সন্তান স্কুলে যেতে চায় না? মায়েরা কি করবেন দেখেনিন

অনেক ছেলেমেয়েই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে কান্নাকাটি, চিৎকার করে স্কুলে যেতে আপত্তি জানায়। বকে, আদর করে, বুঝিয়ে বা জোর করে যদিওবা স্কুলে পাঠানো হয়, তারপর স্কুল থেকে আসতে থাকে নানা ধরনের অভিযোগ। এক্ষেত্রে বকাঝকা করা বা জোর করে স্কুলে পাঠানো কিন্তু সমাধানের পথ নয়। বরং বুঝতে হবে সন্তান কেনো স্কুলে যেতে চাইছে না।

পরিবারের চেনা গণ্ডি ছেড়ে স্কুলের নতুন পরিবেশে যাওয়ার সময় বাচ্চারা ভয় পেতেই পারে। তাই বাচ্চার সামনে স্কুল সম্পর্কে সবসময় একটা ইতিবাচক দিক তুলে ধরুন। সন্তানকে বোঝাতে চেষ্টা করুন স্কুল মানে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যাওয়ার জায়গা, যেখানে সে অনেক কিছু শিখতে পারবে।

সন্তানের বয়স আড়াই থেকে তিন হলেই বাড়ির কাছাকাছি কোনো প্লে-স্কুলে ভর্তি করে দিন। ছোটবেলা থেকে স্কুলের অভ্যাস তৈরি হয়ে গেলে বড় স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর মানিয়ে নিতে অনেক সুবিধা হবে।

প্লে-স্কুল থেকে বড় স্কুলে যাওয়া বাচ্চার কাছে কিন্তু একটা বিরাট ব্যাপার। বড় স্কুলের পরিবেশ প্লে-স্কুলের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। অনুশাসন বেশি। হঠাৎ করে নতুন স্কুলে গিয়ে বাচ্চারা অনেক সময় মানিয়ে নিতে পারে না। তাই বড় স্কুলে ভর্তি করার আগে সন্তানকে নতুন স্কুল সম্পর্কে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে দিন। ওকে বলুন, এখানে তোমার নতুন বন্ধু হবে বা এবার তোমার নতুন স্কুল ড্রেস হবে। অর্থাৎ এমন কথা বলুন যাতে আপনার সন্তান নতুন স্কুল সম্পর্কে উৎসাহ পায়।

অনেক ক্ষেত্রে স্কুলের ছোটখাটো ব্যাপারে বাচ্চারা মুষড়ে পড়ে। যেমন হতে পারে, স্কুলের মিস কোনো কারণে বকলে, বন্ধুরা কেউ জোর করে টিফিন খেয়ে নিলে কিংবা প্রিয় বন্ধু আড়ি করে দিলে ওরা ভেঙে পড়ে। এগুলো শুনতে খুব ছোট মনে হলেও বাচ্চাদের কাছে এটা অনেক বড় ব্যাপার। এছাড়া অনেক সময়ই ক্লাসের মধ্যে কোনো কোনো বাচ্চা অন্য বাচ্চাদের মারধোর করে, জিনিসপত্র কেড়ে নেয়। ছোটদের মধ্যে অন্য কোনো বাচ্চার শারীরিক গঠন বা কথাবার্তার ধরন নিয়ে খ্যাপানো বা নাজেহাল করার প্রবণতা দেখা দেয়- এসব বিষয়ে ছোটদের মান-অপমানবোধ বেশ প্রবল হয়। তাই এ ধরনের বিষয়গুলো উড়িয়ে না দিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে দেখুন। প্রয়োজনে স্কুলের টিচারদের সঙ্গে কথা বলুন।

অনেক সময় স্কুলে সমস্যা হলেও বাচ্চারা বাড়িতে সব কথা খোলাখুলি বলে না। তাই বাচ্চার আচরণ এবং হাবভাব দেখে আপনাকে বুঝে নিতে হবে স্কুলে সন্তানের কোনো অসুবিধা হয়েছে কিনা। যতই ব্যস্ত থাকুন না কেনো, প্রতিদিন সন্তানের সঙ্গে কিছুটা সময় গল্প করবেন। ওর কাছে স্কুলের কথা জানতে চাইবেন। কথায় কথায় নিজের ছোটবেলার স্কুলের গল্প করুন। এতে বাচ্চা আপনার সঙ্গে মন খুলে গল্প করতে পারবে।

বাড়িতে বাচ্চার সঙ্গে স্কুল স্কুল খেলতে পারেন। একবার আপনি শিক্ষক সাজুন একবার সন্তানকে শিক্ষক সাজতে বলুন। শিক্ষক আসলে উঠে দাঁড়ানো বা টয়লেটে যেতে হলে অনুমতি চাওয়া, এই ধরনের ছোটখাটো বিষয় খেলার মাধ্যমে শিখিয়ে দিন। তাছাড়া এতে সন্তানের স্কুলের পরিবেশটা ঠিক কী রকম তার খানিকটা আন্দাজও পাবেন।

News Desk

Recent Posts

টমেটো বেশি খেলে যেসব মারাত্মক রোগ হতে পারে

সালাদ হিসেবেই সবচেয়ে বেশি টমেটো খাওয়া হয়। পাকা লাল টমেটো দেখতেও যেমন সুন্দর; খেতেও মজা। কাঁচা কিংবা পাকা দু’ভাবেই টমেটো…

5 mins ago

ফ্যাটি লিভারের রোগী যে ১০ নিয়ম অবশ্যই মানবেন

লিভার শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এক অঙ্গ। শরীর সুস্থ রাখতে এই বিশেষ অঙ্গ নানা ধরনের কাজ করে থাকে। এ কারণে লিভারের স্বাস্থ্য…

29 mins ago

হাঁটার ধরনে যে পরিবর্তন ফ্যাটি লিভারের ইঙ্গিত দেয়

লিভার শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে, চর্বি, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট বিপাক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা…

44 mins ago

রাতে বারবার ঘুম ভাঙে যে ৫ কারণে

রাতে অনেকেরই বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়ার সমস্যা থাকে। এতে ঘুম পরিপূর্ণ হয় না। ফলে পরের দিন মাথাব্যথা ও ক্লান্তি ঘিরে…

59 mins ago

এ সময় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সারাতে কী করবেন?

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন। ভাজা-পোড়া খাবার বেশি খাওয়া হলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়তে থাকে। আর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় বুক জ্বালা-পোড়া করলেই…

3 hours ago

পায়ের পাতায় ব্যথা, হতে পারে যে রোগের লক্ষণ

একটু হাঁটলেই পায়ের পাতা ব্যথা করে কিংবা না হাঁটলেও পাতার ঠিক মধ্যখানে ব্যথা হওয়ার লক্ষণ কিন্তু নানা সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।…

15 hours ago