শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমাবেন যেভাবে, জেনেনিন এর সহজ কিছু টিপস

দেশ উন্নত হচ্ছে। সেই সঙ্গে উদ্ভাবন হচ্ছে নিত্যনতুন প্রযুক্তি। যা আমাদের জীবন চলার পথকে সহজ ও সুন্দর করে তুলছে। তবে এসব প্রযুক্তির সুবিধা যেমন আছে তেমনই আছে কিছু অসুবিধাও। এর মধ্যে মোবাইল হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় একটি নিত্য ব্যবহৃত একটি জিনিস।
সুবিধা থাকলেও ডিজিটালাইজেশনের এই যুগে শিশুদের মোবাইল আসক্তি দিন দিন বাড়ছে। অভিভাবকদের জন্যও বিষয়টি বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশুদের মোবাইল আসক্তি বেড়ে যাওয়ার কারণে পারিবারিক বন্ধন ধারণায় পরিবর্তন আসছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ানলাইট ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা ও সভানেত্রী শারমিন আহমেদ। তার মতে, মোবাইল নিয়ে শিশুদের আসক্তির (স্ক্রিন এডিকশন) ফলাফল শুভ নয়।

শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমাতে যে কাজগুলো করতে পারেন সেগুলো হলো-

>> শিশুর সঙ্গে গল্প করুন। একাকিত্বে ভোগা থেকে শিশুরা স্ক্রিন আসক্ত হতে পারে। সময়ে পেলে তার সঙ্গে গল্প করতে হবে। শিশুরা ছোটবেলা থেকে গল্প শুনলে এমনকি মাতৃগর্ভে থাকাকালে গল্প শুনলেও তার মানসিক বিকাশ বৃদ্ধি পায়। তাই শিশুকে বেশি সময় দিতে হবে, তার সঙ্গে প্রচুর গল্প করতে হবে।

>> আপনার ঘরের পরিবেশটা কেমন? চারদিকে কি ডিভাইস? ঘরে ঢুকতেই একটা বড় টিভি? আপনিও কি এক মিনিট পর পর ডিভাইস দেখেন? তাহলে এগুলো পরিবর্তন করতে হবে। কারণ শিশুরা প্রথম শিক্ষা পায় পরিবার থেকে। তাই বাবা-মাকে এক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। যতটা সম্ভব শিশুদের সামনে মোবাইল বা ডিভাইস পরিহার করুন।

>> ঘরের চারদিকে শিশুদের উপযোগী রঙ, তুলি, ছবি আঁকার জিনিস, কালার পেনসিল, বিভিন্ন মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট (বাঁশি, সেতার, ভায়োলিন) রাখতে পারেন। এতে করে আপনার শিশু সেগুলোর প্রতি মনোযোগী হবে। এতে করে সে একা থাকলেও ছবি আঁকার চেষ্টা করবে, মিউজিক বাজানোর চেষ্টা করবে।

>> বাসায় প্রচুর বই রাখুন। অবসর সময়ে আপনি বই নিয়ে বসে গেলে আপনার সন্তানও আপনার পাশে বসে যাবে। অথবা খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস করুন। আপনাকে দেখেই তার মধ্যে এই অভ্যাসগুলো গড়ে উঠবে।

>> প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসুন। শিশুদের প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়া খুব জরুরি। শিশুকে নিয়ে বাগানে বা প্রকৃতির মধ্যে খেলাধুলা করুন। লুকোচুরি খেলুন, ছোটাছুটি করুন, সময় কাটান। তাতে শিশুরা সামাজিক হয়ে উঠতে পারবে। নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারবে। যারা শহরে থাকেন তারা সপ্তাহে একদিন বা মাসে দুইদিন শিশুকে নিয়ে প্রকৃতির কাছে যেতে পারেন। তাতে করে আপনার সন্তান মানসিক বিকাশের উন্নতি হবে।

>> শিশুদের ঘরের কাজে ব্যস্ত রাখতে পারেন। বিশেষ করে মায়েরা এ কাজটি করতে পারেন। আপনার সন্তানকে বলতে পারেন, আজকে তুমি আমাকে এ কাজে সহযোগিতা করো। এতে আপনার সন্তান ঘরের কাজের প্রতি আগ্রহী হবে এবং মোবাইল আসক্তি থেকে সরে আসবে।

News Desk

Recent Posts

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

6 hours ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

6 hours ago

গরমে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

হঠাৎ করেই কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎই বিকল হতে পারে কিডনি। মূলত তাপমাত্রা ও…

6 hours ago

খাবার কেনার আগে প্যাকেটের কোন লেখা অবশ্যই পড়বেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই এখন রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। এ কারণে বেশিরভাগ খাবারই এখন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। প্রায়…

1 day ago

বিশ্বব্যাপী যে কারণে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব

গরমে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। একই সঙ্গে বাড়ে মৃতের সংখ্যাও। আজ ১৬ মে জাতীয় ডেঙ্গু দিবস। ডেঙ্গু…

1 day ago

ধূমপানে আসক্তি কমাতে পান করুন ৩ পানীয়

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলেও তা মানতে নারাজ ধূমপায়ীরা। আবা ধূমপানের অভ্যাসও ছাড়া বেশ মুশকিল। ধূমপান ছাড়তে কতজনই না কত…

1 day ago