নিয়মিত সকালে খালি পেটে পান করুন কিশমিশ ভেজানো জল, মিলবে বহু সুফল

আমরা সাধারণত খাবারে স্বাদ কিংবা সৌন্দর্যের জন্য কিশমিশ ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু, আমরা অনেকেই জানি না কিশমিশে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল। শুধু কিশমিশ না, কিশমিশ ভেজানো জল খেলেও তার রয়েছে নানা উপকারিতা। আসুন কিশমিশ বা কিশমিশ ভেজানো জল পান করলে কি কি উপকার হয় তা সম্পর্কে জেনে নিঃ-

কিশমিশ ভেজানোর জল পান করলে লিভারে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া শুরু হয়, যার ফলে শরীরের অভ্যন্তরে দ্রুত রক্ত পরিশোধন হতে থাকে।

কিশমিশের জল নিয়মিত পান করলে পেট একদম পরিষ্কার থাকে। যারা প্রায়শই পেটের গন্ডগোলে ভোগেন তাদের জন্য এই জল বিশেষ উপকারী। সেই সঙ্গে ভরপুর শক্তি পাবেন। কিসমিসে থাকে পটাশিয়াম, যা হার্টকে ভালো রাখে এবং খারাপ কোলেস্টরল দূর করতে সাহায্য করে।

লিভার ও কিডনির সমস্যা হলে ক্ষতিকারক পদার্থ শরীরে জমতে শুরু করে এবং আমাদের অসুস্থ করে তোলে। তাই লিভার ও কিডনিকে সব সময় চাঙ্গা রাখতে কিশমিশ ভেজানো জল পান করুন। এতে দারুণ হজমশক্তি বাড়ে।

নিয়মিত কিশমিশ খেলে বৃদ্ধ বয়সে দৃষ্টিহীন হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। পাশাপাশি কিশমিশে থাকা পলিফেনল উপাদান, যা ক্ষতিকারক ফ্রি-রেডিকেলস ধ্বংস করে চোখকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।

কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে লৌহ আছে যা রক্তশূন্যতায় ভোগা রুগীদের জন্য খুবই উপকারি। এছাড়া রক্ত ও লোহিত কণিকা তৈরির জন্য দরকার ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স ও কপার, যা কিশমিশে থাকে। এককাপ কিশমিশ ৬ মিলিগ্রাম লৌহের যোগান দিতে পারে, যা প্রতিদিনের লৌহের চাহিদার ১৭ শতাংশ পূরণ করতে পারে।

চকলেট, ক্যান্ডির মতো দাঁতে লেগে থাকে না কিশমিশ, ফলে ক্যাভিটি তৈরির আশঙ্কা থাকে না। বরং কিশমিশের পাইথোনিউট্রিয়েন্ট, অলিয়ানলিক এসিড নামে পরিচিতি যা দাঁতের ক্যাভিটি ধ্বংস করে মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

আজকাল অস্টিওপোরোসিস রোগে অনেকেই ভুগে থাকেন। হাড়ের এই রোগ প্রতিরোধ করতে বোরন নামের খনিজ পদার্থ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর কিশমিশ বোরনের অন্যতম উত্‍স। বোরনে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম- যা হাড় গঠনের পাশাপাশি শরীরে টেসটোসটেরন এবং ইস্ট্রোজেনের মাত্রা সঠিক রাখতে সাহায্য করে।

অতিরিক্ত এসিডিটি বা রক্ত দূষিত হওয়াকে বলে অ্যাসিডোসিস, যা থেকে আরথ্রাইটিস, চামড়ার রোগ, হৃদরোগ এবং ক্যান্সার হতে পারে। অ্যান্টাসিড হিসেবে পরিচিত দুটি উপাদান ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম শরীরের ক্ষরীয়ভাব স্বাভাবিক করে অ্যাসিডোসিসের হাত থেকে বাঁচায়। আর এই উপাদানগুলো কিশমিশে রয়েছে।

কিশমিশে কোলেস্টেরলের পরিমাণ শূন্য। শুধু তাই নয়, এতে আছে অ্যান্টি কোলেস্টেরল উপাদান, যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। এছাড়া কিশমিশে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার যকৃত থেকে খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে।

কিশমিশের জল তৈরি করার পদ্ধতিঃ- ২ কাপ জল (৪০০ এমএল) + ১৫০ গ্রাম কিশমিশ।

কিশমিশগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর একটি পাত্রে দুকাপ জল দিয়ে রাতভর কিশমিশ ভিজিয়ে রাখুন। সকালে কিশমিশ ছেকে নিয়ে সেই জল হালকা গরম করে খালি পেটে খেয়ে নিন।rs

News Desk

Recent Posts

অতিরিক্ত ঘাম কেন হয়, কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে ঘাম হওয়া খুবই স্বাভাবিক। ঘামের সঙ্গে শরীরের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। আর ঘাম হলে শরীরের অতিরিক্ত পানি ও…

8 hours ago

গরমে কেন বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি?

শুধু শীত নয়, গরমেও বাড়তে পারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। বিশেষ করে আপনার যদি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা উচ্চ কোলেস্টেরল থাকে তাহলে…

10 hours ago

টয়লেটে মোবাইল ব্যবহার যে কারণে মারাত্মক

বর্তমানে মোবাইল ফোনে ব্যস্ত ছোট-বড় সবাই। শুধু মোবাইল বললে ভুল হবে, স্মার্টফোনের ব্যবহার এখন বিশ্বব্যাপী। সারাক্ষণই এতে ব্যস্ত হয়ে সময়…

10 hours ago

হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে যে সবজি খাবেন

গরমে অতীষ্ট এখন জনজীবন। এ সময় শরীরের উপর বিরাট ধকল যাচ্ছে কমবেশি সবারই। তীব্র গরমে রোদে বাইরের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ…

12 hours ago

শরীরের যে স্থান পরিষ্কার না করলে বাড়বে রোগব্যাধি

শরীর পরিষ্কার রাখতে গোসল করা জরুরি। তবে জানলে অবাক হবেন, গোসল করলেও শরীরের কয়েকটি স্থান পরিষ্কার হয় না সহজে। আর…

13 hours ago

ওষুধ ছাড়াই কিডনির পাথর গলানোর ঘরোয়া উপায়

কিডনিতে পাথর জমার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। যদিও এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্যগত সমস্যা, তবুও এটি কারও কারও ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে।…

14 hours ago