় থাকুন

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনি যদি শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন। এ জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়াম আপনার বিপাককে বাড়ায় এবং আপনাকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্যালোরি বার্ণ করতে সহায়তা করে। এজন্য প্রতিদিন অন্তত ৪৫ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত।

আশযুক্ত খাবার খান

ফাইবারযুক্ত খাবার আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা রাখতে সহায়তা করে। ফলে এগুলো আপনাকে চর্বিযুক্ত এবং চিনিযুক্ত খাবার ও অস্বাস্থ্যকর ক্ষুধা থেকে বিরত রাখতে পারে। তাই ওজন কমাতে চাইলে রঙিন সবজি, ফল এবং স্বাস্থ্যকর চর্বিজাতীয় ফাইবারযুক্ত খাবার খান।

নিজেকে খুব ক্ষুধার্ত হতে দেওয়া যাবে না

আপনার খাওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময়সূচি তৈরি করুন এই অনুযায়ী খাওয়ার চেষ্টা করুন। আর আপনার খাবারের সময়ের ব্যবধান এত দীর্ঘ দেবেন না যাতে ক্ষুধা বেশি লাগে। এটি আপনাকে খাবারের সময় বেশি খেতে অনুপ্রাণিত করবে। নিয়মিতভাবে বিরতিতে খাবার খান এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খান।rs

News Desk

Recent Posts

কান পরিষ্কার করতে গিয়ে এই ভুল করছেন না তো?

কান শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এক অঙ্গ। তবুও বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেই অঙ্গটি নিয়ে উদাসীনতা দেখা যায়। গোসল করতে গিয়ে কানে পানি ঢুকে…

13 hours ago

মায়ের শরীরে যে সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত তাকে ডাক্তার দেখাবেন

বয়স বাড়তেই বাবা-মা সন্তানের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। আর সন্তানেরও উচিত এ সময় বাবা-মায়ের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হওয়া। বিশেষ করে…

16 hours ago

প্রতিদিন গোসলে সাবান ব্যবহার কী ভালো?

গোসলের সময় কমবেশি সবাই সাবান ব্যবহার করেন। যাতে ত্বকে জমে থাকা ময়লা বা জীবাণু ধুয়ে যায়। তবে প্রতিদিন ত্বকে সাবান…

20 hours ago

ফুসফুস ভালো রাখতে কী খাবেন?

মানব শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এক অঙ্গ হলো ফুসফুস। এর সাহায্যেই শরীরে পৌঁছায় অক্সিজেন। আর এই অঙ্গের সাহায্যেই অক্সিজেন মিশে যায় রক্তে।…

2 days ago

ত্বকে অতিরিক্ত আঁচিল হওয়া কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

অনেকের ত্বকেই অতিরিক্ত আঁচিল দেখা দেয়। নারী-পুরুষ উভয়েরই আঁচিল হওয়ার প্রবণতা থাকতে পারে। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আঁচিল হওয়ার…

2 days ago

ফ্যাটি লিভার ডিজিজ কী? এর লক্ষণই বা কী কী?

ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় বর্তমানে অনেকেই ভুগছেন। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা আবার দু’ভাবে বিভক্ত- অ্যালোহলিক ও নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। অ্যালকোহলিক ফ্যাটি…

3 days ago